• রচনা-লকেটের গ্ল্যামারে ফিকে মনোদীপ, পবনরা? কী বলছেন 'মেঘে ঢাকা তারা'-রা
    এই সময় | ১৩ এপ্রিল ২০২৪
  • হুগলি ছিল একসময় বামেদের শক্ত ঘাঁটি। এই লোকসভা কেন্দ্র থেকেই সাতবার সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন প্রয়াত বাম নেতা রূপচাঁদ পাল। তবে সেই হুগলিতেই বামেদের ক্ষয় শুরু হয় সিঙ্গুর আন্দোলনের পর্ব থেকে। ২০১১ সালের পর শুধু হুগলি লোকসভা নয় হুগলি জেলাতেও বামেদের ভোট কমতে থাকে। ২০১১-১৬ ও ২১ সালের বিধানসভায় বিপুল ভোটে জয়লাভ করে তৃণমূল। এরই মধ্যে পরপর দু'বার সাংসদ নির্বাচিত হন তৃণমূলের রত্না দে নাগ। কিন্তু ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে সেই আসন দখল করে বিজেপি। হুগলি লোকসভার সাতটি বিধানসভায় ২০১৯ সালের আগে উল্লেখযোগ্যভাবে কোনওদিনই দাঁত ফোটাতে পারেনি বিজেপি। পান্ডুয়া, বলাগড়, পোলবায় কিছু পরিমাণ বিজেপি ভোট থাকলেও সার্বিকভাবে গেরুয়া শিবির খুব একটা মজবুত ছিল না।২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে হারানো হুগলি কেন্দ্র ফের পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে শাসকদল তৃণমূল। তারকা প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নির্বাচনে দাঁড় করিয়ে চমক দিয়েছে তৃণমূল। বহুল প্রচলিত জনপ্রিয় টিভি শো এবং বাংলা, হিন্দি, ওড়িয়া সিনেমায় অভিনেত্রী ভূমিকায় দেখা গিয়েছে রচনাকে। সেরকমই এক জনপ্রিয় মুখকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। অন্যদিকে লকেট চট্টোপাধ্যায়, তিনিও পাঁচ বছরের সাংসদ। দশ বছরের বেশি সময় ধরে তিনি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তিনিও এক সময়ের অভিনেত্রী।

    এই দুই পরিচিত মুখের মাঝে বামেরা যাঁকে প্রার্থী করেছে তিনি বলতে গেলে একেবারেই নবাগত। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কোনও অভিজ্ঞতা তাঁর নেই। তিনি এর আগে কোনদিনও ভোটে দাঁড়াননি। একেবারে সরাসরি লোকসভা ভোটের লড়াইতে পড়েছেন। তাই দলের লোকেরা তাঁকে চিনলেও, সাধারণ মানুষের কাছে তিনি খুব একটা বেশি পরিচিত নন। রাজনৈতিকমহলের একাশ মনে করে, লোকসভার মতো নির্বাচনে পরিচিত মুখের একটা আলাদা অ্যাডভান্টেজ আছে। রচনা ও লকেট চট্টোপাধ্যায় দু'জনেই পরিচিত মুখ। তৃণমূল ও বিজেপি প্রার্থীদের নাম ঘোষণা হওয়ার পরেই প্রচার শুরু করে দিয়েছিল। সেখানে তখনও প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি বামেরা। রাজনৈতিক বিশেজ্ঞরা মনে করছেন, সেখানেই অনেকটা পিছিয়ে থেকে শুরু করেছেন মনোদীপ ঘোষ। যদিও তিনি ছাত্র রাজনীতি, শ্রমিক সংগঠন, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য। এমনকী রাজ্য কমিটিতেও নাম রয়েছে তাঁর। রাজনীতিতে পুরনো হলেও ভোটের রাজনীতিতে তিনি একেবারেই নতুন।

    রাজনৈতিকমহলের একাংশ মনে করছে, বামেদের যে শক্তি ক্ষয় হয়েছে তা এই মুহূর্তে পুনরুদ্ধার কঠিন। বামপ্রার্থী মনোদীপ ঘোষ বলেন, 'প্রচারে সারা ভালোই পাচ্ছি, যতটা সম্ভব সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছি। আমরা সারা বছর মানুষের জীবন জীবিকা রুটি রুজির পাশে থাকি। তাদের অভাব অভিযোগ শুনে সেগুলোকে আন্দোলন সংগ্রামে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। বামেদের প্রচার কোথাও হারিয়ে যায়নি, ঘুরলে দেখা যাবে আমরা সব জায়গায় প্রচার করছি। আমরা মানুষের অভাব অভিযোগ শুনেছি ১০০ দিনের কাজ নেই, আবাস যোজনা প্রকল্পের বাড়ি যাঁদের পাওয়ার কথা তাঁরা পাননি।'

    এদিকে ওই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছে এসইউসিআই-ও। তাদেরও চলছে প্রচার। এই বিষয়ে প্রার্থী পবন মজুমদার বলেন, 'হুগলি লোকসভার বিভিন্ন জায়গায় মানুষ সাড়া দিয়ে সাদরে গ্রহণ করছে আমাদের। আমরা কোথাও ফিকে হয়ে যাইনি। বিজেপি বা তৃণমূল কেউই ধোয়া তুলসী পাতা নয়। সবাই দুর্নীতিতে যুক্ত। এরা পচা দল।'
  • Link to this news (এই সময়)