Gour Banga University : বোসের সিদ্ধান্ত খারিজ করল গৌড়বঙ্গের ইসি, স্বাগত ব্রাত্যর
এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেরই নিযুক্ত অথরাইজ়ড উপাচার্য রজতকিশোর দে’কে অপসারণ ও তাঁর চেম্বার সিল করার নির্দেশ দিয়ে ‘প্রত্যাখ্যাত’ হলেন আচার্য-রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস! গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি (ইসি) মঙ্গলবার সর্বসম্মত ভাবে পড়ুয়াদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে আচার্যর দু’টি সিদ্ধান্তই রদ করে দিয়েছে।এমনকী কর্মসমিতির তরফে রেজিস্ট্রার বিশ্বজিৎ দাসকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীর কাছে এ ব্যাপারে আইনি মতামত চাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দপ্তরের চিঠি অনুযায়ী রজতকিশোরকেই উপাচার্যের দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার জন্য কর্মসমিতি অনুরোধ করেছে।
আচার্য-রাজ্যপাল গত সপ্তাহে উপাচার্যকে একতরফাভাবে অপসারণ ও তাঁর চেম্বার সিল করার র্দেশ দিয়েছিলেন। তার বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার ক্যাম্পাস সচল রাখার জন্য যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, তাকে সমর্থন জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়া এবং গবেষকরা রবিবার ছুটির দিনেও আলোচনায় বসে জরুরি ভিত্তিতে ইসি বৈঠকের পক্ষে সিলমোহর দিয়েছিলেন।
রাজ্যজুড়ে ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ মাস ধরে চলা রাজ্য-রাজ্যপাল টানাপড়েনের মধ্যে এই প্রথম কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারক কমিটি আচার্য-রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে নস্যাৎ করল। তার প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এক্স হ্যান্ডেলে এদিন লেখেন, ‘আচার্যের প্রতারণামূলক সিদ্ধান্তকে খারিজ করে গৌড়বঙ্গর কর্মসমিতি মুখ্যমন্ত্রী ও উচ্চশিক্ষা দপ্তরের প্রতি আস্থা ও ভরসা রেখেছে বলে তাদের সর্বাত্মক স্বাগত জানাই।’
তাঁর সংযোজন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে আচার্য যাঁকে অন্যায়ভাবে অপসারণ করেছেন, সেই অধ্যাপক রজতকিশোর দে’কে কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে অভিনন্দন জানাই।’ যদিও উচ্চশিক্ষা মহলের একাংশের মতে, যে কোনও রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী বা স্থায়ী উপাচার্যের নিয়োগ কর্তা খোদ আচার্যই। গৌড়বঙ্গের ইসি’র এদিনের সিদ্ধান্ত কার্যত রাজভবনকেই সরাসরি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলল।
গৌড়বঙ্গের কর্মসমিতি এদিন জানিয়েছে, রাজ্যপাল নিজেরই অনুমোদিত উপাচার্য রজতকিশোর দে-কে অপসারণ ও তাঁকে প্রদত্ত ক্ষমতাগুলি প্রত্যাহারের আকস্মিক সিদ্ধান্তের পর বিশ্ববিদ্যালয় গুরুতর সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে, বিশেষ করে শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পক্ষের স্বার্থের দিক থেকে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে ও আসন্ন অচলাবস্থা দূর করতে রেজিস্ট্রার যেন কর্মসমিতির জরুরি বৈঠকের সিদ্ধান্তের কথা অবিলম্বে উচ্চশিক্ষা দপ্তর ও রাজ্য সরকারকে অবহিত করেন।
কর্মসমিতির তরফে বলা হয়েছে, স্নাতকোত্তর ও স্নাতক স্তরের বিভিন্ন কোর্সের টার্মিনাল এবং অন্যান্য সেমেস্টার পরীক্ষা আসন্ন, ন্যাক পরিদর্শনেরও প্রস্তুতি চলছে, পিএইচডি’তে ভর্তি পর্বও পাইপলাইনে রয়েছে, সমাবর্তনের প্রস্তুতি চলছে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ সময়-নির্দিষ্ট গবেষণা প্রকল্পও চলছে এই মুহূর্তে। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থেই কর্মসমিতি নির্ধারিত সময়ে সমস্ত কাজ, অ্যাসাইনমেন্ট এবং মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
এমনকী ইসি এদিন স্পষ্ট সিদ্ধান্ত নিয়েছে ও রেকর্ডে রেখেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনও কর্তৃপক্ষের উপর উচ্চতর আধিকারিক কর্তৃক আরোপিত যে কোনও ধরনের প্রশাসনিক, আইনি এবং অন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা কোনও একজনের উপর নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতি ও সমগ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরই বর্তাবে।