সারেন্ডার ও উদ্ধার হয়নি বহু আগ্নেয়াস্ত্র, চিন্তা মণিপুর প্রশাসনের
এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়, নয়াদিল্লি: কয়েক মাস আগেও দাউদাউ করে জ্বলছিল উত্তর পূর্ব ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য মণিপুর৷ প্রাণহানি, মহিলাদের উপরে বর্বরোচিত অত্যাচার, নিরন্তর সংঘর্ষের আঁচ পৌঁছে গিয়েছিল রাজধানীতে সংসদের অলিন্দেও৷ সেই মণিপুরে আপাতত শান্তি ফিরেছে, তবে উত্তেজনার রেশ পুরোপুরি মিলিয়ে যায়নি৷এই আবহেই ১৯ এপ্রিল মণিপুরে আয়োজিত হবে লোকসভা নির্বাচনের প্রথম পর্ব৷ তার আগে মণিপুর প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের দু’টি বিষয় চিন্তায় রাখছে৷ প্রথমত, ভোটের আগে মণিপুরের সব লাইসেন্সড আগ্নেয়াস্ত্র যাতে সারেন্ডার করা হয়, তার জন্য সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেও কোনও লাভ হয়নি সে রাজ্যের প্রশাসনের৷
সূত্রের দাবি, রাজ্যের ২৪ হাজারের বেশি লাইসেন্সপ্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে মাত্র ১২,০০০ সারেন্ডার করা হয়েছে৷ বাকিগুলির এখনও কোনও খোঁজ নেই৷ কোথায় গেল এই ১২,০০০ লাইসেন্স প্রাপ্ত আগ্নেয়াস্ত্র সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য জুড়ে তল্লাশি শুরু হয়েছে বলে মণিপুর প্রশাসন সূত্রে দাবি জানানো হয়েছে৷
দ্বিতীয়ত, গত বেশ কয়েক মাস ধরে মণিপুরে যে অশান্তি চলেছে, সেই সময়ে প্রায় আট হাজারের মতো আগ্নেয়াস্ত্র লুট হয়েছিল। সেগুলিও এখনও অধিকাংশ উদ্ধার করতে পারেনি প্রশাসন। কিছুদিন আগে চিফ অফ আর্মি স্টাফ জেনারেল মনোজ পাণ্ডে একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ৬০০০ এর মতো খোয়া যাওয়া অস্ত্রের মধ্যে মাত্র ১৮০০ উদ্ধার হয়েছে।
সেটা এখনও চিন্তার মণিপুর প্রশাসনের কাছে। পুলিশের হেফাজত থেকে খোয়া যাওয়া অস্ত্রের মধ্যে একে সিরিজের স্বয়ংক্রিয় রাইফেল, অত্যাধুনিক পিস্তল, বিস্ফোরকও রয়েছে৷ ভোটের মুখে এই সব অত্যাধুনিক আগ্নোয়াস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের প্রাণের ঝুঁকি থেকেই যায়, এমনই দাবি জানানো হয়েছে মণিপুর প্রশাসন সূত্রে৷ রাজ্য জুড়ে চিরুনি তল্লাশি চালিয়েও এখনও তেমন কোনও ফল পায়নি প্রশাসন৷
মণিপুরের দুটি লোকসভা আসনের ভোটগ্রহণ পর্ব আয়োজিত হবে ১৯ এবং ২৬ এপ্রিল৷ এই ভোটগ্রহণ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ রাখার উদ্দেশ্যে জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে ২০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ জারি করা হয়েছে আগেই৷ তারপরেও নিশ্চিন্ত হতে পারছে না রাজ্য প্রশাসন৷ গত বছরের জাতিদাঙ্গায় ২০০ জনের উপরে প্রাণহানি হয়েছে৷ এর রেশ যে ভোটের দিন পড়বে না, তা নিশ্চিত ভাবে বলা যায় না৷
এমনিতে মণিপুরের ভোট প্রচারে এখনও পর্যন্ত দেখা যায়নি কোনও হেভিওয়েট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে৷ সব দলের প্রভাবশালী নেতাই মণিপুরকে এড়িয়ে যাওয়া শ্রেয় বলে মনে করছে৷ এই আবহে মণিপুর কীভাবে ভোট উৎসবে অংশ নেয়, সেদিকে তাকিয়ে গোটা বিশ্বও৷