রেকর্ড ভেঙে বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে দর্শনার্থীদের সংখ্য়া ক্রমে বেড়েই চলেছে। এবার বড় সিদ্ধান্ত নিলেন পুলিশ কমিশনারেট। এবার থেকে কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের গর্ভগৃহের সামনে মোতায়েন পুলিশকর্মীদের পোশাক হবে পুরোহিতদের মতো। গর্ভগৃহের সামনে মোতায়েন পুলিশদের গলায় থাকবে রুদ্রাক্ষ, কপালে তিলক ও গেরুয়া রঙের পোশাক করবেন তাঁরা।চৈত্র মাস জুড়েই বাবা বিশ্বনাথের দরবারে ভিড় জমান ভক্তরা। গোটা বৈশাখ মাসজুড়েই শিব ভক্তদের ভিড় উপচে পড়ে। ভিড়ের মাত্রা দিনদিনই ঊর্ধ্বমুখী। এই আবহে মন্দির প্রাঙ্গনে পুলিশকর্মীদের সঙ্গে দর্শনার্থীদের বাদানুবাদের মতো ঘটনা সামনে এসেছে। পুলিশের নির্দেশ অমান্য করে কখনও জোর করে ঠেলেঠুলে মন্দিরে প্রবেশে ঘটনা সামনে আসছে। ভক্তদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম পুলিশ। এমন পরিস্থিতিতে ভিড় সামলাতে অভিনব পন্থা অবলম্বন করা হচ্ছে। পুরোহিতের কথা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলেন ভক্তরা। তাঁদের সঙ্গে ভক্তদের বাগবিতণ্ডায় জড়ানোর সম্ভাবনা কম। আর তাই পুরোহিতের ছদ্মবেশেই পুলিশ কর্মীদের মোতায়েন করার ভাবনাচিন্তা।
পুলিশ কমিশনার জানিয়েছেন, সাধারণত ভক্তরা পুরোহিতের কথা অমান্য করতে পারেন না। তাই পুরোহিতের ছদ্মবেশে এবার থেকে মোতায়েন থাকবেন পুলিশরা, যাতে শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে তাঁদের নিয়ম মেনে ভক্তরা মন্দিরে প্রবেশ করেন। তিনি আরও জানিয়েছেন, সব পুলিশকর্মীরাই যে পুরোহিতদের মতো পোশাক পরবেন তা নয়। কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাঁদের সাধারণ ইউনিফর্মেই মোতায়েন থাকবেন মন্দিরে। অনেক মন্দিরে ভিড় সামাল দেওয়ার জন্য ভক্তদের গায়ে হাত দিয়ে সরিয়ে দিতে হয় পুলিশ কর্মীদের। এতে অনেক সময় ভক্তরা ক্ষুন্নও হন। গায়ে হাত দেওয়া পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে ভক্তদের বাগবিতণ্ডায় জড়ানোও নতুন নয়। নয়া এই কৌশল অবলম্বনে ভক্তদের গায়ে হাত দিয়ে সরানোর প্রয়োজন পড়বে না বলে জানাচ্ছেন কমিশনার।
কমিশনার মোহিত আগরওয়ালের কথায়, মন্দিরে যে সময় ভিআইপিরা প্রবেশ করবেন সেই সময় বিশৃঙ্খলা এড়াতে দড়ি দিয়ে আলাদা একটি জায়গা গোল করে ঘিরে দেওয়া হবে, যাতে ধাক্কাধাক্কি নিয়ে না ভক্তরা শৃঙ্খলাবদ্ধ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন। মন্দিরের অন্দরে ডিউটির জন্য পুলিশ আধিকারিকদের আলাদা করে তিন দিনের প্রশিক্ষণও হবে। কারণ থানায় ডিউটির সঙ্গে মন্দিরে ডিউটির আকাশ-পাতাল পার্থক্য রয়েছে।
কী কী প্রশিক্ষণ দেওয়া পুলিশ কর্মীদের?
মন্দিরে যে পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করা হবে তাঁরা যাতে মৃদুভাষী হওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য ভাষাতেও কিছুটা হলেও কথা বলতে পারেন সেই বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিভিন্ন ভাষাভাষির ভক্তদের সঙ্গে যাতে বোঝাপড়ার মতো কথাবার্তা চালিয়ে যেতে পারেন তাঁরা সেই ভাবেই মিলবে ট্রেনিং। এজন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্দিরে একটি হেল্প ডেস্কেরও ব্যবস্থা কর হবে। প্রশিক্ষণের সময় পুলিশ কর্মীদের কাশীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলি সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেওয়া হবে।