আসন্ন রামনবমীতে কী ঘটবে রামমন্দিরে' সেদিন কখন দর্শন দেবেন রামলালা'
২৪ ঘন্টা | ১০ এপ্রিল ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সারা দেশ রামনবমীর দিকে তাকিয়ে। রামমন্দির প্রতিষ্ঠার পরে এই প্রথম রামনবমী। ফলে অযোধ্যা রামমন্দির কর্তৃপক্ষ থেকে আরম্ভ করে দেশের সাধারণ ভক্ত-- সকলেই উজ্জীবিত হয়ে রয়েছেন সদ্য দ্বারোদ্ঘাটিত রামমন্দিরে কীভাবে উদযাপিত হয় আসন্ন রামনবমী উৎসব, তা দেখতে!
তবে দেশ জোড়া এই কৌতূহল ও ভক্তিপ্রাবল্যের আতিশয্যের মধ্যে শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্রে কিছুটা উদ্বিগ্নই হয়ে রয়েছে এটা ভেবে যে, রামনবমীর দিনে কীভাবে লক্ষ লক্ষ ভক্তকে সুষ্ঠু ভাবে আতিথ্য দেওয়া যাবে মন্দির-চত্বরে। শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্রের সাধারণ সম্পাদক চম্পত রাই আশা করছেন, ওইদিন অন্ততপক্ষে ২৫-৩০ লক্ষ ভক্ত-কাম-তীর্থযাত্রী হাজির থাকবেন মন্দিরনগরীতে। হবে না কেন? রামনবমীকে তো আসলে শ্রীরামের জন্মতিথি মনে করা হয়। এমন এক বিশিষ্ট তিথিতে ভক্তেরা তো রামলালার কাছে যেতে চাইবেনই। আসবেনও। তবে ওই বিপুল গরমে এত ভক্তেকে নিয়ন্ত্রণ করাটা অযোধ্যা রামমন্দিরের কাছে রীতিমতো এক চ্যালেঞ্জ।চৈত্র নবরাত্রির শেষ দিনে পালিত হবে রামনবমী। এপ্রিলের মাঝমাঝি সময়ট। অত্যন্ত গরম। ফলে, শ্রী রাম জন্মভূমি তীর্থ ক্ষেত্রের তরফে সমস্ত ভক্তকে অনুরোধ করা হয়েছে, তাঁরা যেন সঙ্গে করে একটু ছাতু আনেন।কিন্তু রামলালা তো বালক! তিনি কি সারাদিন ধরে ভক্তদের দর্শন দিতে পারবেন? মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, ওই দিন ২২ ঘণ্টা ধরে ভক্তদের দর্শন দেবেন রামলালা। বিশ্রাম নেবেন মাত্র ২ ঘণ্টা। রামলালার ডেইলি রুটিন নিয়ে বহু মানুষের প্রচুর কৌতূহল। কখন তিনি ঘুম থেকে ওঠেন? কী খান প্রাতরাশে? তাঁর মঙ্গল-আরতি ক'টার সময়ে হয়? তিনি দর্শন দেন কখন থেকে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে প্রথম থেকে আগ্রহী ছিল গোটা দেশ। যা জানা গিয়েছে, তা হল-- প্রতিদিন ভোর চারটেয় উঠবেন রামলালা, ভোর চারটেয় খুলে যাবে রামলালার মন্দিরদ্বার। আনুষ্ঠানিক ভাবে ঘুম থেকে ওঠার জন্য অন্তত আরও ১ ঘণ্টা আগে থেকে তাঁর ওঠার প্রস্তুতি চলবে। মানে, রাত তিনটে থেকে। এরপর গর্ভগৃহ ধোয়ামোছা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার কাজ হবে। এর পর রামলালার শ্রীযন্ত্রকে মন্ত্রোচ্চারণ করে জাগরিত করা হবে। এসবের পরে হবে মঙ্গল-আরতি। সাড়ে চারটে থেকে পাঁচটার মধ্যে এই আরতি সমাধা হবে। রামলালার দর্শন শুরু হবে সকাল ৮ টা থেকে। দর্শন চলবে বেলা ১টা পর্যন্ত। এর পরে হবে রামলালার মধ্যাহ্নভোজ। বেলা ১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত রামলালার দর্শন বন্ধ থাকবে। ফের দর্শন শুরু হবে ৩ টের পরে, চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। তবে এর মধ্যে আছে সন্ধ্যারতি, সন্ধে ৭টার সময়ে। এ সময়ে রামলালাকে প্রতি ঘণ্টায় দেওয়া হবে দুধ ও ফল। রামনবমীর দিনে এই নিয়মে কিছুটা ব্যত্যয় ঘটবে।সারাদিনে মোট পাঁচবার রামের আরতি হবে। সপ্তাহের কোন দিন রামলালা কোন রঙের পোশাক পরবেন, তা-ও ঠিক করা থাকবে। সময়মতো তা বদলে দেওয়া হবে। কবে কোন রঙের পোশাক? জানা গিয়েছে তা-ও। যেমন, সাধারণ ভাবে সাদা রঙের পোশাকই পরিহিত থাকবেন রামলালা। তবে বিশেষ উপলক্ষ্যে বিশেষ রঙের পোশাক-- সোমবার হলুদ, মঙ্গলবার লাল, বুধবার সবুজ, বৃহস্পতিবার হলুদ, শুক্রবার হয় হালকা হলুদ নয়তো ক্রিম রঙের পোশাক, শনিবার নীল এবং রবিবার গোলাপি। কর্ণাটকের ভাস্কর অরুণ যোগরাজের তৈরি রামলালার মূর্তিটির ওজন ২০০ কিলো। মূর্তিটি ৪.২৪ ফুট লম্বা, ৩ ফুট চওড়া। রামলালার মূর্তির উপরের দিকে স্বস্তিকচিহ্ন, ওঁ-চিহ্ন, চক্র ও গদা চিহ্ন। রামলালার মূর্তির একেবারে শীর্ষে সূর্য। রামলালার মূর্তির চারপাশে পাথরে অঙ্কিত দশাবতার। রামলালার ডানদিকে যথাক্রমে মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নৃসিংহ এবং বামন অবতার। বাঁদিকে যথাক্রমে পরশুরাম, রাম, কৃষ্ণ, বুদ্ধ এবং কল্কি অবতার। অবতারগণের একেবারে নীচে একদিকে আছেন হনুমান, একদিকে গরুড়। রামলালা দাঁড়িয়ে আছেন প্রস্ফুটিত এক পদ্মের উপরে।