বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণকাণ্ডে কলকাতা লিংক! লেনিন সরণির হোটেলে রাত্রিবাস, বড় আপডেট...
২৪ ঘন্টা | ১২ এপ্রিল ২০২৪
পিয়ালি মিত্র ও কমলাক্ষ ভট্টাচার্য: বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণকাণ্ডে কলকাতা লিংক! কাঁথি থেকে ধৃত বেঙ্গালুরু বিস্ফোরণকাণ্ডের ২ অভিযুক্ত প্রথমে আত্মগোপন করেছিলেন কলকাতায়। কলকাতার লেনিন সরণিতে 'হোটেল প্যারাডাইস' নামে একটি হোটেলে এক রাত থাকে তারা। এমনকি বন্দর এলাকাতেও গা ঢাকা দিয়েছিল ধৃত আবদুল মাতিন তাহা ও মুসাভির হুসেন সাজিব। তারপর দিঘায় যায় তারা। ১০ এপ্রিল দিঘা থেকে দুজনে যায় নিউ দিঘায়। নিউ দিঘার একটি হোটেলে ওঠে। নাম বদল করে ভুয়ো পরিচয়ে থাকছিল তারা। এরপরই দিঘা থেকে কাঁথিতে আসে অভিযুক্তরা। এই কাঁথি থেকেই অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে এনআইএ। ১৩ মার্চ কলকাতার লেলিন সরণির হোটেলে ওঠে অভিযুক্তরা। সেখানে একদিন ছিল। ১ মার্চ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ফলে অন্তত মাসখানেক এরাজ্য পরিচয় বদল করে করে থাকে ধৃতরা।সেন্ট্রাল আইবি থেকে ইনপুট এসে পৌঁছয় জেলা পুলিসের কাছে। তারপরই রাজ্য পুলিস ও এনআইএ যৌথ অভিযানে জালে ধরা পড়ে অভিযুক্তরা। সহযোগিতা করে কর্নাটক, কেরালা ও তেলেঙ্গানা পুলিসও। অভিযুক্ত ২ জনকে গ্রেফতারির পাশাপাশি উদ্ধার হয়েছে একটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ সহ বেশ কিছু ইলেকট্রনিক ডিভাইসও। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে বিস্ফোরণের ঘটনার মাস্টারমাইন্ড ছিল ধৃত মাতিন। আর ক্যাফেতে আইডি প্ল্যান্ট করে ধৃত সাজিব। ১ মার্চ বেঙ্গালুরুর রামেশ্বর ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনাটি ঘটে। বিস্ফোরণে আহত হন কমপক্ষে ১০ জন। বিস্ফোরণে আইডি জাতীয় বিস্ফোরক ব্যবহার হয়। একটি ব্যাগের মধ্যে রাখা বিস্ফোরক থেকে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সন্দেহভাজনকে ধরতে নগদ পুরস্কার ঘোষণা করে এনআইএ। ১০ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করে এনআইএ। এদিন কাঁথি থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতেই, তুঙ্গে ওঠে শাসক-বিরোধী তরজাও। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী তোপ দাগেন,"কাঁথি আমার হোম টাউন। পশ্চিমবঙ্গ আন্তর্জাতিক অপরাধীর মুক্তাঞ্চল। এটা আগেও প্রমাণিত। পাঞ্জাব পুলিস চপারে করে এখানে এসে পাঞ্জাবের দুষ্কৃতী এনকাউন্টার করেছে। গোটা দেশে যত বিচ্ছিন্নতাবাদী ঘটনা ঘটে তাদের সেফ জোন এটা। মমতা ব্যানার্জি নিজে দেশবিরোধী কাজের সঙ্গে যুক্ত। সরাসরি। এখানে রাষ্ট্র বিরোধী একটি সরকার থাকার জন্য তাদের পুলিসকে পার্টি ক্যাডারে পরিণত করেছে। পুলিসের নিজস্ব কাজ না করতে দেওয়ার কারণে এই অবস্থা হয়েছে।" ওদিকে দিলীপ ঘোষও বলেন, "ভারতবর্ষের যেখানে বিস্ফোরণ হয়, তার সঙ্গে যোগ থাকে পশ্চিমবঙ্গের। অনুপ্রবেশকারীরা এখানে আসে, রোহিঙ্গারা এখানে আসে, আধার কার্ড বানায়, রেশন কার্ড পরিচয়পত্র নিয়ে সারা দেশে চলে যায় চক্রান্ত করে। বাঙালিদের দেশদ্রোহী করার জন্য কারা চক্রান্ত করছে। এখানকার সরকার কেন দেখে না?"পালটা গ্রেফতারি নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণের কড়া জবাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ও। মমতা বলেন, "বেঙ্গালুরুতে একটা বোমা পড়েছিল। বেঙ্গালুরুতে বিস্ফোরণ হয়েছিল। তাঁরা কর্নাটকের বাসিন্দা। বাংলায় লুকিয়েছিল। বাংলার পুলিস ধরেছে। বাংলার পুলিস ২ ঘণ্টায় অভিযুক্তদের ধরে দিয়েছে। তাতেই প্রশ্ন তুলছে বাংলা নিরাপদ নয়! উত্তরপ্রদেশ নিরাপদ? রাজস্থান নিরাপদ? গুজরাট নিরাপদ? বিহার নিরাপদ? বাংলার মানুষ শান্তিতে থাকুক, সহ্য হয় না ওদের।" রাজ্য় পুলিসের তরফেও কড়া জবাব দেওয়া হয়।