• BJP West Bengal : গোটা রাজ্যেই বিজেপির প্রচারমঞ্চে ‘সন্দেশখালি’
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • মণিপুস্পক সেনগুপ্ত

    এই সময়: লোকসভা ভোটের আগে বাংলা জুড়ে সন্দেশখালির ঝড় তুলতে চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গত মাসে বারাসতে দলীয় সভা থেকে এমনই বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। সন্দেশখালি আন্দোলনের ঝড় রাজ্যের আর কোথাও উঠুক, বা না উঠুক, সন্দেশখালির আন্দোলনকারীদের নিয়ে ভোট-প্রচারে ঝড় তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্ব।দলীয় স্তরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সন্দেশখালিতে যাঁরা তৃণমূলের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে সবার নজর কেড়েছেন, তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে ভোট-প্রচারে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে গিয়ে আন্দোলনকারীরা সাধারণ মানুষকে বলবেন, কীভাবে সন্দেশখালিতে অত্যাচার চালিয়েছেন রাজ্যের শাসক দলের নেতারা।

    বুধবার জলপাইগুড়িতে বিজেপি প্রার্থী জয়ন্ত রায়ের সমর্থনে দু’টি সভা করেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। দু’টি সভাতেই হাজির ছিলেন সন্দেশখালির ন’জন আন্দোলনকারী। তাঁদের মধ্যে একজন সভায় ভাষণও দেন। সূত্রের খবর, আগামী দিনে নরেন্দ্র মোদীর সভামঞ্চেও দেখা যেতে পারে সন্দেশখালির মহিলাদের।

    বিজেপি চাইছে, সন্দেশখালি ইস্যুকে জিইয়ে রেখে ভোট-বাক্সে সুফল পেতে। যে কারণে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা এ রাজ্যে ভোট-প্রচারে এসে সন্দেশখালি প্রসঙ্গে তৃণমূলকে বিঁধছেন নিয়ম করে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তৃণমূলের মহিলা ভোট-ব্যাঙ্কে থাবা বসাতেই সন্দেশখালিতে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগগুলি আরও সংগঠিতভাবে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রচার করতে চাইছে গেরুয়া শিবির।

    বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি টিকিট দিয়েছে সন্দেশখালির আন্দোলনকারী রেখা পাত্রকে। সূত্রের খবর, তাঁকেও বাছাই করা কয়েকটি লোকসভা কেন্দ্রে প্রচারে নিয়ে যাওয়ার ভাবনাচিন্তা রয়েছে বিজেপির। শুধু সন্দেশখালির আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন লোকসভা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াই নয়, সন্দেশখালির ঘটনাগুলি নিয়ে বেশ কয়েকটি ভিডিয়ো বার্তাও তৈরি করা হয়েছে বিজেপির তরফে।

    সেগুলিও বিভিন্ন নির্বাচনী সভার ফাঁকে জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানোর পরিকল্পনা করেছে পদ্ম-শিবির। দলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘এ বারের লোকসভা ভোটে সন্দেশখালি সব থেকে বড় ইস্যু। বিরোধী রাজনৈতিক দল হিসেবে সেটা আমরা স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করব। শুধু লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিলেই যে মহিলাদের উপর অত্যাচার করার অধিকার জন্মায় না, সেটা সন্দেশখালির আন্দোলনকারীরা দেখিয়ে দিয়েছেন।’

    বুধবার জলপাইগুড়িতে সন্দেশখালির আন্দোলনকারীদের বিজেপির সভায় হাজির থাকার প্রসঙ্গে দলের রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সন্দেশখালি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। রাজ্যের আরও অনেক জায়গায় শাহজাহান শেখের মতো তৃণমূল নেতারা অত্যাচার চালাচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত সন্দেশখালির মানুষ তাঁদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন।

    তাই আন্দোলনকারীরা যদি মনে করেন যে, তাঁরা অন্য জায়গায় গিয়ে সাধারণ মানুষকে সন্দেশখালির লড়াইয়ের কথা বলবেন, সে তো খুবই ভালো কথা। আমরাও সেটা চাই।’ যদিও তৃণমূল মুখপাত্র শান্তনু সেনের কটাক্ষ, ‘সন্দেশখালি সিনেমাটা বিজেপির প্রযোজনা ও পরিচালনায় হয়েছে। তাই ওরা নিজেদের দলীয় স্বার্থে সিনেমাটি বিভিন্ন জায়গায় দেখানোর কৌশল নিয়েছে। ২০২১-এও একটি ভোজপুরী সিনেমার হিংস্র দৃশ্যকে বাংলার ঘটনা বলে বিজেপি চালানোর চেষ্টা করেছিল। তখনও বাংলার মানুষ ওদের বিশ্বাস করেনি, এবারও করবে না।’

    সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের কথায়, ‘সন্দেশখালির আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়ানো আর তাঁদের ভোটের রাজনীতিতে ব্যবহার করা এক বিষয় নয়। এটা সঙ্কীর্ণ রাজনীতি। বিজেপি নেতাদের বলব, হাথরস, উন্নাওয়ের মহিলাদের নিয়েও সভা করুন।’
  • Link to this news (এই সময়)