Rajnath Singh : 'বিয়ের পর মাঝরাতে গ্রেফতার, মায়ের মৃত্যুতেও মুক্তি মেলেনি!' জরুরি অবস্থার স্মৃতিচারণ রাজনাথের
এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৪
তিনি বরাবরই দৃঢ়চেতা। চলেন গাম্ভীর্য নিয়ে। সেই রাজনাথ সিংকেই দেখা গেল আবেগপ্রবণ হয়ে পড়তে। মায়ের কথা বলতে গিয়ে গলা ধরে এল প্রতিরক্ষামন্ত্রীর। দেশে তখন জরুরি অবস্থা চলছে। সে সময়ে রাজনাথ সিংকে বন্দি থাকতে হয়েছে জেলে। মায়ের মৃত্যুর পরও প্যারোলে মুক্তি হয়নি তাঁর। একটি সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সে সময়ের জেলযাপনের বর্ণনা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী।দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর জারি করা জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন রাজনাথ সিং। অন্ধকারময় সেই দিনগুলি কেমন ছিল? তা নিয়ে মুখ খুললেন তিনি। ‘একনায়কতন্ত্র’ ও ‘স্বৈরাচারী শাসন’ বলে বর্ণনা করলেন ইন্দিরা গান্ধীর সময়কালকে। সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং জানান, ইন্দিরা গান্ধীর শাসনকালে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল। সেই সময়ে ইন্দিরা গান্ধীর সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। সময়টা ছিল ১৯৭৫ সালের জুন মাস। মির্জাপুর-সোনভদ্রের কনভেনার ছিলেন তিনি। মাত্র ২৪ বছর বয়সে তাঁকে জেলে যেতে হয়েছিল।
রাজনাথ সিং বলেন, 'জরুরি অবস্থার সময় আমি জেলে ছিলাম। আমরা বিক্ষোভ দেখাতাম। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করতাম। ইমার্জেন্সি কতটা ভয়ংকর এবং তা শাসকের স্বৈরাচারী মনোভাবকে তুলে ধরে, তা বোঝানোর প্রয়াস চলত। তখন আমার সদ্য বিয়ে হয়েছিল। সারা দিন কাজ করার পর আমি বাড়ি ফিরে জানতে এসেছিলাম পুলিশ এসেছিল। আমায় ওয়ারেন্ট দেওয়া হল। মাঝরাতে আমায় গ্রেফতার করে জেলে নিয়ে গেল। আমায় একা একটা কুঠুরিতে রাখা হয়েছিল। সেই সময় জেলে কাউকে একটা বই অবধি দেওয়া হত না। সারাদিনে খাবার বলতে ছিল, এক বাটি ডাল ও রুটি।' হেসে হেসেই রাজনাথ সিং বলেন, 'আমার হয়তো ভাল মেজাজ ছিল, তাই আমায় জেলে দীর্ঘদিন রাখা হয়েছিল। যখন আমায় মির্জাপুর জেল থেকে নৈনি সেন্ট্রাল জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন আমার মা বলেছিল, যাইই হোক না কেন, ক্ষমা চাইবে না। শুনে উপস্থিত পুলিশকর্মীরাও কেঁদে ফেলেছিলেন।'
মায়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রাজনাথ সিং জানান, ব্রেইন হেমারেজ হয়েছিল তাঁর মায়ের। জরুরি অবস্থার মেয়াদ বাড়ানোয় জেলে থাকতে হয়েছিল প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে। তিনি বলেন, 'মা ২৭ দিন ধরে হাসপাতালে ছিল। তারপর মৃত্যু হয়। আমি তারপরও জেল থেকে ছাড়া পাইনি, প্যারোল পাইনি। আমি জেলেই মুণ্ডন করেছিলাম। আমি যেতে না পারায়, আমার ভাই শেষকৃত্য করেছিল। ভাবুন এরপরও ওরা (কংগ্রেস) আমাদের বিরুদ্ধে স্বৈরাচার, একনায়কতন্ত্রের অভিযোগ আনে। নিজেদের দিকে তাকায় না।'