হুগলি কেন্দ্রে এবার তারকা যুদ্ধ। বিদায়ী সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ফের একবার প্রার্থী করেছে বিজেপি। আবার তৃণমূলের তরফে 'দিদি নং ১' রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় ময়দানে নামান হয়েছে। হুগলি কেন্দ্রের লড়াই তাই খুবই কঠিন। প্রায় এক মাস ধরে প্রচার চলছে। কেউ কাউকে এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে প্রস্তুত নয়। তবে সে তো ভোটের লড়াই, কিন্তু যাঁরা একটা সময় একসঙ্গে দীর্ঘদিন পর্দায় কাজ করেছেন, সেই দু'জনের সম্পর্কের সমীকরণ কেমন? তাঁরা কী ভাবেন একে অপরের সম্পর্কে? অনেকের মনেই সেই প্রশ্ন।স্মৃতি রোমন্থন রচনারবুধবার চুঁচুড়াতেই ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায় ও রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। রচনা তাঁর এক সময়ের সতীর্থ লকেট সম্পর্কে বলেন, 'দু'জনে এত ভালো ভালো ছবি করেছি। এখনও যদি আমি আর লকেট সামনাসামনি বসি সারা রাত কেটে গেলেও আমাদের কথা শেষ হবে না। আমরা যখন সিনেমা করতাম আমাদের বন্ডিংটা ভীষণ স্ট্রং ছিল। আমরা যখন অনেকদিন ধরে ছবি করতাম আউটডোর শ্যুটিং করতাম, আমরা পাঁচ ছয় জন শিল্পী, আমি প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, লকেট চট্টোপাধ্যায়, লাবনী সরকার কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়, রঞ্জিত মল্লিক। আমরা একটা গ্রুপ ছিলাম। শ্যুটিং-এর পরে জমত আড্ডা। হয়তো প্রসেনজিৎ হারমোনিয়াম বাজাচ্ছে, লকেট গান করছে, আমি তবলা বাজাচ্ছি, এই রকম হয়েছে। সেই স্মৃতিগুলো ছিল খুব ভালো। আমি সেই স্মৃতি নিয়েই লকেটকে আমার কাছে রাখতে চাই।'
কী বললেন লকেট?অন্যদিকে লকেট চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'রাজনীতির বাইরে যে ক'জন বন্ধু আমার আছে, আমি তাঁদের কাছে সাংসদ না, আমি সেই লকেট। আমাদের অনেক সময় হাসি মজার কথা হত, ভুল করে কিছু বলে ফেলেছি, সেটা নিয়ে খুব মজা হত। বুম্বাদা (প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়) বলে সেই লকেট এখন এই। আমি আমার পরিচয়টা সেরকম সাধারণ হিসেবেই রাখতে চাই। আমি হয়তো সাংসদ, আজ আছি কাল কী হবে জানি না। আমি দশ বছর অভিনয়ের জায়গাটা ছেড়ে এসেছি, তাই যোগাযোগটা হয়তো কিছু কমে গিয়েছে, কিন্তু স্মৃতিটা রয়ে গিয়েছে। মানুষ আমাদের পরিচিতি অভিনয় জগত থেকেই। ওঁর কাছে হয়তো টাটকা আছে, কারণ ও এখনও শ্যুটিং ক্যামেরা অ্যাকশনের মধ্যে আছে। আমি দশ বছর ছেড়ে এসেছি। আমি চাই রাজনীতিতে ব্যক্তিগত সম্পর্কের আঁচ যেন না পরে। ব্যক্তিগত সম্পর্ক যেন আমাদের ভালো থাকে। রাজনীতি মানে কেউ কাউকে গালিগালাজ করা নয়, কেউ কারও ভুল ধরিয়ে দেওয়া নয়। আমরা মানুষের জন্য কাজ করতে এসেছি এবং যে যার বিচারধারা নিয়ে সেই কাজ করছি।'
লকেট আরও বলেন, 'দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নরেন্দ্র মোদীর যে বিচারধারা রয়েছে, আমি সেই বিচারধারায় উৎসাহিত হয়েছি। ওঁর মনে হয়েছে তাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলে এসেছেন। আগামী দিনে মানুষ ঠিক করবে কার বিচারধারা ঠিক। মানুষের কাজ করা অনেক কঠিন। আমি নিজেও ক্যামেরার সামনে থেকেছি। ওঁর সঙ্গে যদি কখনও দেখা হয় বা কথা হয়, ও নিজেও বুঝতে পারবে। এখানে মানুষের যন্ত্রণা দুঃখ অনেক বেশি। আমরা যখন টিভি ক্যামেরার মধ্যে থাকি, তখন মানুষ আমাদের ছুঁতে পারে না, কিন্তু সেই টিভি ভেদ করে যখন মানুষের কাছে আসি, তখন মানুষ আমাদের ছুঁয়ে দেখতে চায়। আমি ওকে ওয়েলকাম করেছি। আমার বিশ্বাস ও যদি অনেকদিন রাজনীতিতে থাকে বুঝবে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে দেশ যেভাবে এগিয়ে চলেছে তাতে একদিন না একদিন হয়তো আমার সঙ্গে কথা বলবে ভারতীয় জনতা পার্টিকে সমর্থন করবে।'