• ভোটের মুখেই তৃণমূল স্কুল শিক্ষকদের সম্মেলন, বিতর্ক
    এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: গত মাসে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন ওয়েবকুপা-র কনভেনশন ঘিরে বিতর্কের রেশ এখনও মেলায়নি। তার মধ্যেই নয়া বিতর্ক। আগামী ১৬ এপ্রিল ডায়মন্ড হারবারের সরিষা হাইস্কুল (মেলার) মাঠে রাজ্য সম্মেলনের আয়োজন করছে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি। যাকে কেন্দ্র করে সংগঠনের অন্দরেই উঠেছে প্রশ্ন।সমিতির বেশ কিছু নেতা যে ভাষায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক তথা সদস্যদের ওই দিন উপস্থিতির নির্দেশ দিয়েছেন, তা কার্যত হুমকি বলেই মত সংগঠনের দীর্ঘদিনের মেম্বারদের। অভিযোগ, সমিতির বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে সদস্যদের বলা হয়েছে — ‘যাঁরা প্রতিনিধি হিসেবে আসবেন, কেবল তাঁরাই অনুদান দেবেন। যাঁরা আসবেন না, তাঁরা প্রতিনিধি-অনুদান দেবেন না। তাঁদের দায় সংগঠন আগামী দিনে নেবে না। যাঁরা রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিত হবেন না, আগামী দিনে আমাদের প্রিয় সংগঠনের জেলা বা ব্লক কমিটিতে থাকতে পারবেন না।’

    আর এক বার্তায় বলা হয়েছে — ‘সম্মেলনে না থাকলে, পেশাগত সমস্যায় সংগঠন আপনার পাশে থাকবে না।’ এ নিয়ে শুরু হয়েছে টানাপড়েন। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সুব্রত গুহর অবশ্য দাবি, ‘আমাদের সংগঠনের তরফে কোনও শিক্ষক-শিক্ষিকাকে সম্মেলনে হাজির থাকার জন্য চাপ দেওয়া হয়নি। অযথা বা অকারণে কেউ যাতে সম্মেলন মিস না করেন, সেটাই জেলা-নেতৃত্বকে দেখতে বলা হয়েছে।’

    তাঁর দাবি, বিতর্কিত বার্তাগুলি পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মইদুল ইসলাম পাঠিয়েছেন। মইদুলের কথায়, ‘মা-মাটি-মানুষের সরকারের পাশাপাশি সংগঠনেরও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা পান সংগঠনের সদস্যরা। তাই সম্মেলনে উপস্থিত থাকলে, সদস্যদের ভবিষ্যতে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ যে কোনও সমস্যায় সমিতিকে ঐক্যবদ্ধভাবে পাশে থাকার কথাই বলা হয়েছে। এটাই স্বাভাবিক।’

    প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলিয়ে ২০ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষিকা সম্মেলনে উপস্থিত থাকতে নাম নথিভুক্ত করেছেন বলেও তাঁর বক্তব্য। তবে সমিতির সদস্য শিক্ষকদের বক্তব্য, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহারে প্রথম দফায় ভোট ১৯ এপ্রিল। তার দিন দুয়ের আগে সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে ফিরে গিয়ে ভোটের ডিউটি দেওয়া বেশ কঠিন।

    রাজ্য সম্মেলনে উপস্থিতির ক্ষেত্রে শিক্ষকদের এই সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন সুব্রত। তবে মইদুলের বক্তব্য, ‘১৬ তারিখ এসে, সে দিনই ফিরে যাবেন ওঁরা। কোনও সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’ কিন্তু অনেককেই ভোটের দু’দিন আগে ডিউটিতে যেতে হয়। আবার, পঞ্চম থেকে দশমের পরীক্ষা সদ্য শেষ হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি শুরু ৬ মে।

    তার আগে একাদশের বার্ষিক পরীক্ষা, উচ্চ প্রাথমিক এবং মাধ্যমিকে প্রথম পার্বিক পরীক্ষার খাতা দেখে শিক্ষকদের ফলপ্রকাশের কথা। তার মধ্যে সম্মেলনে উপস্থিত থাকা নিয়ে সংশয়ে অনেকেই।
  • Link to this news (এই সময়)