'আব্বা নেহি মানেঙ্গে'- থ্রি ইডিয়টস এর সেই বিখ্যাত দৃশ্যটা মনে আছে! সেখানে আব্বা রাজি হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, এখনও কি কেরিয়ার নিয়ে সন্তানদের লাগাম পুরোপুরি ছাড়তে রাজি আজকের বাবা-মায়েরা?যোধপুর পার্কের ওম্যান পলিটেকনিক কলেজের প্রথম বর্ষের এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীর মৃত্যু অনেক প্রশ্ন উসকে দিচ্ছে। মৃতের নাম নন্দিতা লাহা। ১৮ বছরের এই ছাত্রী পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা। আলিপুরের জাজেস কোর্ট রোডের ওম্যান ইঞ্জিনিয়ারিং হোস্টেলে থাকতেন তিনি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোর সাড়ে ছয়টা নাগাদ রুমের মধ্যে উদ্ধার হয় নন্দিতার দেহ। ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখা যায় নন্দিতাকে। হস্টেলের রুম থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে।
আর এই নোটে লেখা একাধিক কথা, যা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই সুইসাইড নোটে লেখা আছে, ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করলেও তাতে তাঁর রুচি ছিল না। রুচি ছিল সাহিত্যে। কবিতা লিখতে ভালোবাসত। সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করতে আগ্রহী ছিলেন ওই ছাত্রী। তবে পরিবারের তরফে নন্দিতাকে বলা হয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়েই কেরিয়ার তৈরি করার জন্য।
কিন্তু, বিষয়ের প্রতি ভালোবাসা না থাকায় এই নিয়ে ক্রমশ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছিলেন তিনি। পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, সুইসাইড নোটে ওই ছাত্রী আরও লিখেছে, ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে এগোনোর ইচ্ছে তার আর নেই। পরিবারের যে চাপ তা আর মেনে নেওয়ার মতো মানসিক অবস্থাও তার নেই। তাই চরম পদক্ষেপ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই ছাত্রীর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট সামনে এলেই বোঝা যাবে যে ঠিক কী কারণে তাঁর মৃত্যু। পাশাপাশি, পরিবারের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সত্য়ি কি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে অখুশি ছিলেন ওই ছাত্রী? আগে কি পরিবারকে এই বিষয়ে কোনওদিন জানিয়েছেন? বাবা-মা এবং অন্যান্য পরিবারের সদস্য, বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে সেই তথ্য জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।
কথা বলা হচ্ছে তাঁর অধ্যাপকদের সঙ্গেও। গোটা বিষয়টির নেপথ্যে ঠিক কোন রহস্য লুকিয়ে রয়েছে? তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারীদের কথায়, ‘ছাত্রীর পোর্স্ট মর্টাম রিপোর্ট সামনে আসার পর অনেক তথ্য জানা যাবে। ওই ছাত্রীর মৃত্যুর নেপথ্যে অন্য কোনও রহস্য রয়েছে কিনা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’ এদিকে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায় ওই ছাত্রীর পরিবারকে।