গণতন্ত্রের চর্চা করে 'কাক্কেশ্বর কুচকুচে'রাও! কাকের সমাজেও ভোট হয়, জানেন'
২৪ ঘন্টা | ১৩ এপ্রিল ২০২৪
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অবন ঠাকুরের 'বুড়ো আংলা'য় পাতিকাক বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আর সুকুমার রায়ের 'শ্রী কাক্কেশ্বর কুচকুচে'কে কে না চেনে! সে না হয় চেনেন, কিন্তু ঠিকঠাক চেনেন কি? জানেন কি, কাকেরা মিটিং করে? জানেন কি, কাকেরা কঠোর ভাবে গণতন্ত্র মেনে চলে? তেমনই সামনে এসেছে একটি গবেষণার সূত্রে। ব্রিটেনের কগনিটিভ ইভলিউশনের অধ্যাপক অ্যালেক্স থর্নটন অবাক করা এই তথ্যটি দিয়েছেন।
এক সঙ্গে অনেক কাক এক হয়ে কা-কা করে চিৎকার করছে। এমনটা অনেকেই দেখেছেন। আমাদের কাছে ওটা চিৎকার হলেও আসলে হয়তো কাকগুলি এক জোট হয়ে বসে কোনও জরুরি বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। না, হাসির কথা নয়, মজাও নয়। জানা গিয়েছে, যখনই কোনও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হয়, কা-কা করে চিৎকার জুড়ে জরুরি মিটিংয়ে বসে কাকেরা। জানা গিয়েছে, রীতিমতো গণতান্ত্রিক নিয়মকানুন মেনে কাকেরা এলাকা বা বাসস্থান বা বেঁচে থাকার ধরন-ধারণ ইত্যাদি নিয়ে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলি নেয়। এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ব্রিটেনের এক্সেটার বিশ্ববিদ্যালয়। এই বিশ্ব বিদ্যালয়ের কগনিটিভ ইভলিউশনের অধ্যাপক অ্যালেক্স থর্নটন এটির নেতৃত্বে ছিলেন। তাঁর গবেষণা বলছে, একদল কাক নতুন কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিজেদের মধ্যে এক প্রস্ত আলোচনা করে নেয়। এটা ওরা করে বিশেষ করে এলাকা বা বাসস্থান বদলের আগে। তখনই নিজেদের মধ্যে গণতান্ত্রিক ভাবে এক প্রস্ত আলোচনা করে দেখে নেয়, তাদের সদস্যেরা কে কী বলছে। হয়তো সিদ্ধান্তের উপর ভোটাভুটিও চলে, বলছেন অ্যালেক্স। তারপর যে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসে, সেটাই সকলে মেনে চলে। এমনিতেই কাকেরা বুদ্ধিমান প্রাণী। তবে তাদের বিষয়ে আরও তথ্য জোগাড়ের লক্ষ্যে ব্রিটেনের নরফকের প্রায় ৪০ হাজার পাতিকাকের উপর নজর রাখা হয়েছিল। তাছাড়া বিজ্ঞানীরা কাকেরা সেই অঞ্চলে যে গাছগুলিতে থাকত সেখানে অডিয়ো রেকর্ডার লাগিয়ে রেখেছিলেন। এই ব্যবস্থাটা কাকেদের আচরণ বুঝতে আরও সুবিধা করে দিয়েছিল। কাকেরা বিভিন্ন সময়ে যে বিভিন্ন রকম আওয়াজ করে সেটা বিশ্লেষণ করে, তাদের সম্বন্ধে, তাদের আচরণ সম্বন্ধে অনেক কিছু জানা গিয়েছে।কেন এরকম গবেষণা করা হল?এই গবেষণার উদ্দেশ্য, প্রাণী বা পাখিদের সম্বন্ধে আরও তথ্য জানা যেমন, তেমনই এটাও দেখা যে, মানুষ যেন প্রাণী বা পাখিদের আবাসস্থলে কোনও বিঘ্ন না ঘটায়। তেমন ঘটাচ্ছে কিনা সেটা খেয়াল রাখাও এই ধরনের গবেষণার অন্যতম লক্ষ্য। বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষ যেভাবে নিয়মিত আলো ও শব্দের দূষণ ঘটাচ্ছে, তা প্রাণীদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। তেমনটা ঘটলে সেটা যথেষ্ট দুঃখের।