‘কেস খেতে হলে খাব’, ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে দৃঢ় সংকল্প মমতার
এই সময় | ১২ এপ্রিল ২০২৪
জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জেরে একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নির্বাচনের আদর্শ আচরণবিধি মেনে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সাহায্য করার জন্য কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে, পর্যাপ্ত অনুমতি না মেলায় সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিগ্রস্তদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা করলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।আলিপুরদুয়ারে একটি নির্বাচনী প্রচার সভায় শুক্রবার উপস্থিত ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মাত্র কুড়ি হাজার টাকা দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।’ তাঁর অভিযোগ, মাটিতে মিশে যাওয়া মানুষদের সাহায্য করতে দেয়নি। ২০ হাজার টাকায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের আদৌ কতোটা সাহায্য হবে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলার বাড়ি দিতে চেয়েছিলাম। ওরা দিলো না।’ তাঁর কথায়, ‘আজকে আমরা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত জানতে পেরেছি। এটা বলতে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে কেউ মনে করেন কেস করবেন, করতে পারেন। গরিব লোকের কথা বলতে গিয়ে আমাকে কেস খেতে হলে খাবো। হাজার বার কেস খাব।’
এদিনের সভা থেকে তিনি জানান, যাঁদের ঘর-বাড়ি তৈরি হবে, তাঁদের এক লাখ ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। এর মধ্যে সরকারের তরফে ইতিমধ্যে ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও আরও ৪০ হাজার টাকা প্রথম কিস্তিতে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় কিস্তিতে বাকি টাকা মিটিয়ে দেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন চলছে, আমি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কিছু করছি না, এটা প্রশাসন করবে।’ বিষয়টি নিয়ে আইনি আলোচনার বিষয়ে মমতা উল্লেখ করেন, ‘বিপর্যয় মোকাবিলা নিয়ে একটা আইন আছে। ওটা আমরা খুঁজে বের করেছি। জুলাই মাস থেকে কার্যকর হয়েছে। কারও জানা ছিল না। বারবার অনুরোধ করে যখন কাজ হয় না, তখন আইনই আমাদের পথ দেখায়।’
প্রসঙ্গত, গত ৩১ মার্চ প্রবল ঝড়-বৃষ্টির কারণে বিপর্যস্ত হয় গোটা উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। বিশেষত, ক্ষতি হয় জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলার। সেই রাতেই জলপাইগুড়ি ছুটে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গের একাধিক জেলা মিলিয়ে প্রায় দু হাজরের বেশি বাড়ি কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানানো হয়। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্যেই কমিশনের কাছে আর্জি জানানো হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে কোনও সাড়াশব্দ না মেলায় কয়েকদিন আগেই দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূলের একটি দশ সদস্যের প্রতিনিধি দল। ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে যাতে আর্থিক সাহায্য কিছুটা বাড়ানো যায়, সে ব্যাপারে আর্জি জানানো হয়েছিল।