Joka-BBD Bag Metro : ময়দানে পুরোদমে কাজ শুরু জোকা-বিবাদী বাগ মেট্রোর ভিক্টোরিয়া স্টেশনের
এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: হই হই করে কর্মযজ্ঞ শুরু হয়ে গেল গড়ের মাঠে। বেশ কিছুটা এলাকা ঘিরে ফেলা হয়েছে ইস্পাতের ব্যারিকেড-ওয়াল দিয়ে। তার মধ্যে তৈরি হয়েছে সাইট অফিস। একাধিক জেসিবি মেশিন নেমে পড়েছে মাটি খোঁড়ার কাজে। আনা হয়েছে বিশাল ক্রেন।কলকাতা মেট্রোর পার্পল লাইন অর্থাৎ জোকা-বিবাদী বাগ শাখার ভিক্টোরিয়া স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরু হয়ে গেল ময়দান চত্বরে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হলের সামনে মাটির প্রায় ১৫ মিটার নীচে, ৩২৫ মিটার দীর্ঘ ভিক্টোরিয়া স্টেশন নির্মাণের পদ্ধতি নিয়ে বছর কয়েক আগে রীতিমতো সরগরম হয়েছিল কলকাতা।
এই শহর ও রাজ্যের তো বটেই, গোটা দেশে যে সব সংগ্রশালা রয়েছে, সেগুলোর মধ্যে জনপ্রিয়তার মাপকাঠিতে একেবারে উপর দিকে ভিক্টোরিয়ার জায়গা। তা ছাড়া, সৌধের নির্মাণশৈলী ও সৌন্দর্যও প্রশংসনীয়। সেই সংগ্রহশালার কাছে ভূগর্ভস্থ স্টেশন নির্মাণের কাজ শুরুর জন্য ভারী ভারী যন্ত্র কাজ করতে শুরু করলে মাটির কম্পনে কি নিরাপদ থাকবে হলের ওই বিশাল প্রাসাদ?
গ্যালারির অমূল্য সংগ্রহগুলোর ক্ষতি হবে না তো? সে বার উঠেছিল এমন সব প্রশ্নই। তবে বিশেষজ্ঞদের একাধিক দল মেট্রোরেলের ওই স্টেশনের নির্মাণকাজের কর্মপদ্ধতি এবং হল থেকে প্রস্তাবিত স্টেশনের দূরত্ব পরিমাপ করে আশ্বাস দিয়েছিল— হল, সংগ্রহে থাকা সামগ্রীর কোনও ক্ষতি হবে না।
কলকাতা মেট্রোরেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলছেন, ‘ভিক্টোরিয়া স্টেশনটি নির্মাণের ভার দেওয়া হয়েছে রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডকে (আরভিএনএল)। নির্দিষ্ট এলাকায় ব্যারিকেড দেওয়ার কাজ প্রায় পুরোটাই শেষ। স্টেশন তৈরির জন্য প্রথমে ডায়াফ্রাম ওয়াল তৈরি করা হবে। তার পর শুরু হবে স্টেশনের বিভিন্ন স্ল্যাব ঢালাইয়ের কাজ।
ইতিমধ্যেই ডায়াফ্রাম ওয়াল তৈরির যন্ত্রপাতি ময়দানে এসে গিয়েছে।’ ময়দান চত্বরের যে জায়গা জুড়ে মেট্রোরেলের ভিক্টোরিয়া স্টেশন তৈরি হবে, সেই জায়গায় রয়েছে মোট ২৯টি গাছ। ওই গাছগুলোকে ময়দান থেকে তুলে বেলেঘাটার কাছে কামারডাঙায় নতুন করে বসানো হবে বলে জানাচ্ছেন কলকাতা মেট্রোরেলের আধিকারিকরা। গাছ স্থানান্তর করার জন্য আইন মেনে অনুমতি চাওয়ার কাজও শুরু হয়েছে।
কলকাতা মেট্রোরেলের বক্তব্য, পার্পল লাইনের কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। ইতিমধ্যেই জোকা থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত অংশে শুরু হয়েছে যাত্রী পরিবহণ। মোমিনপুর থেকে এসপ্ল্যানেড পর্যন্ত অংশের কাজও থেমে নেই। পার্পল লাইনের একেবারে শেষ পর্যায়ের স্টেশনগুলোর মধ্যে রয়েছে খিদিরপুর, ভিক্টোরিয়া, পার্ক স্ট্রিট এবং এসপ্ল্যানেড। ওই চারটি স্টেশনই ভূগর্ভস্থ।
পার্পল লাইনের এসপ্ল্যানেড স্টেশনটির নির্মাণ নিয়ে আপাতত ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছে কলকাতা মেট্রো। এখন যেখানে বিধান মার্কেট, সেই জায়গায় এসপ্ল্যানেড স্টেশনটি নির্মাণের প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ওই জায়গা সেনাবাহিনীর। মেট্রোর স্টেশন নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনী জায়গাটি ছাড়তে রাজিও ছিল। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় বিধান মার্কেট সরানো নিয়ে।
কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের আশ্বাস ছিল, বিধান মার্কেটের ব্যবসায়ীদের স্টেশন বিল্ডিংয়ের পিছনে একটি আলাদা বাড়িতে পুনর্বাসন দেওয়া হবে। কিন্তু বিধান মার্কেটকে সেনাবাহিনী ‘বেআইনি’ ঘোষণা করে সেখানকার ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য জমি দিতে অস্বীকার করে। বিকল্প কোন জায়গায় এসপ্ল্যানেড স্টেশন নির্মাণ হতে পারে, সেই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।