বর্তমান সময়টা সোশ্যাল মিডিয়ার। এখন সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন না, এমন মানুোষ একপ্রকার পাওয়াই যায় না। সোশ্যাল মিডিয়ায় মাঝেমঝ্যেই বিভিন্ন ধরনের ছবি, ভিডিয়ো বা রিল পোস্ট করা হয়। যেগুলি অনেকে শেয়ার করেন। প্রচুর ইউজার সেগুলিতে কমেন্টও করেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত ভিডিয়ো বা ছবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। যেমন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ভিডিয়ো ঘিরে সম্প্রতি শুরু হয় আলোচনা। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিয়োতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে রাস্তার মাঝে দাঁড়িয়ে বলতে দেখা যাচ্ছে "সব বন্ধ করে দেব…বাংলাকে গুজরাত হতে দেব না…"। আবার মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে ভিড়ের মধ্যে থেকে 'জয় শ্রীরাম' স্লোগান ভেসে আসতেও শোনা যায়। সেই ভিডিয়োই ফ্যাক্ট চেক করে সংবাদমাধ্যম নিউজ চেকার।শেয়ার হওয়া ভিডিয়োতে কী আছে?ফেসবুকে মানস সরকার নামে এক ইউজার ভিডিয়োটি শেয়ার করেন। ভিডিয়ো লেখা "দিদির মস্তানি দেখুন…বাংলার মানুষ এবার জবাব দেবে EVM এ"।
ভিডিয়ো থেকে নেওয়া স্ক্রিনশট
কী ভাবে জানা যায় আসল সত্য?ভাইরাল ওই ভিডিয়োতে এবিপি আনন্দের লোগো এবং লোকেটারের জায়গায় 'ভাটপাড়া' লেখা দেখতে পাওয়া যায়। সেই সূত্র ধরে ইউটিউবে 'ভাটপাড়ায় মমতাকে জয় শ্রীরাম' কি ওয়ার্ড লিখে সার্চ করে নিউজ চেকার। তাতে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ৩০ মে ওই একই ভিডিয়ো এবিপি আনন্দের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলেও আপলোড করা হয়েছিল। পাশাপাশি গুগলে ওই একই কি ওয়ার্ড লিখে সার্চ করে ২০১৯ সালের ৩০ মে-তে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরও নিউজ চেকারের নজরে আসে। সেই সমস্ত খবর থেকে জানা যায় যে, 'সত্যাগ্রহ' মঞ্চে যাওয়ার জন্য ভাটপাড়ার রিলায়্যান্স জুটমিলের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়। ঠিক সেই সময়ই রাস্তার ধার থেকে 'জয় শ্রীরাম স্লোগান ওঠে।
এরপরই মুখ্যমন্ত্রী গাড়ি থেকে নেমে ভিড়ের দিকে তেড়ে যান, একইসঙ্গে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, "আমাদের খাবে, আমাদের পরবে, আবার গন্ডগোল করবে! বেঁচে আছ আমাদের জন্য…চামড়া গুটিয়ে ছেড়ে দেব, ডাকাত ক্রিমিনাল সব তাড়িয়ে ছাড়ব।" এমনকী, অপরাধীদের খুঁজে বের করে পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দিতেও শোনা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। সুতরাং এর মাধ্যমে নিউজ চেয়ার এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, ভিডিয়োটি ২০১৯ সালের এবং এর সঙ্গে আসন্ন লোকসভা ভোটের কোনও যোগ নেই।