• Bhupati Nagar Incident : ভূপতিনগরে আক্রান্ত এজেন্সি, অভিযুক্তের স্ত্রীর নালিশে কড়া ধারা!
    এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: ভূপতিনগরের ঘটনায় এনআইএ-র আধিকারিকদের রক্ষাকবচ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। একটি অন্তর্বর্তী নির্দেশে বুধবার বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, এই মামলায় এনআইএ-র কোনও আধিকারিককে গ্রেপ্তার করা যাবে না। কোনও অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে ৭২ ঘণ্টা আগে নোটিস দিতে হবে পুলিশকে। জিজ্ঞাসাবাদ করতে হবে ভিডিয়ো কনফারেন্সে।সংরক্ষণ করতে হবে সেই ফুটেজ। কোর্ট এ-ও জানিয়েছে, তদন্ত চালালেও চূড়ান্ত রিপোর্ট পেশ করতে পারবে না পুলিশ। ২৯ এপ্রিল পরবর্তী শুনানিতে এ নিয়ে রাজ্যের হলফনামা তলব করেছে আদালত। এ দিন মামলার নথি দেখে বিস্মিত বিচারপতির প্রশ্ন, ‘ভূপতিনগরে আক্রান্ত হলেন এনআইএ-র আধিকারিক। অথচ আক্রান্ত হওয়া সংক্রান্ত ধারা পুলিশ যুক্ত করল মূল অভিযুক্তের স্ত্রীর দায়ের করা এফআইআরে, এনআইএ-র বিরুদ্ধেই! সেই অভিযোগপত্রে আঘাত করার মতো কোনও অভিযোগই ছিল না।’

    বিচারপতির এই প্রশ্নে নিরুত্তর থাকে রাজ্য। এ দিন এনআইএ-র তরফে বলা হয়, ভূপতিনগরের ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে তাদের তদন্তে একাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে জোরালো প্রমাণ মিলেছে। তাঁদের চার জনকে দু’বার করে সমন পাঠানো হলেও কেউ সাড়া দেননি। নিম্ন আদালতের অনুমতিতে গত ৬ এপ্রিল ভোর পাঁচটা নাগাদ তদন্তকারীরা গ্রামে যান। ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ পুলিশকে জানানো হয়।

    এনআইএ-র আইনজীবী অরুণ মাইতির অভিযোগ, দু’জন সন্দেহভাজনকে নিয়ে গ্রাম থেকে বেরনোর সময়ে হামলার মুখে পড়েন অফিসারেরা। একজন জখমও হন। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ এফআইআর করা হয়। আর সন্ধে ৬টা নাগাদ ধৃত মনোব্রত জানার স্ত্রী অফিসারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।

    সেই এফআইআর-এ পুলিশ ৩২৫ ধারায় গুরুতর আঘাতে জখম করার অভিযোগ আনেন এনআইএ-র অফিসারদের বিরুদ্ধে।✓অথচ হামলায় এনআইএ-র গাড়িই ভাঙচুর করা হয়েছিল। অতএব এনআইএ-র দাবি, ঠিক সন্দেশখালির কায়দায় ভূপতিনগরের ক্ষেত্রেও অফিসারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

    এজেন্সির আরও বক্তব্য, মনোব্রত জানাকে শারীরিক ভাবে হেনস্থার অভিযোগ করা হলেও রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষায় কোনও আঘাতের চিহ্ন মেলেনি। জবাবে রাজ্যের কৌঁসুলি অমিতেষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, এনআইএ আধিকারিকরা ভূপতিনগর থানায় গিয়ে পাঁচটি জায়গায় তল্লাশির কথা বলেন এবং নিরাপত্তার জন্য পুলিশকর্মী চান। কিন্তু কোথায় কোথায় যাবেন, তা জানানো হয়নি। রাজ্যের আরও দাবি, ‘আমাদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হয়নি। তা-ও বাহিনী প্রস্তুত রেখেছিলাম।’

    যাবতীয় নথি দেখার পরে বিচারপতি সেনগুপ্তের প্রশ্ন,✓‘দ্বিতীয় এফআইআর দায়েরের আগে পুলিশ কি প্রাথমিক অনুসন্ধানের প্রয়োজন বোধ করেনি?’ রাজ্যের যুক্তি, ‘আমাদের কাছে আদালতগ্রাহ্য অপরাধের অভিযোগ এসেছিল, তাই এফআইআর করেছি।’ রাজ্যের অভিযোগ, আহত এনআইএ আধিকারিককে সাক্ষী হিসেবে ডেকে পাঠানো হয় জবানবন্দি এবং মেডিক্যাল রিপোর্ট দেওয়ার জন্য।

    কিন্তু এনআইএ সহযোগিতা করেনি। এতে বিচারপতি এনআইএ-র আইনজীবীকে বলেন, ‘আপনারাও তো তদন্তে সাহায্য করছেন না। রাজ্য পুলিশ যখন নথি চাইছে সেটা দিচ্ছেন না কেন?’ এরপরেই রাজ্যকে আদালতের প্রশ্ন, ‘ধৃতের স্ত্রী যে অভিযোগ করেছেন তার ভিত্তিতে এনআইএ-র আধিকারিকদের বিরুদ্ধে গুরুতর আঘাতের ধারা (ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩২৫ ধারা) দেওয়া হলো, আর এনআইএ যে অভিযোগ দায়ের করল তার ভিত্তিতে সামান্য আঘাতের ধারা (ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩২৩ ধারা) দেওয়া হলো! তা-ও প্রমাণ ছাড়া? এটা কেমন তদন্ত?’ পরবর্তী শুনানিতে পুলিশকে এই দু’টি মামলার কেস ডায়েরি পেশ করতে হবে আদালতে।

    এ দিন কেন্দ্রের সহকারী সলিসিটর জেনারেল রাজদীপ মজুমদার আদালতে অভিযোগ করেন, বাংলায় বারবার কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসাররা আক্রান্ত হচ্ছেন। আর উল্টে তাঁদের নামেই অভিযোগ এনে হেনস্থা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি সন্দেশখালির পাশাপাশি তুলে আনেন ২০১৯ সালের কলকাতায় আয়কর হানার প্রসঙ্গও।
  • Link to this news (এই সময়)