তাপস ওর জায়গায়, আমি আমার জায়গায়! মন্তব্য বিজেপি প্রার্থী আলুওয়ালিয়ার
এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৪
বিশ্বদেব ভট্টাচার্য, আসানসোল
অবশেষে আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করল বিজেপি। সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়ার নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষিত হতেই সামনে চলে এসেছে পারিবারিক সম্পর্কের ইকুয়েশন। এই কেন্দ্রেই তৃণমূল নেতা রানিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় সম্পর্কে আলুওয়ালিয়ার শ্যালক। জামাইবাবু বিরোধী দলের প্রার্থী হয়েছেন বলে তাঁদের সম্পর্কে কি চিড় ধরবে?শ্যালক, জামাইবাবু দু’জনেই জানাচ্ছেন, রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়, পারিবারিক সম্পর্কে তা কোনও বাধা তৈরি করবে না। ২০১৯ সালে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে সুরিন্দর যখন বিজেপি প্রার্থী নির্বাচিত হন তখনও এই পারিবারিক সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। সেই সময়ে দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র পারিষদ ছিলেন তৃণমূল নেতা অমিতাভ (জহর) বন্দ্যোপাধ্যায়। তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই অমিতাভও সুরিন্দরের শ্যালক।
সেবারও অমিতাভ বলেছিলেন, দল ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক সম্পূর্ণ আলাদা। এবারেও সেই একই প্রশ্ন। জামাইবাবু সুরিন্দর বিজেপি প্রার্থী হওয়ায় কি অস্বস্তিতে পড়লেন এডিডিএ চেয়ারম্যান তাপস? জবাবে তাপস বলছেন, ‘২০১৯-এ যখন উনি বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন, তখনও আমি এডিডিএ-র চেয়ারম্যান ও বিধায়ক ছিলাম। আমরা দু’জনেই দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করি। কখনও উনি ওঁর মত চাপিয়ে দেন না। কখনও বলেননি বিজেপিতে যোগ দাও। আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।’
নেত্রীর হাত তাঁর মাথায় রয়েছে জানিয়ে তাপস বলেন, ‘রাজনীতির ময়দানে দলের বক্তব্য নিয়ে আমরা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করব। লড়াই দলীয় আদর্শকে সামনে রেখে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে হবে।’ একই ভাবে সুরিন্দার বলেন, ‘আমি পরিবার এবং রাজনীতিকে কখনও একসঙ্গে মেলাইনি। ওঁরা ওদের দলের কথা বলবেন, আমি আমার দলের কথা বলব।’ এর পরই ছন্দ মিলিয়ে বলেন, ‘মানুষ আপন টাকা পর, যত পারিস মানুষ ধর। এই বিশ্বাসে আমি চলি।’
এই কেন্দ্রে বহু আগেই তৃণমূল প্রার্থী করেছে শত্রুঘ্ন সিংকে। বলিউডের এক সময়ের নায়ক ইতিমধ্যে প্রচারও শুরু করে দিয়েছেন। প্রচারে কি প্রথমেই পিছিয়ে পড়লেন সুরিন্দর? গত দু’বারের সাংসদ বলেন, ‘উন্নয়নের ধারাকে সামনে রেখে নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপির আদর্শের লড়াই নিয়ে আমরা বলছি। আর ওঁরা তুষ্টিকরণের রাজনীতি করছেন। ব্যাপক দুর্নীতিতে ওঁদের দলের নেতা, মন্ত্রীরা জেলে।’
সিনেমায় শত্রুঘ্ন সিনহার জনপ্রিয় ডায়লগ ‘খামোশ’ নিয়ে সুরিন্দরের প্রতিক্রিয়া, ‘খামোশ মানে কি চুপ করে থাকা? স্কুলশিক্ষক ক্লাসে বাচ্চাদের বলেন, সাইলেন্স প্লিজ। আমি উল্টোটাই করব। মানুষকে খামোশ বা চুপ করতে বলব না। তাঁদের কথা শুনব। তাঁদের চোখ-মুখের ভাষা অনুভূতি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করব।’
কিন্তু তাঁকে তো বেসরকারিকরণ, বন্ধ কারখানা নিয়ে শাসকদলের তোপের মুখে পড়তে হবে। কী ভাবে মোকাবিলা করবেন? আলুওয়ালিয়ার জবাব, ‘আমি উপর উপর শুনে কথা বলি না। বিষয়ের গভীরে ঢোকা উচিত। কাল আমি যাচ্ছি। প্রকৃত অবস্থা জেনে মন্তব্য করব। তবে স্বাধীনতার পর আসানসোলে ৪৪১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বিশ্বমানের স্টেশন হচ্ছে। এ জন্য আমি একজন আসানসোলের মানুষ হিসেবে গর্বিত। ভুলে গেলে চলবে না, আমার জন্ম এখানেই। এখানেই আমার পড়াশোনা, বড় হয়ে ওঠা।’