Amit Shah : বেজিং আমাদের কিছুই দখল করতে পারিনি, দাবি শাহদের
এই সময় | ১০ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: নরেন্দ্র মোদী সরকারের আমলে চিন ভারতের এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে পারবে না, মঙ্গলবার অসমের লখিমপুরে এক জনসভায় জোর গলায় বললেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। চিনকে কড়া ভাষায় জবাব দিলেন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং-ও। তিনি এ দিন অরুণাচল প্রদেশে একটি জনসভায় বলেন, ‘যদি কাল চিনের কিছু জায়গার নাম আমরা বদলে দিই.. তা হলে কি তা ভারতের হয়ে যাবে?’এ ভাবেই প্রথম দফা ভোটের আগে উত্তর-পূর্বের দু’টি রাজ্যে প্রচারে গিয়ে প্রতিবেশী চিনকে তোপ দাগলেন মোদী সরকারের দুই হেভিওয়েট মন্ত্রী। শাহ অবশ্য চেনা ছকেই ফের টেনে এনেছে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুকে। তিনি দাবি করেন, ‘চিনা আগ্রাসনের সময়ে নেহরু কী ভাবে অসমকে ‘বাই-বাই’ বলেছিলেন, তা অসমের মানুষ কখনও ভুলবেন না। মোদী সরকারের আমলে চিন আমাদের এক ইঞ্চি জমিও দখল করতে পারেনি। অসম ও অরুণাচল প্রদেশ ১৯৬২ সালের কথা কখনও ভুলতে পারবে না।’
শাহের অভিযোগ, ‘নেহরু ১৯৬২ সালের যুদ্ধের সময় অসমের জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে তাঁদের চিনের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কপাল ভালো তাই সেনাবাহিনীর চেষ্টায় চিন অসম দখল করতে পারেনি। তা না হলে, এত দিনে কংগ্রেসের কল্যাণে আপনারা ভারত নয়, চিনের অংশ হতেন।’
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে অসমে বিধানসভা ভোটের সময়ও চিনা হামলার প্রসঙ্গ তুলে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করেছিলেন শাহ। শাহ মঙ্গলবার দাবি করেন, নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বে চিন ভারতের কোনও জমি দখল করতে পারেনি। তিনি বলেন ‘এমনকি ডোকলামেও আমরা তাদের পিছনে ঠেলে দিয়েছি।’
অরুণাচল প্রদেশ ইস্যুতে চিনের আগ্রাসী মনোভাবকে বারবারই নস্যাৎ করেছে ভারত। সদ্য অরুণাচল প্রদেশের তিরিশটি জায়গার নাম পাল্টে তাদের ওয়েবসাইটে তুলেছে। অঞ্চলগুলিকে নিজেদের বলে দাবি করেছে বেজিং। সেই ঘটনার উল্লেখ করে দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নাম বদলে দিলেই কি তা কারও নিজের হয়ে যায়?’
এর পরেই বলেন, চিনকে প্রশ্ন করতে চাই কী ভাবে তারা প্রতিবেশী দেশের অংশের নামকরণ করেন? যদি এটা চলতে থাকে তা হলে ভারত-চিনের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হবে।’ তিনি দাবি করেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণই করে। কিন্তু কেউ যদি ভারতের সার্বভৌমত্বে আঘাত করে তা হলে তিক্ত প্রতিক্রিয়া দিতে ভারতের বেশি সময় লাগবে না। মুখের মতো জবাব দেওয়া হবে।
যদিও লাদাখের ডেপসাং, ডেমচক, প্যাংগং-এর কাছে এইট ফিঙ্গার এরিয়া লাগোয়া জমির মতো বেশ কিছু এলাকায় এখনও লাল ফৌজ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি)-র এপারে ভারতীয় ভূখণ্ডে রয়েছে বলে অভিযোগ। ২০২০-র ১৫ জুন গলওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরে যা নিয়ে দফায় দফায় দুই সেনার কোর কম্যান্ডার স্তরের বৈঠকও চলছে।
এই সবের মধ্যেই একাধিকবার উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে অরুণাচল ও লাদাখ অঞ্চলে চিনের ইনফ্রাস্ট্রাকচার নির্মাণের ছবিও। লাদাখে সম্প্রতি ভারতীয় মেষপালকদের উপর হামলারও অভিযোগ উঠেছে চিনা বাহিনীর বিরুদ্ধে। অন্য দিকে, অরুণাচল প্রদেশের উত্তর সুবনসিরি জেলার তাসরি চু নদী সংলগ্ন অঞ্চলে ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনা গ্রাম বানিয়েছে বলে ম্যাক্সারের উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছে বছর কয়েক আগেই।
সেই সময়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী অভিযোগের প্রাপ্তিস্বীকার করেছিলেন। ২০২২-এ ম্যাক্সার প্রকাশিত ছবিতে দেখানো হয়েছে, ডোকালামে ভারত সীমান্ত লাগোয়ো ভুটানের জমি জরদখল করে শিবির বানিয়েছে চিনা সেনা।