• Poila Boishakh: নববর্ষে বইপাড়ায় ডাবের জায়গা নিয়েছে লস্যি, কোল্ড ড্রিঙ্ক...
    আজকাল | ১৩ এপ্রিল ২০২৪
  • রিয়া পাত্র "এই বছরে ঘুরে গেলাম/ ডাবের জল আলুর চপ/ খেয়ে গেলাম/ পরের বছর আমার কোনো/ নিশ্চয়তা নেই/ বলার কথা এই", কিম্বা "দে"জ এর ডাবের সত্যিই তুলনা হয় না। ডাবের আমি ডাবের তুমি ডাব দিয়ে যায় চেনা। ঢুকতে ঢুকতে দেখলাম ছোট্ট একটা পাহাড় ডাবের। যদি কাক হওয়া যেত, তাহলে ওই চূড়োয় উড়ে বসা যেত।" প্রথম লেখাটি শরৎকুমার মুখোপাধ্যায় এবং দ্বিতীয়টি অমিয় দেবের। দে"জ পাবলিশিং-এর "খেরোর খাতা" একটু উল্টে পাল্টে দেখলে এরকম আরও বেশ কিছু লেখা চোখে পড়বে, যাতে বিশিষ্ট লেখক-সাহিত্যিকদের "নববর্ষ" বার্তায় বারে বারে ডাবের কথা উঠে এসেছে। নতুন বছর, বইপাড়ার হইচই, প্রকাশকের ঘরে তুমুল আড্ডা-হট্টগোলের মাঝে ডাব ছিল এক গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র। এক এক প্রকাশন এই বিশেষ দিনে হাজারের ওপর ডাব কিনত। ডাব কেটে অতিথিদের দেওয়া আর তার পর জমা খোলা পরিষ্কার করতে হিমশিম খেতে হত। তবে ওই যে, গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের জন্য একটু ঝক্কি তো নিতেই হবে। বেশ কিছু কারণে আপাতত বাবা কিছুটা ব্যাকফুটে। কেউ বলছেন "অনেক হ্যাপা", কেউ আবার বলছেন, ডাব আর "বাজেট ফ্রেন্ডলি" নেই।   আরও একটা বছর ফুরিয়ে যাওয়ার ঠিক আগে একবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া, বিশেষ দিনে প্রায় ফুরিয়ে যাওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে থাকা আরও এক উপকরণের উপর। বইপাড়ার বর্ষবরণ, আর ডাবের জল এই সম্পর্কে ছেদ পড়ছে গত কয়েক বছর ধরেই। পত্র ভারতীর কর্ণধার ত্রিদিব চ্যাটার্জি বলছেন, "একে তো এই সময়ে নানা ধরণের লস্যি সহ সুস্বাদু নরম পানীয় হাতের কাছে। তাছাড়া মোবাইলের রমরমার বাজারে ডাবের মধ্যে নানা স্পট দেখা যাচ্ছে দিনে দিনে। এই ডাব দিলে অনেকে বিরক্ত হন। ডাব খাওয়ার পর দোকানের পাশে ডাঁইও হয়ে থাকে, সেসব পরিষ্কার করতে হয়।" তাই আজকাল ডাবের ব্যবস্থা করছেন না আর। কেউ বলছেন, ডাবের ব্যবস্থা করতে সারাক্ষণ ডাব কাটার জন্য লোক রাখতে হয়। খামোকা কেন এত ঝক্কি। আর যেখানে অল্প খরচে হরেক রকম পানীয়, সেখানে ৫০-৬০টাকা দিয়ে ডাব কেনা কেন? আবছা ভোরে কলেজ স্ট্রিটের মোড়ে দাঁড়িয়ে গফুর, ইসমাইল, দিল মহম্মদও মানছেন বিশেষ দিনে বইপাড়ায় ডাবের চাহিদা নেই আর সেরকম। বসিরহাট, স্বরূপনগর, হাসনাবাদ থেকে তাঁরা ডাব নিয়ে আসেন। আগে পয়লা বৈশাখে অনেক বেশি পরিমাণ ডাব নিয়ে আসতে হত। প্রকাশন সংস্থার লোক ভোরে এসে রঘুনাথ, দীননাথদের কাছে নববর্ষের দিনের জন্য আটশো, হাজার ডাবের অর্ডার দিয়ে যেত। ভোরে গফুরমিয়াদের থেকে ডাব পৌঁছে যেত নির্দিষ্ট ঠিকানায়। সঙ্গে যেঁতেন ওঁরা, ডাব কাটতেন। এবারেও কিছু অর্ডার এসেছে, তবে সংখ্যাটা নেহাত কম। কারণ হিসেবে তাঁরাও নরম পানীয়ের রমরমা, আর ডাবের দামের কথা উল্লেখ করছেন। যা বোঝা যাচ্ছে, তাতে আর খেরোর খাতায় কয়েক বছর পরে সাহিত্যিকেরা কিন্নর রায়ের মতো লিখে যাবেন না "রোদে নতুন বইয়ের গন্ধ। খই ভাজা গরমে ডাব..."তথ্য ও ছবি সূত্র: খেরোর খাতা, দে"জ পাবলিশিং।
  • Link to this news (আজকাল)