• মতুয়াদের প্রতিবাদ মিছিল, পুড়ল ধনখড়ের কুশপুতুল
    এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়, বনগাঁ: হরিচাঁদ ঠাকুরের নামে শপথ পাঠে তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরকে বাধা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে। মতুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের নিন্দায় সরব হয়েছে তৃণমূলও। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মতুয়াদের নিয়ে বনগাঁ এবং বাগদায় প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হন বনগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস।পোড়ানো হয় শান্তনু ঠাকুর এবং জগদীপ ধনখড়ের কুশপুতুল। মতুয়া সমাজের প্রথম মহিলা হিসেবে বুধবার রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়েছেন মমতাবালা। শপথের কয়েক ঘণ্টা আগে জোর করে তালা ভেঙে প্রয়াত বড় মা বীণাপাণি ঠাকুরের ঘর দখল নিয়েছিলেন শান্তনু ঠাকুর এবং তাঁর দলবল। শপথ নিতে দিল্লিতে যাওযার আগে তালাবন্ধ বড়মার ঘরের বাইরে থেকে প্রণাম করে বের হতে হয়েছিল তাঁকে।

    মেলা চলাকালীন শান্তনুর এই কার্যকলাপ নিয়ে অধিকাংশ মতুয়ারাই ক্ষুব্ধ। এর আগেও অযোধ্যার রামমন্দির শিলান্যাসের অনুষ্ঠানে ঠাকুরবাড়ির জল এবং মাটি নিয়ে গেলেও তা গ্রহণ না করায় মতুয়ারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। এ বার হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে শপথপাঠ করতে গিয়ে মমতাবালা বাধার মুখে পড়ায় প্রতিবাদে সরব হয়েছেন মতুয়ারা।

    বিষয়টিকে মতুয়াদের অপমান হিসেবে তুলে ধরে লোকসভা ভোটে বিজেপির বিরুদ্ধে ইস্যু করতে তৎপর হয়েছে তৃণমূল। এ দিন মতুয়াদের নিয়ে বনগাঁর ত্রিকোণ পার্ক থেকে প্রতিবাদ মিছিল করেন তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস। ত্রিকোণ পার্ক থেকে রায় সেতু, মতিগঞ্জ, রাখালদাস সেতু, বাটার মোড় হয়ে মিছিল শেষ হয় বনগাঁর ১ নম্বর রেলগেটে।

    এ দিনের প্রতিবাদ মিছিলে কয়েকশো মতুয়া ভক্ত-সহ পাগল, গোঁসাই, দলপতিরাও ছিলেন। মতুয়া ধর্মের লাল নিশান নিয়ে ডঙ্কা, কাঁসি বাজিয়ে প্রতিবাদ জানান তাঁরা। মিছিল গিয়ে শেষ হয় বনগাঁর ১ নম্বর রেলগেট এলাকায়। সেখানেই যশোহর রোডের উপরে ঘটনার প্রতিবাদে কেন্দ্রের বিদায়ী জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড়ের কুশপুতুল পোড়ানো হয়।

    বনগাঁয় প্রতিবাদ শেষ করে বাগদার হেলেঞ্চায় চলে আসেন বিশ্বজিৎ। সেখানে আগে থেকেই প্রার্থীর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজন। এই ইস্যুতে হেলেঞ্চা থেকে প্রতিবাদ মিছিল করেন মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ। মমতাবালা বলেন, ‘এর আগে আমার স্বামী কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর, আমি এবং শান্তনু ঠাকুরও লোকসভায় হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে শপথ নিয়েছিলাম। আমার ঈশ্বর তো হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ ঠাকুর। কিন্তু সেই সময় বাধা আসেনি। কিন্তু এ বার আমাকে বাধা দেওয়া হয়েছে। আমাদের ঠাকুরকে অপমান করা হয়েছে।’

    বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘জগদীপ ধনখড় এ রাজ্যে রাজ্যপাল থাকাকালীন গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মতুয়াদের অপমান করেছেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান।’

    পাল্টা জবাবে শান্তনু বলেন, ‘দেশের সংবিধান মেনে শপথ নিতে হয়। যিনি শপথ নিয়েছেন তিনি দেশের সংবিধানের বাইরে নন। আমি শপথ নেওয়ার সময় আগে জয় হরিচাঁদ, জয় গুরুচাঁদ বলেছিলাম। এটা বলার পর আমি ঈশ্বরের নামে শপথ নিয়ে বলছি বলে শপথ পাঠ করেছিলাম। সাংসদ হতে গেলে পেটে কালির আঁচড় থাকা দরকার। সেটা মমতাবালা ঠাকুরের নেই।’
  • Link to this news (এই সময়)