অরূপ বসাক: বুধবার মালবাজারের রথখোলা মাঠে নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে উপস্থিত হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বিমল গুরুংকে সঙ্গে নিয়ে মঞ্চে ওঠেন শুভেন্দু অধিকারী। এরপরে শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে আলিপুরদুয়ার জেলার কুমারগ্রাম বিধানসভার অন্তর্গত লুইস কুজুর, নাগরাকাটা বিধানসভার তৃণমূল নেতা অমরনাথ ঝা এবং কংগ্রেস নেতা মানিক ঘোষ বিজেপিতে যোগদান করেন। এরপর বক্তব্য শুরু করেই শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "মালবাজার কিছুদিন আগে পিসিমা এসেছিলেন। গোটা মাঠ ফাঁকা, যেকারণে আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।" এরপর তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, "নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যে টাকা পাঠিয়েছিলেন, কিন্তু এখানকার মানুষ সেই সুবিধা পায়নি। কারণ চোর তৃণমূল কংগ্রেস সেই সুবিধা মানুষকে পেতে দেয়নি।" তৃণমূল কংগ্রেসের অঘোষিত নম্বর টু অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "তোলাবাজ ভাইপো, উত্তরবঙ্গ আলাদা নয় বলেছিলেন। কিন্তু উত্তরবঙ্গে এতদিন কোনও উন্নতি হয়নি। এখানে এইমসের জন্য জায়গা চায় কেন্দ্র। কিন্তু তারা দেয়নি।" গোটা অরণ্যে এত জঙ্গল ছিল কিন্তু তৃণমূল গাছ কেটে কেটে পাচার করছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন। চন্দন গাছ পাচার করতে গিয়ে এক তৃণমূল ব্লক সভাপতি গ্ৰেফতার হয়েছিলেন বলেও দাবি করেন শুভেন্দু।
চার শ্রমিকদের পাট্টা দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভোটের সময় পাট্টা দেওয়া হচ্ছে। বিজেপি ক্ষমতায় আসলে চা শ্রমিকদের একমাসের মধ্যে অনারশিপ মিলবে বলেও তিনি জানান। চা বাগানের শ্রমিকদের ঘরের জন্য যে টাকা দেওয়া হয়েছে সেটা কেন্দ্র সরকারের লেবার ডিপার্টমেন্টের বলে তিনি দাবি করেন। কিছুদিন আগে ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে সেদিন রাতেই জলপাইগুড়িতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী ফটো তুলতে এসেছিলেন। তু খিচ মেরি ফটো।" তিনি আরও বলেন, দশমীর দিনে মাল নদীতে মানুষ ভেসে গিয়েছিলেন কিন্তু তখন মুখ্যমন্ত্রী রাতে আসেননি, কারণ তখন ভোট ছিল না। এর পাশাপাশি তিনি মাল পৌরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সাহা এবং আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তীকেও আক্রমণ করেন।এদিন নাগ্রাকাটার তৃনমুল নেতা অমরনাথ ঝা বিজেপিতে যোগদান করেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন তৃনমুলের সঙ্গে ছিলাম। শ্রমিক সংগঠন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিয়েছি। ছিলাম জেলা পরিষদ সদস্য ও মেন্টর। কিন্তু, গত ২০১৯ সাল থেকে আমার প্রতি বঞ্চনা শুরু হয়। সরিয়ে দেওয়া হয় ব্লক সভাপতি থেকে। সরিয়ে দেওয়া হয় শ্রমিক সংগঠন থেকে। সর্বশেষ জেলা পরিষদের মেন্টর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সমস্ত পদ কেড়ে সাধারণ ভোটারে পরিণত করছে তৃণমূল। একজন রাজনৈতিক সচেতন মানুষ হিসাবে তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে বিজেপিতে যোগদান করলাম। বুধবার মালবাজার শহরে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জনসভায় বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিয়ে এই কথা জানালেন ডুয়ার্সের নাগরাকাটা ব্লকের একদা তৃনণমূল কংগ্রেস নেতা তথা জেলা পরিষদের প্রাক্তন মেন্টর অমরনাথ ঝাঁ।অন্যদিকে এদিন মালবাজারে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় সন্দেশখালির ৯ জন মহিলাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সন্দেশখালির মহিলারা অভিযোগ করেন, তৃণমূল সরকার তাদের কীভাবে অত্যাচার করছে। রাজ্য সরকারের সমস্ত সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তারা পাচ্ছেন না। তৃণমূল সরকার তাদের সরকারি সুবিধা বন্ধ করে দিয়েছে বলেও জানান তাঁরা। (দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের App, Facebook, Whatsapp Channel, X (Twitter), Youtube, Instagram পেজ-চ্যানেল)