• পাঞ্জাবের কাছে জঘন্য হার, আইএসএল শেষ ইস্টবেঙ্গলের
    আজকাল | ১১ এপ্রিল ২০২৪
  • ইস্টবেঙ্গল - ১ (সায়ন)পাঞ্জাব - ৪ (জর্ডন-২, তালাল, ম্যাজেন)আজকাল ওয়েবডেস্ক: আইএসএল শেষ ইস্টবেঙ্গলের। বুধবার দিল্লির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে পাঞ্জাব এফসির কাছে ১-৪ গোলে হেরে সুপার সিক্স থেকে ছিটকে গেল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। জঘন্য হার। মাধি তালালের কাছে আত্মসমর্পণ লাল হলুদের। বলা যায় তাঁর কাছেই হারল ইস্টবেঙ্গল। এদিন পাঞ্জাবের অর্কেস্ট্রার দায়িত্ব পালন করেন তালাল। গোটা মাঠ জুড়ে খেলেন। গোল করলেন এবং করালেন। যাবতীয় আক্রমণের কান্ডারী মাধি তালাল। তাঁর গতি এবং বুদ্ধিদীপ্ত ফুটবলের কাছেই হার মানল কুয়াদ্রাতের দল। স্বভাবতই ম্যাচের সেরা পাঞ্জাবের ফুটবলার। এদিন মরণ-বাঁচন ম্যাচে ইস্টবেঙ্গলের প্রয়োজন ছিল জয়। উল্টে চারটে গোল হজম করলেন হিজাজিরা। চলতি আইএসএলে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হার। তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে লাল হলুদের রক্ষণ। শুরুতে গোল খেয়েও সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু ঠিক বিরতির আগে গোল হজমে ছন্দপতন ঘটে। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য ঝাঁপাতে গিয়ে রক্ষণের কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে পড়ে। পাঁচ গোলের মালা পড়ে মাঠ ছাড়তে পারত লাল হলুদ। খাবড়ার গোললাইন সেভের জন্য সেই লজ্জার হাত থেকে বাঁচে ইস্টবেঙ্গল। আরও একটি বড় ক্ষতি কার্ডের জন্য প্রভসুখন গিল এবং শৌভিক চক্রবর্তীর না থাকা। এদিন মাঝমাঠে খেলা ধরতে পারেননি সল ক্রেসপো। প্রথমার্ধে তাও লড়াই হয়। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধ একতরফা। দাপুটে ফুটবল পাঞ্জাবের। হারের ফলে ২২ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে সাতেই আটকে থাকল কলকাতার প্রধান। আগের দিন চেন্নাইন‌ এফসি নর্থ ইস্টকে হারানোয় চাপ বেড়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের ওপর। বুধবার দিল্লির দর্শকশূন্য মাঠে প্রথম থেকেই আক্রমনাত্মক ফুটবল আশা করা হয়েছিল লাল হলুদ ব্রিগেডের থেকে। অন্যদিকে প্লে অফের দৌড় থেকে ছিটকে যাওয়া পাঞ্জাবের কোনও বাড়তি মোটিভেশন ছিল না। তাসত্ত্বেও প্রথমার্ধে বেশি আক্রমণ এল লুকা ম্যাজেন, জর্ডন গিলদের পা থেকে। বেশি বিপজ্জনক দেখায় তাঁদের। মূলত বাঁ দিক থেকে আক্রমণে উঠছিল পাঞ্জাব। রক্ষণ সামলে কাউন্টার অ্যাটাক ভিত্তিক ফুটবল খেলছিল ইস্টবেঙ্গল। প্রথম কোয়ার্টারে সেইভাবে কোনও দলই পজিটিভ সুযোগ পায়নি। ম্যাচের ১৯ মিনিটে পাঞ্জাবকে এগিয়ে দেন উইলমার জর্ডন গিল। অভিষেকের থেকে বল পেয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত প্লেসিংয়ে গোল। তার এক মিনিট আগেই দুর্দান্ত সেভ কমলজিৎ সিংয়ের। গিলের নিশ্চিত গোল বাঁচান লাল হলুদ কিপার। কিন্তু পরের মুহূর্তেই গোল হজম করেন। তার দু"মিনিটের মাথায় সমতা ফেরানোর সুযোগ ছিল ইস্টবেঙ্গলের সামনে। ভাসকুয়েজের মাপা পাসে পা ছোঁয়ালেই গোল। কিন্তু সামনে একা পাঞ্জাব গোলকিপার রবি কুমারকে পেয়েও গোলে ঠেলতে পারেননি সায়ন। অবশ্য তার কয়েক মিনিটের মধ্যেই প্রায়শ্চিত্ত করেন। ম্যাচের ২৫ মিনিটে সায়নের বিশ্বমানের গোলে সমতা ফেরায় ইস্টবেঙ্গল। ডানদিক থেকে বল নিয়ে গিয়ে দু"জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে কাট করে ভেতরে ঢুকে বাঁ পায়ের শটে প্রায় ২২ গজে দূর থেকে গোলে রাখেন। একক দক্ষতায় ইস্টবেঙ্গলকে ম্যাচে ফেরান ২১ বছরের সায়ন ব্যানার্জি। দ্বিতীয় কনিষ্ঠতম ফুটবলার হিসেবে লাল হলুদ জার্সিতে আইএসএলে গোল পেলেন সায়ন। এদিন বক্সে কয়েকটা ঠিকানা লেখা পাস বাড়ান ভাসকুয়েজ‌। এদিনও প্রথম একাদশে জায়গা হয় মেসির সতীর্থের। কিন্তু দুটো ছাড়া প্রথমার্ধে আর কোনও সুযোগ পায়নি ইস্টবেঙ্গল। বরং ম্যাচের ৪৩ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় পাঞ্জাব। গোল করেন মাধি তালাল। কমলজিতের ভুলে দ্বিতীয় গোল হজম করে ইস্টবেঙ্গল। কার্ডের জন্য এদিন ছিলেন না প্রভসুখন গিল। তার খেসারত দিতে হল। আইএসএলে লাল হলুদ গোলের নীচে প্রথমবার নেমে নড়বড়ে দেখায় কমলজিৎকে। প্রথমার্ধের শেষ মিনিটে তৃতীয় গোল হজম করার মতো উপক্রম হয়েছিল। কোনওক্রমে বল বিপদমুক্ত করে লাল হলুদের ডিফেন্ডাররা। প্রথম ৪৫ মিনিটে রক্ষণে অনবদ্য হিজাজি। কয়েকটা দুর্দান্ত সেভ করেন। বক্সের মধ্যে তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন পাঞ্জাব কিপার রবি কুমার। পেনাল্টি হলেও হতে পারত। কিন্তু দেননি রেফারি। বিরতির পরও দাপুটে শুরু পাঞ্জাবের। জর্ডন, ম্যাজেন জুটিতে ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু হিজাজির তৎপরতায় সেই যাত্রায় বেঁচে যায় ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৪৯ মিনিটে অফসাইডের জন্য লুকা ম্যাজেনের গোল বাতিল হয়ে যায়। এদিন সল ক্রেসপো, ক্লেইটন সিলভাকে পুরোপুরি অফকালার দেখায়। গোলের সুযোগই তৈরি করতে পারেননি ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার। ম্যাচের ৬২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের প্লে অফে যাওয়ার স্বপ্ন শেষ। মাধি তালালের পাস থেকে নিখুঁত ফিনিশ জর্ডন গিলের। ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্ডারদের ধারেকাছে দেখা যায়নি। অনেকটা ওপরে উঠে গিয়েছিল ডিফেন্স লাইন। তালালের গতিতে মার খায় হিজাজিরা। দ্বিতীয়ার্ধ পুরোটাই পাঞ্জাবের। ম্যাচের ৭০ মিনিটে ৪-১ করেন লুকা ম্যাজেন। এবারও কান্ডারী সেই মাধি তালাল। তাঁর সঙ্গে ওয়ান টু খেলে গোল লুকার। যেভাবে ঝড় তুলেছিল পাঞ্জাব, গোল সংখ্যা আরও বাড়তেই পারত। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে পঞ্চম গোল দিতে পারত পাঞ্জাব। কিন্তু গোললাইন থেকে ফেরত পাঠান হরমনজোৎ খাবড়া। 
  • Link to this news (আজকাল)