পিলার-নেটে ঘেরা হচ্ছে সোনাঝুরি, পর্যটকদের ক্ষেত্রেও একগুচ্ছ কড়াকড়ি
এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৪
সোনাঝুরির হাট, শান্তিনিকেতনের অন্যতম পর্যটন ক্ষেত্র। এবার সেই সোনাঝুরি ঘিরে দিতে চলেছে বনদফতর। সিদ্ধান্ত মোতাবেক ফিতে ফেলে শুরু হল মাপাজোকের কাজ। প্রায় ১২১ কিলোমিটার এলাকা ঘিরে ফেলা হবে বলে সূত্রের খবর। এছাড়াও ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের জন্য লাগু করা হবে বেশ কিছু বিধিনিষেধ। বনদফতরের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই কপালে চিন্তার ভাঁজ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের।
জঙ্গল বাঁচাতেই উদ্যোগশান্তিনিকেতনের অন্যতম আকর্ষণ সোনাঝুরির হাট। সারাবছরই এখানে পর্যটকদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মত। প্রায় ২০ বছর আগে শান্তিনিকেতনের বনদফতরের জায়গায় হাট চালু হয় নিছকি কয়েকজন স্থানীয় গ্রামবাসী ও হস্তশিল্পীদের উদ্যোগে। বর্তমানে শুক্র থেকে রবি ছাড়াও প্রতিদিনই হাটে থাকে কয়েক হাজার মানুষের আনাগোনা। বিশেষ করে শনি-রবিবার ভিড় সামলাতে অতিরিক্ত বাহিনীও দিতে হয় পুলিশকে। সবই ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু এরই মাঝে উঠেছে জঙ্গলের মাটি চুরির অভিযোগ। যার ফলে একের পর এক গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বনদফতরের জায়গায় অবৈধ নির্মাণ, ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠা হোটেল ও রিসর্টে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হারিয়ে ক্রমশ কৃত্রিমতা গ্রাস করছে সোনাঝুরিকে, অন্তত এমনই অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন পরিবেশবিদরা। তাই এবার জঙ্গল বাঁচাতেই পিলার দিয়ে চিহ্নিতকরণের পরিকল্পনা গ্রহণ করল বনদফতর। সোনাঝুরির সীমানা ঘিরে ফেলা হবে পিলার ও নেট দিয়ে।পিলার দিয়ে জঙ্গল ঘেরার পরিকল্পনামঙ্গলবার ফিতেসোনাঝুড়ির হাট হতে চলেছে 'পরিবেশ বান্ধব'। যার জন্য সোনাঝুরির সীমানা ঘিরে ফেলা হবে পিলার ও নেট দিয়ে। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে চিহ্নিতকরণের কাজ । পর্যটকরা সেখানে গেলে মানতে হবে যে নিয়মগুলি । এই সময় ডিজিটাল এ মুখ খুললেন বন দপ্তরের আধিকারিকফেলে শুরু হল সোনাঝুরির জায়গা মাপজোক। মানচিত্র দেখেই পিলার দিয়ে করা হয় জায়গার চিহ্নিতকরণ। এক কথায় সোনাঝুরি হাটকে পিলার দিয়ে ঘিরে ফেলতে চলেছে বনদফতর। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পরেছে সোনাঝুরি হাটের ব্যবসায়ীদের। সোনাঝুরির হাট কমিটির সম্পাদক তন্ময় মিত্র বলেন, 'দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় হস্তশিল্পী, কুটিরশিল্পী ও আদিবাসীশিল্পীরা বিকিকিনি উদ্দেশেই জঙ্গলের মধ্যে হাটে বসেন। হাটকে কেন্দ্র করে শান্তিনিকেতন সংলগ্ন স্থানীয় মহিলারা আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। বনদফতর জঙ্গলের সীমানা দিতেই পারে। রুটি রুজির প্রশ্নে হাটে বসা প্রায় ১৭০০ শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের পেটে লাথি না পড়লেই হল।'
'অবৈধ কাজ বরদাস্ত নয়'এইসময় ডিজিটালকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বনদফতরের এক আধিকারিক জানান ,'এতদিন সোনাঝুরিতে অবৈধভাবে অনেক কিছু হয়েছে। তা আর মেনে নেওয়া হবে না। তবে স্থানীয় হস্তশিল্পী যাঁরা এতদিন অস্থায়ী দোকান করছিলেন সোনাঝুরি হাটে তাঁদের ব্যবসা করতে কোনও বাধা দেওয়া হবে না। কিন্তু কোনভাবেই স্থায়ী নির্মাণ, গাছ কাটা, ও মাটি কাটাকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। যদি কেউ বা কারা এমন কিছু করেও থাকেন, তাহলেও তাঁদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়াও পর্যটকরা যত্রতত্র নোংরা ফেলতে পারবেন না। জীববৈচিত্র্য বা জঙ্গলের কোনও ক্ষতি হয় এমন কিছু করলে নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা। পাশাপাশি হাটের জন্যও নির্দিষ্ট সময় বেধে দেওয়া হতে পারে। আমাদের ওয়ার্কিং প্ল্যান বলে যে শাখা রয়েছে তারা ইতিমধ্যেই জমি চিহ্নিত করেছে এবং তারাই পিলার দিয়ে ঘিরে ফেলবে।'