এই সময়, নয়াদিল্লি: মতুয়া সমাজের প্রথম মহিলা হিসেবে এদিন রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতাবালা ঠাকুর। শপথ নিতে তিনি দিল্লিতে যাওয়ার আগে ঠাকুরনগরের ঠাকুরবাড়িতে তালা দেওয়াকে ঘিরে বিতর্ক চলছিলই। সেই ঘটনায় বনগাঁ কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের ভূমিকায় প্রবল অস্বস্তিতে পড়ে বিজেপি। বুধবার রাজ্যসভায় মমতাবালার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান ঘিরেও নতুন করে বিতর্ক তৈরি হলো।সূত্রের খবর, এ দিন রাজ্যসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে শপথগ্রহণের সময়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি মমতাবালা নিজেদের ইষ্টদেবতা হরিচাঁদ ঠাকুরের নাম নিয়ে শপথবাক্য পাঠ করতে চাইলে আপত্তি জানান রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়৷ হরিচাঁদ ঠাকুরের নামে প্রথমে শপথ নিলেও তার মান্যতা না মেলায় দ্বিতীয়বার শপথ নিতে হয় মমতাবালাকে।
দ্বিতীয়বার তিনি ঈশ্বরের নামে শপথ গ্রহণ করেন। যদিও সূত্রের খবর, বিজেপির এক সাংসদ শ্রীরামের নামে শপথ নিলেও তার বৈধতা দেন চেয়ারম্যান। এই অভিযোগ ঘিরেই শুরু হয় বিতর্ক। শপথ গ্রহণের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মমতাবালা।
বলেন, ‘মতুয়া সমাজের জন্য সবচেয়ে কলঙ্কের দিন আজ। এর আগে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর, শান্তনু ঠাকুর এমনকী আমি নিজেও লোকসভায় হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের নামে শপথ গ্রহণ করেছি। কিন্তু সেই সময়ে কোনও বাধা আসেনি।’ তাঁর সংযোজন, ‘সারা দেশে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন। আজ যে ঘটনা ঘটল, তার প্রভাব বিজেপি টের পাবে ভোটের ফলাফলে। ভোটের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী ঠাকুরবাড়িতে গিয়েছিলেন বড়মাকে প্রণাম করতে, হরিচাঁদ-গুরুচাঁদের নাম নিতে। অথচ আজ সংসদে শপথ নিতে গিয়ে আমাকে তাঁদের নাম নিতে দেওয়া হলো না।’
এ দিন রাজ্যসভায় মোট ১০ জন সাংসদ শপথ নেন। সাগরিকা ঘোষও এ দিন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ হিসাবে শপথ নিয়েছেন। সূত্রের খবর, এ দিন শপথ গ্রহণের পর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা দেশের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলে গত কয়েকদিন ধরে ঠাকুরবাড়িকে ঘিরে যে গোলমাল চলছে, সে বিষয়ে অবগত করেছেন মমতাবালা।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান পুরো বিষয়টি শুনে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। যদিও এ দিন সংসদের ঘটনাটিকে যে আগামী দিনে তৃণমূল প্রচারের হাতিয়ার করবে তার ইঙ্গিত মিলেছে। এ দিন বনগাঁর পার্টি অফিসে সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই ঘটনার নিন্দা করেন বনগাঁর তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস।
তিনি বলেন, ‘মতুয়াদের অপমান করা হয়েছে। এই দিনটা মতুয়াদের কাছে কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এর থেকে প্রমাণ হয়ে গেল বিজেপি মতুয়াদের অচ্ছুৎ মনে করে। ভোটে এর জবাব দেবেন মতুয়া ভোটাররা।’