• তীব্র গরমেও ক্যাবে চলবে না এসি! 'নো এসি' সিদ্ধান্ত নিয়ে মুখ খুললেন ওলা-উবের চালকরা
    এই সময় | ১১ এপ্রিল ২০২৪
  • মাথার উপর গনগন করে সূর্যের চোখরাঙানি। চৈত্র শেষের আগেই সূর্য দেবের 'তীক্ষ্ণ নজরে' নাজেহাল অবস্থা। এরই মাঝে কোথাও যাওয়ার থাকলে তো মাথার ঘাম পায়ে পড়ে যাচ্ছে! বাসে-ট্রামে-অটোয় অফিস দৌড়তে গরমে নাকানিচোবানিতে হাল খারাপ! এমন আবহে এসি ক্যাব বুক করে অন্তত যাওয়ার পথটুক একটু নিশ্চিন্তে যেতে চাইছেন যাত্রীরা। এসি ক্যাব বুকও করছেন। তবে গরম থেকে রেহাই মিলছে কই! বরং ঘাম ঝড়ছে টপটপ করে!গরম বাড়ছে সেই সঙ্গে পাল্টা দিয়ে বাড়ছে অভিযোগ। ব্যস্ত সময়ে বাড়তি সারচার্জের টাকা গুনেও যাত্রীরা এসির হাওয়া পাচ্ছেন না। গরমে ঘেমে নেওয়া একশা হয়েও বচসায় জড়িয়েও লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না। এসি চালানোর জন্য চালকদের সঙ্গে বিবাদেও জড়াচ্ছেন যাত্রীরা, কিন্তু চালকরা নিজেদের দাবিতে অনড় 'এসি চালাব না'। বাধ্য হয়ে অনেক সময় এসির হাওয়া খেতে গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকাও। তেলঙ্গনায় অ্যাপ ক্যাব চালকদের সঙ্গে এখন এসি চালানো নিয়ে বাদানুবাদ যেন নিত্য নৈমত্তিক হয়ে গিয়েছে। তেলঙ্গানায় ওলা-উবর চালকরা শুরু করেছেন 'No AC' ক্যাম্পেন। সওয়ারির কোনও অনুরোধেই গলছে না বরফ! কয়েকজনই নয়, প্রায় সব ক্যাব চালকই এককাট্টা হয়েছেন এই 'নো এসি' ক্য়াম্পেনে। এমনকী গাড়িতেও কখনও কখনও 'নো এসি' পোস্টারও সাঁটিয়ে রাখছেন তাঁরা।

    কী কারণে এসি বন্ধ করে রাখা হচ্ছে ক্যাবে?

    ক্যাব চালকদের অভিযোগ, এসি চালিয়ে গাড়ি চালালে মালিক, ক্যাব সংস্থাকে টাকা দেওয়ার পর চালকের পকেটে আর কিছু থাকছে না। সেই কারণেই এসি বন্ধ রাখছেন তাঁরা। গাড়িতে এসি চালালে ইঞ্জিনের উপর চাপ পড়ে। সেক্ষেত্রে জ্বালানির খরচ বেশি হয়। সব মিলিয়ে তাঁদের রোজগার কমছে তাঁদের। হাতে প্রায় লাভের কড়ি কিছুই থাকছে না বলে অভিযোগ।

    এই বিষয়ে তেলঙ্গনা গিগ এবং প্ল্যাটফর্ম ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন (টিজিপিডব্লিউইউ) বলছে চালকরা প্রতি কিলোমিটার মাত্র ১০ থেকে ১২টাকা আয় করেন। এসি চালালে খরচই হয়ে যায় ১৬ থেকে ১৮ টাকা। দীর্ঘদিন ধরেই সংস্থাকে বিষয়টি জানিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ তাঁদের। আর তাই প্রতিবাদে উবর, ওলা, র‌্যাপিডোর মতো প্রধান রাইড-হেলিং প্ল্যাটফর্মের চালকরা নো এসি ক্যাম্পেইন শুরু করেছেন।

    অভিযোগ, অনেক দিন ধরেই বিষয়টি সংস্থার নজরে এনে সুরাহার আবেদন করেছেন চালক। তবে সুরাহা হয়নি। চালকদের দাবি, এই আবহে গাড়ির এসি বন্ধ করে প্রতিবাদ না দেখানো ছাড়া আর কোনও রাস্তা খোলা ছিল না তাঁদের কাছে। চালকরা জানাচ্ছেন, কোনও যাত্রী এসি চালানোর জন্য অনুরোধ করতে তাঁকে বাড়তি টাকা গুণতে হবে।

    TGPWU (Telangana Gig and Platform Workers Union (TGPWU) & Indian Federation Of App Based Transport Workers (IFAT) এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ সালাহউদ্দিন টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'বর্তমান পেমেন্ট সিস্টেমে এসি চালু রেখে আমরা আমাদের ক্যাব চালানোর খরচ চালাতে পারছি না। তাই এই সপ্তাহ থেকেই নো এসি ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। যাত্রীদের যদি এসির প্রয়োজন হয় তাঁদেরকেই বাড়তি টাকা দেওয়ার কথা জানাচ্ছি আমরা। আশা করি অ্যাপভিত্তিক ক্যাব চালকরা তাঁদের প্রতিবাদের মাধ্যমে সরকার ও কোম্পানিকে নিজেদের সমস্য়াগুলি বোঝাতে সক্ষম হবেন।'

    সোশ্য়াল মিডিয়া এই নিয়ে ভূরি ভূরি পোস্টও সামনে এসেছে। চালকদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন যাত্রীরা। তাঁদের একটাই প্রশ্ন, ক্য়াব সংস্থা ও চালকদের অসন্তোষের গেরোয় তাঁরা কেন কষ্ট ভোগ করবেন? যাত্রীদের বক্তব্য, যে টাকায় এতদিন এসি গাড়িতে চড়া যেত, সেই টাকাতেই কেন নন এসিতে চড়বেন তাঁরা। এসি না চালালে ভাড়া সেক্ষেত্রে কিছুটা কমানো উচিত। সমস্যা এড়াতে অ্যাপ-ক্যাব সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণে সরকারি নির্দেশিকা বলবৎ করার দাবি উঠেছে।
  • Link to this news (এই সময়)