• একদা সর্বক্ষণের সঙ্গী, চরম অযত্নে পড়ে বরকত সাহেবের সেই মার্সিডিজ
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • 'অযান্ত্রিক', আসলে যন্ত্রের থেকেও বড় সেখানে যন্ত্র মালিক-ব্যবহারকারী। আবেগ সেখানে ষোলকলা! 'Mercedes' লেখা জায়গাটা হালকা হলুদ, ধুলো পুরু হয়ে জাঁকিয়ে বসেছে। কিন্তু, ধুলো পরিষ্কার কাপড় দিয়ে ঝেড়ে ফেলা সম্ভব হলেও পুরনো চারচাকার থেকে স্মৃতিগুলো তুলে কোনও গ্যারাজে বন্ধ রাখা কি সম্ভব!আসলে একসময় এই গাড়িতে করেই এলাকায় ভোট প্রচারে যেতেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবিএ গণি খান চৌধুরী। তিনি না থেকেও মালদার রাজনীতিজুড়ে রয়েছেন। লোকসভা ভোট যখন দোরগোড়ায় সেই সময় স্মৃতির পাতা উলটে দেখছেন অনেকেই। একসময় এই গাড়ি করে ভোট প্রচারে বেরিয়ে পড়তেন গণি খান। দূর থেকে এই গাড়ি দেখলেই রাস্তার দুই পাশে মানুষ দাঁড়িয়ে পড়ত। সকলের কাছেই চেনা ছিল এই মার্সিডিজ। বর্তমানে অবহেলায় অযত্নে তা পড়ে রয়েছে কোতোয়ালি ভবনে। এই গাড়িটির সঙ্গেই বরকত সাহেবের ভোটপ্রচারের নানা স্মৃতি জড়িয়ে রয়েছে।

    ১৯৮০ সাল থেকে পর থেকে টানা আটবারের সাংসদ ছিলেন প্রয়াত কংগ্রেস নেতা গণি খান চৌধুরী। রাজনৈতিক বিভিন্ন কর্মসূচি অংশগ্রহণ করতে একমাত্র এই গাড়ি ব্যবহার করতেন তিনি, শোনা যায় এমনটাই। ২০০৬ সালে তাঁর মৃত্যু হয়। মাঝে ১৬ বছর পার হয়ে গেলেও তাঁর মার্সিডিজ গাড়িটি নিজস্ব ভবন কোতোয়ালিতে এখনও রয়েছে। কংগ্রেস কর্মী নেতৃত্বরা যখন কোতোয়ালিতে আসেন সেই সময় বরকত সাহেবের এই গাড়িটি দেখে যান তাঁরা। মাঝেমধ্যে গাড়িটি পরিষ্কার হয় বটে। তবে তা নিয়মিত নয়।

    মালদায় কি গনি খান ম্যাজিক আজও অব্যাহত?

    এই প্রসঙ্গে কংগ্রেস কর্মী কুণাল কান্তি চৌধুরী বলেন, 'গাড়িটা আমাদের মালদার ঐতিহ্য। মানুষ সবসময় বরকতদাকে চেয়েছেন। বাবা-কাকার মুখ থেকে শুনেছি, গাড়ি থেকে নেমে তিনি সাধারণ মানুষের কথা শুনতেন। এই গাড়িটা আর চলে না। তবে তা আমাদের কাছে সম্পদ।'

    শোনা যায়, তিনি যখন এই গাড়ি করে যেতেন তাঁকে দেখার জন্য রাস্তার দুই দিকে লোক দাঁড়িয়ে পড়ত। এখনও গাড়িটি কোতোয়ালি ভবনের রয়েছে। দলীয় কর্মীরা তা রেখে স্মৃতি রোমন্থন করেন। একসময় গণি খান চৌধুরী যখন এই গাড়িটিতে করে যেতেন তাঁকে দেখার জন্য রাস্তার দুই ধারে লোক জমে যেত, এমনটাই জানাচ্ছেন এলাকার প্রবীণরা। কেউ কেউ আবার গাড়িটিকে প্রণামও করেন। তাঁদের কথায়, যতই নতুন মডেল আসুক, এই গাড়ির মূল্য টাকায় মাপা যাবে না।
  • Link to this news (এই সময়)