আর কয়েকদিন বাদেই শুরু লোকসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ। বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের উৎসবে সামিল হবেন প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার। ইভিএম-এর বোতাম টিপে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন তাঁরা। ইভিএম-এই লুকিয়ে থাকবে সরকার গঠনের চাবিকাঠি। কিন্তু এই ইভিএম কতটা সুরক্ষিত? ইভিএম-এর নিরাপত্তার জন্য কী ব্যবস্থা নিচ্ছে কমিশন? তার উপর কতটা আস্থা রাখতে পারেন ভোটাররা? সলুকসন্ধান দিচ্ছেন তাপস প্রামাণিক।ইভিএমের সুরক্ষা
নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, এবার এম-৩ মডেলের বিশেষ সুবিধাসম্পন্ন ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আগে এম-২ মডেল ব্যবহার হতো। এম-৩ মডেলে এক ধরনের প্রোটেক্টিভ সার্কিট (আন-অথরাইজ়ড ডিটেকশন মডিউল) ব্যবহার করা হবে। তা ইভিএম-এর মেমরিকে সম্পূর্ণ রূপে সুরক্ষিত রাখবে।
যদি কেউ মেমরি হ্যাক করার চেষ্টা করে বা ইভিএম-এর মাইক্রো-কন্ট্রোলারের অ্যাকসেস নেওয়ার চেষ্টা করে, তা হলে মেশিন নিজে থেকেই ফ্যাক্টরি মোডে চলে যাবে। তখন আর কাজ করবে না। যে কারখানা থেকে ইভিএম তৈরি হয়েছে, একমাত্র তারাই পুনরুদ্ধার করতে পারবে।
বাড়তি সুবিধা
আগের ইভিএম-এর তুলনায় নতুন ইভিএম-এর মেমরি অনেক বেশি। এম-২ মডেলে মাত্র চারটি ব্যালট ইউনিট যুক্ত করা যেত। এম-৩ মডেলে একসঙ্গে মোট ২৪টি ব্যালট ইউনিট যুক্ত করা যেতে পারে। প্রতিটি ব্যালট ইউনিটে কমপক্ষে ১৬ জন প্রার্থীর নাম ও প্রতীক ব্যবহার করা যায়। সব মিলিয়ে এই ইভিএম-এ লোকসভা পিছু অন্তত ৩৮৪ জন প্রার্থীর নাম ঢোকানো সম্ভব।
কমিশনের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ‘ইভিএম-এর সঙ্গে কন্ট্রোল ইউনিট এবং ভিভিপ্যাটের ঠিকমতো কানেকশন না হলে খুবই সমস্যা হয়। এর জন্য অথেনটিকেশন লাগে। এম-৩ মডেলের ইভিএম-এ সে কাজটা আরও মসৃণ ভাবে হবে।’
ব্যাটারির চার্জের পূর্বাভাস
ইভিএমে বিদ্যুৎ সরবরাহ হয় ব্যাটারি থেকে। ব্যাটারির চার্জ ফুরিয়ে গেলে মেশিন বসে যায়। তাতে ভোটে প্রভাব পড়ে। আগের মডেলে চার্জ কতটা রয়েছে, তা ঠিকমতো বোঝা যেত না। কিন্তু এম-৩ মডেলের ইভিএমে কত পারসেন্ট ব্যাটারির চার্জ রয়েছে, সেটা ডিসপ্লেতে দেখা যাবে। সেইমতো আগেভাগেই চার্জ দেওয়া যাবে।
ইভিএম নিয়ে সতর্কতাভোটের দিন ইভিএম নিয়ে কোনও বিতর্ক তৈরি না হয় তার জন্য বিশেষ সতর্কতা নিচ্ছে কমিশন। ভোটকর্মীদের গাইডলাইনে সাফ জানানো হয়েছে, কোনও পোলিং পার্টি সংশ্লিষ্ট ডিসি (ডিস্ট্রিবিউশন সেন্টার) থেকে ইভিএম সংগ্রহ করার পরে কোনও ভাবেই তা খুলে পরীক্ষা করতে পারবে না। ভোটের আগের রাতে কেউ ইভিএম খোলার চেষ্টা করলে কড়া শাস্তির মুখে পড়বেন ভোটকর্মীরা।