চোখে জল নিয়ে বড়মার মন্দিরের বাইরে থেকেই প্রণাম, দিল্লি গেলেন মমতাবালা
এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়, ঠাকুরনগর: প্রচারে হোক বা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা, সংসদে যাওয়া হোক বা মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে দলের প্রতিনিধি হিসেবে ভিন রাজ্যে যাওয়া— প্রয়াত বড়মা বীণাপাণি দেবীর মন্দিরে প্রণাম করে তবেই বাড়ি থেকে বের হতেন মমতাবালা ঠাকুর। সেই নিয়মের ছেদ ঘটল মঙ্গলবার। মতুয়া সমাজের প্রথম মহিলা রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ নিতে দিল্লি যাওযার আগে বড়মার মন্দিরে ঢুকে প্রণামই করতে পারলেন না মমতাবালা।তালা লাগিয়ে শান্তনু ঠাকুর দখল নেওয়ায় বন্ধ মন্দিরের বাইরে থেকেই প্রণাম সেরে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিলেন তিনি। মন্দিরের বাইরে দাঁড়িয়ে এদিন কেঁদেই ফেলেন মমতাবালা। তৃণমূলের মতে মমতাবালার এই চোখের জলের পিছনে রয়েছে শান্তনু ঠাকুরের ঔদ্ধত্য। যে ভাবে শান্তনু দলবল নিয়ে ঠাকুরাবড়ির দখল নিয়েছেন তা ভোটারদের কাছে তুলে ধরাটাই এখন ঘাসফুল নেতৃত্বের কাছে বড় টাস্ক।
দল মনে করছে বড়মার মন্দিরের দখল নিতে শান্তনু ঠাকুর ও তাঁর দলবলের যে হামলা চালিয়েছে, তা ভোটের মুখে রাজনৈতিক ফায়দা দেবে তৃণমূলকে। এ দিন দিল্লি যাওয়ার আগে মতুয়া ভক্ত, পাগল, গোঁসাই দলপতিদের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল প্রভাবিত অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। মমতাকে আশ্বস্তও করেছেন মতুয়া ভক্তরা।
শনিবার থেকে শুরু হয়েছে বারুনির মেলা। আর রবিবারেই বড়মা-র মন্দিরের দখল নিতে ঠাকুরবাড়ির কোলাপসিবল গেট ভেঙে ঢুকেছিলেন শান্তনুরা। তারপর থেকে বহু মতুয়া ভক্ত, পাগল, গোঁসাই, দলপতিরা এসে দেখা করেছেন মমতাবালার সঙ্গে। তীব্র নিন্দা করেছেন।
মমতাবালা তাঁদের বলেন, ‘এ বার বিজেপিকে বনগাঁয় হারাতেই হবে। সেক্ষেত্রে মতুয়াদের আরও বেশি সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। বনগাঁয় বিজেপিকে হারালেই শান্তনু ঠাকুরের ঔদ্ধত্য মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া যাবে।’ জবাবে পবিত্র গোঁসাই, কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘ঠিক আছে মা। এ বারের ভোটে শান্তনুকে এর জবাব দিতেই হবে।’
বনগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘শান্তনু ঠাকুরের হামলার প্রভাব অবশ্যই পড়বে এ বারের ভোটে। সিএএ নিয়ে মতুয়ারা এমনিতেই সরে গিয়েছেন বিজেপির থেকে। তারপর ভোটের মুখে শান্তনুরা ঠাকুরবাড়ির দখল নিয়ে যে কাণ্ড ঘটালেন, তাতে ক্ষুব্ধ মতুয়া ভোটাররা নিশ্চিত ভাবেই ভোটবাক্সে তার জবাব দেবেন।’
শান্তনু ঠাকুর অবশ্য বলেন, ‘ভোটে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। বড়মা-র মন্দির মতুয়া ভক্তদের। মমতাবালা ঠাকুর এতদিন কেন দখল নিয়ে রেখেছেন বলে প্রশ্ন তুলেছিলেন মতুয়ারাই। ওঁর জন্য মতুয়ারা বড়মা-র মন্দির দর্শন করতে পারেন না। তাঁরাই বড়মা-র মন্দিরকে হেরিটেজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভক্তরাই তালা ভেঙেছেন।’