সমালোচনা করা যায়, ‘আন্টি’ প্রসঙ্গে তাঁর অন্তর উবাচ শুনে তীব্র হাসি ঠাট্টাও বোধহয় করা যায়! কিন্তু, তাঁকে এড়িয়ে যাওয়া! সম্ভব? বটে?দিলীপ 'বিইং' দিলীপ! বৃহস্পতিতে ভাতারের বাঘার ২ পঞ্চায়েতে তৃণমূল কর্মীদের আয়োজিত মঞ্চে এসে শরবত খেয়ে, তাঁদের সঙ্গে কোলাকুলি করে, হাতে মাইক নিয়ে কথা বলে হাসতে হাসতে মঞ্চ ছাড়া কি চাট্টিখানি কথা? কেউ বলছেন, পোড় খাওয়া রাজনীতিক, কেউ বলছেন ভোটের আগে ‘দিলীপ দাওয়াই’। কারণ যাই হোক না কেন, ফলাফল ‘লাইম লাইটে দিলীপ’।
চিনি খাই না। কিন্তু, ওদের ভালোবাসাটা খেয়েছিদিলীপ ঘোষ
সম্প্রতি সময়ে সবুজ পাঞ্জাবি পরে তাঁকে ভোট প্রচারে দেখা গিয়েছে। এবার হলুদ পাঞ্জাবিতে তৃণমূলের মঞ্চে হাজির হওয়া, এই দৃশ্যপটের 'অন্দর কাহিনি' ফাঁস করলেন দিলীপ ঘোষ। তিনি শুক্রবার বর্ধমানের কানাইনাটশাল এলাকার DVC মাঠে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সবুজ পাঞ্জাবি পরে তৃণমূলের মঞ্চে হাজির হওয়া প্রসঙ্গে বলেন, 'রংটা কারও কেনা নয়। আর পরব, উৎসব, দুর্গা পুজো হলে আমি যাব না? প্রণাম করব না? ওরা আমাকে ডেকেছে, আমি তো তাদের ধন্যবাদ দিই। আমাকে তোমরা মঞ্চে বসিয়েছ। আমাকে ওরাই ভাষণ দিতে বলেছে, ওরা শরবত খাইয়েছে, আমার সঙ্গে ওরা গলা মিলিয়েছে, কোলাকুলি করেছে, আমি বললাম শরবতটা বেশি মিষ্টি হচ্ছে তোমাদের ভালোবাসার জন্য, এমনটাই মনে হচ্ছে।'
তৃণমূলের দেওয়া শরবত খেতে কি বেশি মিষ্টি? এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, 'ভালোবাসা থাকলে মিষ্টি তো হবেই। কালকে ওঁরা ভালোবেসে খাইয়েছে। চিনি খাই না। কিন্তু, ওদের ভালোবাসাটা খেয়েছি।'
'মমতা ব্যানার্জী জিন্দাবাদ’ স্লোগান, হাসিমুখে উপস্থিত দিলীপ ঘোষ
বঙ্গ রাজনীতিকদের কথায়, 'রগড়ে দেওয়া'-র রাজনীতির বাইরেও দিলীপ ঘোষ ছিলেন। কিন্তু, লোকসভা নির্বাচন শুরুর পর থেকেই তাঁর ওষ্ঠ থেকে শুধুই 'লাভা বাক্য' নির্গমণ হচ্ছিল। ভেতরে ভেতরে অস্বস্তি ছিল দলের অন্দরেও। বর্ধমানের রাজা ভেবে ভুল মূর্তিতে মালা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে কটুবাক্য, মেসো উবাচ- সবমিলিয়ে একের পর এক 'হলুদ কার্ড'। আদৌ কি তিনি মাঠে ফিরে গোলপোস্টের কাছাকাছিও যেতে পারবেন? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল।
কিন্তু, বিষ্যুদের ‘পলিটিক্যাল হাইজাম্প’-এ দিলীপ ঘোষ জাত চিনিয়েছেন বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ। বঙ্গ রাজনৈতিক মহলের একাংশের কথায়, ‘মেদিনীপুর থেকে সোজা দিলীপ ঘোষকে টেনে এনে ফেলা হয়েছে বর্ধমান-দুর্গাপুর কেন্দ্রে। রাজ্য নেতা হিসেবে ফেসভ্যালু থাকলেও এই জায়গায় তাঁর ‘ঘরের ছেলে’ হওয়ার জায়গা এখনও তৈরি হয়নি। অন্যদিকে, কীর্তি আজাদ বিশ্বকাপ জয়ী টিমের সদস্য। তার উপর ঘরে, মাঠে, সভায় সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি। সুতরাং এলাম, বসলাম, জয় করলাম ‘সিন’ এই কেন্দ্রে হবে না!’