২০২৪ সালের শুরু থেকেই গরমের দাবদাহে নাজেহাল হচ্ছে মানুষ। মার্চ এপ্রিল মাসের গরমে হিমসিম খেতে হচ্ছে আম জনতাকে। শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নয়, একই অবস্থা ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোরও। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, আসন্ন মে মাসেও গরমের দাপট নেহাতই কম হবে না। এবছর আবার প্রবল গরমের সঙ্গে তাপপ্রবাহেরও পূর্বাভাস দিয়েছে মৌসম ভবন।গরমের মাঝে হওয়া বৃষ্টি খানিকটা স্বস্তি দিলেও পুরোপুরি রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না। এমনিতে জুন মাস মানেই বর্ষা আসার সময়। তবে এবার গ্রীষ্ম আর বর্ষার সমীকরণটা বদলে যেতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়াবিরা বলছেন, লা নিনা আসছে। তার জেরেই ওলট পালট হতে পারে ভারতের মরশুম।
লা নিনা কি?লা নিনা হলো একটি স্প্যানিশ শব্দ, যার অর্থ হল little ‘বালিকা’। এল নিনোর ঠিক বিপরীত হচ্ছে লা নিনা। এই সময় প্রশান্ত মহসাগরীয় অঞ্চলে পূর্ব থেকে পশ্চিমে বয়ে চলা বাযুর পরিবর্তন ঘটে। তখন উষ্ণ জলস্রোত জলস্রোত প্রবাহিত হতে থাকে পশ্চিমের দিকে। লা নিনা চলাকালীন সমুদ্রের গভীর থেকে উঠে ঠান্ডা জল সমুদ্রের উপরিভাগে উঠে যায়। যার ফলে পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরীয় সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ঠান্ডা হয়ে যায়। এল নিনো যেমন তীব্র তাপপ্রবাহের কারণ, তেমনি লা নিনা ঠিক এর উল্টোটা। লা নিনা প্রভাব ফেলতে পারে বর্ষায়। এর ফলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের পরিমাণে তারতম্য ঘটে। শুরু হয় প্রবল বর্ষণ। স্বাভাবিক আবাওয়ার পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। সেরকমই কিছু ঘটতে চলেছে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
লা নিনার প্রভাব পড়বে আর কোন কোন জায়গায়?লা নিনার প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে পূর্ব আফ্রিকা, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া এবং দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে। পূর্ব এশিয়া ও উত্তর অস্ট্রেলিয়াতেও রয়েছে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস।
এবারের বর্ষাকে দুভাগে ভাগ করা হয়েছে। এপ্রিল থেকে জুলাই এবং জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর। এল নিনোর প্রভাবে প্রথম অর্ধে তাপমাত্রা বাড়বে। তবে দ্বিতীয় অর্ধে তৈরি হবে ঘোরতর দুর্যোগ।
বর্ষার অপেক্ষায় রয়েছে পশ্চিমবঙ্গও। এরাজ্যে বর্ষা আসর স্বাভাবিক সময় ১০ জুন। তবে চলতি বছরে কবে বর্ষা বাংলায় পা রাখবেতা এখনও জানায়নি আলিপুর আবহাওয়া দফতর। যদিও হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, কেরলে বর্ষা তাড়াতাড়ি এলেই যে বাংলাতেও তাড়াতাড়ি ঢুকবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই।
দেশের মধ্যে কেরলে প্রথম পা রাখে বর্ষা। ২০২০ সালে ১ জুন বর্ষা ঢুকেছিল দেশে। ২০২১ সালে ৩ জুন দেশে পা রেখেছিল বর্ষা। লা নিনার প্রভাবে এবারও সময়ের আগেই দেশে বর্ষার দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।