• CAA নিয়ে ভুল বোঝাচ্ছেন মমতা, অভিযোগ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
    এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: দেশে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিজ্ঞপ্তি জারি হতেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তাঁর যুক্তি, সিএএ-র জন্য আবেদন করা মানেই এ দেশের নাগরিকত্ব খোয়ানো। একাধিক জনসভা থেকে তিনি এই বার্তাও দিয়েছেন যে, সিএএ-তে আবেদন করলেই বিভিন্ন সরকারি ভাতাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। বুধবার বালুরঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বুনিয়াদপুরে ভোট প্রচারে এসে মমতার সেই বার্তার জবাব দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তাঁর দাবি, সিএএ ইস্যুতে বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন তৃণমূলনেত্রী।

    সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়াকে কেন্দ্র করে ভোটের হাওয়া ইতিমধ্যেই গরম হতে শুরু করেছে। বিজেপি চাইছে, সিএএ-কে সামনে রেখে হিন্দু ভোট এককাট্টা করতে। তৃণমূল কৌশলে পদ্ম-শিবিরের সেই পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়ে প্রচার করছে, নাগরিকত্বের জন্য আবেদনের অর্থই হলো, নাগরিকত্ব খোয়ানো। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, লোকসভা ভোটের প্রথম পর্যায়ের প্রচারে সিএএ-কে সামনে রেখে এখনও সেরকম কোনও ‘অ্যাডভান্টেজ’ নিতে পারেননি বাংলার গেরুয়া নেতারা। বরং মমতার কৌশলী অবস্থান ভোট-প্রচারে তৃণমূলকে কিছুটা সুবিধা করে দিয়েছে।এ বারের লোকসভা ভোটে প্রথমবার বাংলায় এসে অমিত শাহ তাই সিএএ ইস্যুতে হাওয়া ঘোরানোর চেষ্টাই করেছেন। বুনিয়াদপুরের ওই সভা থেকে তিনি বলেন, ‘আমরা সিএএ নিয়ে এসেছি। যাতে শরণার্থীরা ভারতের নাগরিকত্ব পান। কিন্তু মমতাদিদি বাংলার মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছেন।’ তৃণমূলের ভুল বোঝানোর পদ্ধতি ব্যাখ্যা করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ওরা বলছে, সিএএ-র জন্য আবেদন করলে আপনাদের নাগরিকত্ব চলে যাবে। আরে নাগরিকত্ব তো নেই-ই।’

    এরপরেই তিনি উদ্বাস্তু সমাজকে ভরসা দিতে বলেন, ‘আমি বলছি, শরণার্থীরা নির্ভয়ে সিএএ-র জন্য আবেদন করুন। কারও বিরুদ্ধে কোনও মামলা হবে না। এটা মোদী সরকারের আইন, কেউ এর পরিবর্তন করতে পারবে না।’ সিএএ ইস্যুতে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে শাহের সংযোজন, ‘আপনাদের যত ইচ্ছা বিরোধিতা করুন। আমরা সব শরণার্থীকে নাগরিকত্ব দেবই।

    মমতা দিদির কাছে জানতে চাই, বাংলায় যে শরণার্থীরা এসেছে, তাঁরা নাগরিকত্ব পেলে আপনার কী সমস্যা? একদিকে, অনুপ্রবেশকারীদের লাল কার্পেট পেতে অর্ভ্যথনা করছে তৃণমূল, অন্যদিকে শরণার্থীদের ভুল বোঝাচ্ছে।’ তাঁর দাবি, রাজ্যের শাসক দলের এই কৌশল বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সিএএ সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিতে দেরি করেনি তৃণমূল।

    এদিন বিকেলেই সাংবাদিক বৈঠক করে দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘সিএএ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোথাও কোনও ভুল বোঝাচ্ছেন না। কারণ, সিএএ নিয়ে যাঁরা আবেদন করবেন, তাদের তো প্রথমে ঘোষণা করতেই হবে যে তারা ভারতের নাগরিক নন। এই বিষয়টি বরং আগে স্পষ্ট করুন অমিত শাহ।’ তাঁর প্রশ্ন, ‘সিএএ-তে যাঁরা আবেদন করবেন, তাঁদের দেশ থেকে বের করে দেওয়া হবে না, তার কি গ্যারান্টি আছে? অমিত শাহ গ্যারান্টি দেবেন?’

    কুণালের কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো বলেই দিয়েছেন, যাঁদের নাম ভোটার তালিকায় আছে, তাঁরা সকলে এ দেশের নাগরিক।’ অনুপ্রবেশ ইস্যুতে শাহর এদিনের আক্রমণের জবাবে কুণাল বলেন, ‘অনুপ্রবেশ আটকানোর দায়িত্ব তো কেন্দ্রীয় সরকারের। সীমান্ত রাজ্য সরকারের অধীনে নয়। এ সব বলে অমিত শাহ আত্মঘাতী গোল করছেন।’
  • Link to this news (এই সময়)