পবিত্র ইদ উৎসবে মেতে উঠেছে গোটা দেশ। সকল ধর্ম সমন্বয় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যোগদান করছেন এই মিলন উৎসবে। উৎসবকে কেন্দ্র করে যুযুধান দুই রাজনৈতিক শিবিরের মিলনে ছবি ধরা পড়ল বাঁকুড়ায়। একই মঞ্চে সিপিএম, তৃণমূল কংগ্রেস লোকসভা প্রার্থী। বিষয়টি নিয়ে খোঁচা বিজেপি প্রার্থীর।ইদের সকালে বাঁকুড়া শহরের মাচানতলা জামা মসজিদ সংলগ্ন বঙ্গ বিদ্যালয়ের মাঠে এক বিরল রাজনৈতিক সৌজন্যতার স্বাক্ষী থাকল। জনসংযোগ আর ইদের শুভেচ্ছা বিনিময়ে আসা বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্রের সিপিআইএম প্রার্থী, আইনজীবি নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত ও ওই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী, তালডাংরার বিধায়ক অরুপ চক্রবর্ত্তী প্রায় একই সময়ে ওই জায়গায় হাজির হন। দু'জন দু'জনকে দেখে হাসিমুখে এগিয়ে গিয়ে করমর্দনের পাশাপাশি ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তাঁরা।
পরে এবিষয়ে সিপিআইএম প্রার্থী আইনজীবি নীলাঞ্জন দাশগুপ্ত বলেন, ‘রাজনৈতিক সৌজন্যতা থাকবেই। রাজনীতিটা অন্য জায়গায় পৌঁছে যাক আমরা চাইনা।’ তাঁর কথায়, উনিও এসেছেন, আমিও এসেছি। দেখা হল, সৌজন্য বিনিময় হল। এই সংস্কৃতিই তো এরাজ্যে চিরকাল ছিল। এটাই থাকা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন বলে জানান। অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী অরুপ চক্রবর্ত্তী বলেন, ‘ওঁরাও ইণ্ডিয়া জোটে আছে, নীলাঞ্জন পরিচিত আইনজীবি।’ দেখা হতেই খোঁজ খবর নিলেন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করলেন বলে তিনি জানান।
তবে বিষয়টি নিয়ে খোঁচা দিতে ছাড়েননি স্থানীয় লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী। বিজেপি প্রার্থী ডাঃ সুভাষ সরকারের দাবি, ‘পুরো বিষয়টি সংখ্যালঘু তোষণ ও নাটক’।’ তাঁর দাবি, একে অপরকে 'অক্সিজেন' দেওয়ার কাজ করছে বলে তিনি দাবি করেন। তাঁর কথায়, অত্যন্ত খারাপ অবস্থা দুটো দলেরই। সেই জন্যে একে অপরকে অক্সিজেন দেওয়ার চেষ্টা করছেন। এতে যেমন সংখ্যালঘুরা ধরে ফেলছেন, তেমনই সংখ্যাগুরু যাঁরা আছেন, তাঁদেরও ভাবার আছে, এদের ভূমিকা কী রকম?
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়া লোকসভা কেন্দ্র থেকে এবারও বিজেপির তরফে প্রার্থী করা হয় গতবারের জয়ী সাংসদ ডঃ সুভাষ সরকারকে। গতবার এই কেন্দ্র থেকে সুভাষ সরকারের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা প্রয়াত সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তবে তাঁকে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজারের কাছাকাছি ভোটে পরাজিত করেছিলেন বাঁকুড়ার বিজেপি প্রার্থী। এবার এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের তরফে প্রার্থী করা হয়েছে অরূপ চক্রবর্তীকে। পেশায় আইনজীবী অরূপ চক্রবর্তী তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে যুক্ত। ২০২৩ সালে তিনি জেলা সভাপতি হয়েছিলেন।