Berhampore Incident: মাকে গলা টিপে খুন করেছে বাবা, জানাল একরত্তি
এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়, জিয়াগঞ্জ: শিশুকন্যার সামনেই খুন হন তার মা। তাই ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল তিন বছরের মেয়েটিকে। তদন্ত করতে এসে তার বয়ানের ভিত্তিতে তার বাবাকে আটক করেছে পুলিশ। শিশুকন্যাটি জানায়, মাকে মারধরের পরে গলা টিপে ধরেছিল বাবা। এর পরে মুখে কিছু ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জ থানার আমিনাবাজার এলাকায়। নিহতের নাম রুকসানা খাতুন (১৯)।পুলিশ অভিযুক্ত স্বামী মিসকাতুল ইসলামকে আটক করেছে। দুপুরবেলা ফোন গিয়েছিল মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে। বাপের বাড়িকে বলা হয়েছিল, অশান্তির পরে নাকি বিষ খেয়েছে রুকসানা। তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ছুটে যান আপনজনেরা। কিন্তু সন্দেহ চাগাড় দেয় রুকসানার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের আচরণে। তাঁর তিন বছরের মেয়েটাকে কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হচ্ছিল না। জিজ্ঞেস করলেও এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সন্দেহ আরও গাঢ় হয় যখন বাপের বাড়ির লোকেরা বুঝতে পারেন, রুকসানার দেহ কবর দেওয়ার প্ল্যান করছে শ্বশুরবাড়ি। এর পরেই জিয়াগঞ্জ থানায় খবর দেন তাঁরা।
জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে আজিমগঞ্জ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। এর পরে তাঁর দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়। রুকসানার মেয়েকে ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করতেই সব জানিয়ে দেয় সে। জিয়াগঞ্জ শ্রীপৎ সিং কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন রুকসানা। চার বছর আগে তাঁর সঙ্গে জিয়াগঞ্জ মুকুন্দবাগ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমিনাবাজার এলাকার বাসিন্দা মিসকাতুল ইসলামের বিয়ে হয়। তিন বছর আগে মেয়ে হয় দম্পতির।
মিসকাতুল সৌদি আরবে কর্মরত। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে সাগরদিঘির দস্তরহাট গ্রামে বাপের বাড়িতেই থাকতেন রুকসানা। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ি গেলেই পণের দাবিতে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা হতো। মাসখানেক আগে ফিরে আসে মিসকাতুল। তার পরে অশান্তি বাড়ে। রবিবার দুপুরে রুকসানা কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে গল্প ফাঁদে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।
কিন্তু বাপের বাড়ির সন্দেহ হওয়ায় তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। রুকসানার মেয়েকে ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। পুলিশকে সব কথা জানায় একরত্তি। এর পরেই আটক করা হয় মিসকাতুলকে। রুকসানার আত্মীয় মুরসেলিম শেখ বলেন, 'বিয়ের পর থেকেই একটার পর একটা পণের দাবিতে রুকসানার শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়েটার উপর অত্যাচার করত। একমাস আগে ওর স্বামী সৌদি আরব থেকে ফিরে এলে সেই অত্যাচার আরও বেড়ে যায়। ওর স্বামী মিসকাতুল ইসলাম আর শ্বশুরবাড়ির লোকেরা খুন করে মৃতদেহ কবর দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল। আমরা চাই রুকসানার খুনিদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।'
রুকসানার দিদি শিল্পী খাতুন বলেন, 'আমার বোন সব অত্যাচার সহ্য করেও শ্বশুরবাড়ির লোকেদের সঙ্গে মানিয়ে নিয়ে থাকত। তারপরেও মেয়েটার এই পরিণতি হল। আমরা চাই ওর স্বামী মিসকাতুল ইসলাম এবং ওর শ্বশুরবাড়ির লোকেদের গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।'