• Trinamool Congress : টার্গেট উত্তরবঙ্গ, আজই সভা মমতা-অভিষেকের
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • মণিপুস্পক সেনগুপ্ত

    এই সময়, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: প্রথম দু’দফায় ভোট শুধুই উত্তরবঙ্গে। তাই সেখানে ঘাঁটি গাড়ছেন সব রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা-নেত্রী। লোকসভা ভোটের প্রচারে বৃহস্পতিবারই উত্তরবঙ্গে পৌঁছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, শুক্রবার কোচবিহার এবং আলিপুরদুয়ারে জোড়া সভা রয়েছে তাঁর।প্রথমটি কোচবিহার লোকসভার অন্তর্গত দিনহাটার সংহতি ময়দানে। দ্বিতীয় সভাটি হবে আলিপুরদুয়ার লোকসভা কেন্দ্রের কালচিনিতে। এই দুই কেন্দ্রেই ভোট আগামী ১৯ এপ্রিল। তার পরের দফায় ২৬ এপ্রিল ভোট রয়েছে বালুরঘাট, রায়গঞ্জ এবং দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে। ওই পর্বে উত্তরবঙ্গে আরও সাতটি সভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রীর।

    তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও আজ জলপাইগুড়ি কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের সমর্থনে ধূপগুড়িতে জনসভা করবেন। সেখান থেকে ঝড় বিধ্বস্ত ময়নাগুড়ির বার্নিশ এলাকা পরিদর্শনে যাওয়ার কথা তাঁর। অভিষেকের সঙ্গে সেখানে যাবেন তৃণমূলের দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

    ওই প্রতিনিধি দলে তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনও থাকবেন। এদিকে, আগামী ১৬ এপ্রিল উত্তরবঙ্গে জোড়া সভা করতে ফের রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। তাঁর সভা করার কথা বালুরঘাট এবং রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে। উত্তরবঙ্গে ফের ভোট প্রচারে আসতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও।

    বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বুধবারই জলপাইগুড়িতে জোড়া সভা করেছেন। আগামী এক সপ্তাহে তাঁরও উত্তরবঙ্গে একাধিক সভার পরিকল্পনা রয়েছে। অভিযোগ, এদিন সন্ধ্যায় উত্তরবঙ্গের চালসা থেকে হোটেলে যাওয়ার পথে মুখ্যমন্ত্রীকে বিক্ষোভ ও কালো পতাকা দেখান বিজেপির স্থানীয় কিছু কর্মী।

    রাজনৈতিক মহলের ধারণা, আজকের জোড়া সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে আক্রমণ করতে পারেন বিজেপিকে। মমতাকে বিক্ষোভ দেখানোর প্রসঙ্গে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘এটা অত্যন্ত কুরুচিকর ব্যাপার। বিজেপি নেতারা রাস্তায় বেরলেও কিন্তু সাধারণ মানুষ রাজ্যের বকেয়া টাকা ফেরত চাইতে পারে তাঁদের কাছে। তাই বিজেপি নেতাদের বলব, এমন কিছু করবেন না, যেটা আপনাদের জন্যই জন্যই বুমেরাং হয়ে যায়।’

    তৃণমূল সূত্রে খবর, শুক্রবার কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে সভার পর শনিবার জলপাইগুড়িতে আরও একটি নির্বাচনী সভা করতে পারেন মমতা। সেদিন রাতেই তাঁর কলকাতায় ফিরে আসার কথা। বাংলা নববর্ষের দিনটি মুখ্যমন্ত্রী কলকাতায় কাটিয়ে পরের দিনই আবার ভোট-প্রচার করতে উত্তরবঙ্গে উড়ে যাবেন বলে জানা গিয়েছে।

    এর আগে ৪ থেকে ৬ এপ্রিল উত্তরবঙ্গে প্রতিদিন দু’টি করে জনসভা করেছেন তৃণমূলনেত্রী। গত ৪ এপ্রিল কোচবিহার শুধু মুখ্যমন্ত্রীই নন, সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৬ এপ্রিল ফের একবার মোদী-মমতা দ্বৈরথের সাক্ষী থাকতে চলেছে উত্তরবঙ্গ। ওইদিন বালুরঘাটে ও রায়গঞ্জে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে সভা করবেন প্রধানমন্ত্রী।

    একইদিনে শিলিগুড়িতে রোড-শো করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সম্প্রতি জলপাইগুড়িতে বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মঞ্চে উঠে তিনি জলপাইগুড়ির সাম্প্রতিক ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতি সমবেদনাও জানিয়েছিলেন। যদিও তৃণমূল প্রশ্ন, জলপাইগুড়ি গিয়েও প্রধানমন্ত্রী ঝড় বিধ্বস্ত এলাকায় যাওয়ার ফুরসত পেলেন না?

    অভিষেক ছাড়াও রাজ্যের শাসক দলের আরও অনেকেই এ প্রশ্নে বিঁধেছেন মোদীকে। বিজেপির উপর আরও চাপ বাড়াতে অভিষেকের নেতৃত্বে তৃণমূলের প্রতিনিধি দল আজ, শুক্রবারই যাচ্ছে জলপাইগুড়ির ঝড়বিধস্ত এলাকা পরিদর্শনে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য ৩১ মার্চ ঝড়ের দিন রাতেই জলপাইগুড়ি পৌঁছে গিয়েছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে।

    তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার কথায়, ‘আমরা কী ভাবে ঝড় বিধ্বস্ত পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াচ্ছি, সেটা দিল্লিতে বসে প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন। ১৬ তারিখ উনি আবার উত্তরবঙ্গে আসছেন। দেখা যাক, এ বার উনি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলিতে যাওয়ার সময় বার করতে পারেন কি না।’
  • Link to this news (এই সময়)