• নববর্ষ উদযাপনে সময়ের 'শৃঙ্খল' মানতে নারাজ সংস্কৃতিপ্রেমীরা...
    আজকাল | ১২ এপ্রিল ২০২৪
  • জয়ন্ত আচার্য, ঢাকা  বাঙালির বার মাসের তের পার্বণ। আর তার সূচনাই তো বর্ষবরণের মধ্যে দিয়ে। এবারের পহেলা বৈশাখের অন্যরকম আবহ। বাংলাদেশে জনগণ ইদের আনন্দের পরপরই আগামী রবিবার পহেলা বৈশাখ উদযাপনের আনন্দে মেতে উঠবে। ইদের ছুটির মধ্য পহেলা বৈশাখ উৎযাপনের চলছে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় পহেলা বৈশাখের সকল আনুষ্ঠান এদিন সন্ধের মধ্য শেষ করতে বলেছে। যদিও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতাও দেখা গিয়েছে কিছু ক্ষেত্রে। রাজধানী ঢাকায় বাংলা নববর্ষ বরণের সবচেয়ে বড় আয়োজন রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতী সঙ্গীতায়োজন এবারও থাকছে। রমনা বটমূলে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হবে অনুষ্ঠান। সকাল সোয়া ৬টায় যন্ত্রসংগীতের সুরে শুরু হবে বর্ষবরণ । থাকবে বাঁশির রাগালাপ। অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন ছায়ানটের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও আমন্ত্রিতসহ প্রায় দেড়শ শিল্পী। থাকবে গান, কবিতা পাঠ। সম্মেলক কণ্ঠে গাওয়া হবে কাজী নজরুল ইসলামের কারার ওই লৌহ কপাটসহ আরও অনেক গান। ছায়ানট কতৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা পয়লা বৈশাখে ছায়ানটের অনুষ্ঠান সফল করতে মাসব্যাপী প্রস্তুতি নিয়েছে। অপেক্ষা এখন সেই ভোরের।পহেলা বৈশাখে মূল আর্কষণ থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের মঙ্গল শোভাযাত্রা। শুক্রবার চারুকলায় গিয়ে দেখা গেল, শোভাযাত্রার শেষ মূহূর্তের কাজ শেষ করতে ব্যস্ত সকলে। তাঁরা ইদের ছুটিতেও বাড়িতে যাননি । এবারের শোভাযাত্রার চারটি শিল্প-কাঠামোর মাধ্যমে তুলে ধরা হবে দেশের অগ্রগতি। মঙ্গল শোভাযাত্রার স্লোগান ‘আমরা তিমির বিনাশী’। থাকবে হাতি, শিশু ও গন্ধগোকূলের অবয়ব। শিল্প-কাঠামোর মধ্যে আকারে সবচেয়ে বড় হয়েছে ২৩ ফুট দৈর্ঘ্যরে গন্ধগোকূল। বৈশাখী সকালে রাস্তায় যে হাতি বেরোবে, তার উচ্চতা ১২ ফুট। চার শিল্প-কাঠামোর সঙ্গে শোভাযাত্রায় আরও থাকবে রাজা-রানির মুখোশ, পাখির মুখোশ, লক্ষ্মীপেঁচা ও রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রতিচ্ছবিময় প্রতিকৃতি। পহেলা বৈশাখ সকাল ৯টায় চারুকলা থেকে বের হবে এই শোভাযাত্রা। বর্ষবরণের অনুষ্ঠান করবে শিল্পকলা একাডেমি। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে হাজার কণ্ঠে বর্ষবরণ শীর্ষক সংগীতাসরের আয়োজন করবে সুরের ধারা। এছাড়া বাংলা একাডেমি, জাতীয় জাদুঘর, ঋষিজ শিল্পগোষ্ঠীসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রতিষ্ঠানের পহেলা বৈশাখের আয়োজন থাকছে। এবারের পহেলা বৈশাখ প্রসঙ্গে সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ইদ এবং পহেলা বৈশাখের উৎসবে আনন্দে এবার একাকার হয়ে যাবে বাংলার মানুষ। ইদের আনন্দ ধর্মীয় উৎসব হলেও এর একটি সর্বজনীনতাও আছে। অন্যদিকে পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের মানুষের সবচেয়ে বড় অসাম্প্রাদিক এবং প্রাণের উৎসব। দুটো একসঙ্গে মিলে ধনী, গরিব, নারী-পুরুষ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধন সুদৃঢ় হবে। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে গ্রামে এবার মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী মেলাসহ নানা আয়োজন থাকবে। হালখাতা আর মিষ্টিমুখ চলবে বাজারে বাজারে। রাজধানী ঢাকার আয়োজনগুলিও থাকছে। তবে, পহেলা বৈশাখ, বাংলা বর্ষবরণের আয়োজনের সময় সংকোচন করে সরকারের দেওয়া সিদ্ধান্ত মানবে না বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। বাংলা বর্ষবরণ আয়োজন শেষ করতে সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হওয়ার পরপরই শুরু হবে উদীচীর অনুষ্ঠান। পহেলা বৈশাখের দিন সন্ধে ৬টা ০১ মিনিট থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শাহবাগ প্রজন্ম চত্বরে চলবে “বর্ষবরণ মানে না শৃঙ্খল” শিরোনামে উদীচীর সাংস্কৃতিক আয়োজন।
  • Link to this news (আজকাল)