তৃতীয়বার নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় এলে বদলে যাবে দেশের সংবিধান। পালটে দেওয়া হবে ভারতের মানচিত্র। এমনটাই অভিযোগ তুলে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন নির্মলা সীতারমনের স্বামী পরাকলা প্রভাকর। সোনিয়া গান্ধীও অভিযোগ তুলেছেন, দেশের সংবিধান বদলে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। এই নিয় অবশেষে মুখ খুললেন নরেন্দ্র মোদী।ভারতীয় সংবিধানের মাহাত্ম্য তুলে ধরেন নমো। একই সঙ্গে সংবিধানের মূল রূপকার বি আর আম্বেদকরের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার রাজস্থানের বারমেরে BJP-র নির্বাচনী সমাবেশে মোদী বলেন, ‘বাবাসাহেব আম্বেদকর স্বয়ং থাকলে, তিনিও আজ আর সংবিধান ধ্বংস করতে পারবেন না। সরকারের কাছে সংবিধান হল গীতা, কোরান, বাইবেল।’ কর্নাটকের BJP সাংসদ অনন্ত হেগড়ে সম্প্রতি দাবি করেছিলেন, ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র করতে হলে প্রয়োজন সংবিধানে পরিবর্তন। এবং সংবিধানে পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সংসদে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা। সেই কারণে BJP ৪০০ আসনের লক্ষ্য নিয়ে নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির। এই মন্তব্য থেকেই শুরু হয় বিতর্কের সূত্রপাত।
এরপর কংগ্রেস সহ ইন্ডিয়া জোটের বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীরা BJP সরকারকে তীব্র আক্রমণ করতে শুরু করেন। মোদী সরকার দেশের সাংবিধান বদলে দিতে চাইছে বলে শোরগোল পড়ে যায় রাজনৈতিক মহলে। সংবিধান বদল করে গণতন্ত্র ধ্বংস করার গোপন পরিকল্পনা করার অভিযোগও উঠেছে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সম্প্রতি অনন্ত হেগড়ের সেই বিতর্কিত মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘BJP-র ওই নেতার বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, সংবিধান পরিবর্তনের জন্য ৪০০ আসন প্রয়োজন। নরেন্দ্র মোদী ও সঙ্ঘ পরিবারের গোপন পরিকল্পনা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। মোদীদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হল বাবাসাহেব আম্বেদকরের সংবিধানকে ধ্বংস করে দেওয়া। কারণ, BJP-র লোকেরা ন্যায়, সমতা, নাগরিক অধিকার কিংবা গণতন্ত্র সহ্য করতে পারেন না। ঘৃণা করেন। এদের লক্ষ্যই হল সমাজের বিভাজন ঘটানো। ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে স্বৈরতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে চায় এরা।’
বারমেরের সভায় সংবিধানের অলঙ্ঘনীয় অপরিহার্যতার কথা তুলে ধরে মোদী যে রাহুল, সোনিয়া সহ বিরোধী শিবিরের তোলাঅভিযোগের জবাব দিয়েছেন, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। পাশাপাশি ওই সভায় তিনি বলেন, ‘কংগ্রেস উন্নয়নবিরোধী। তারা দেশবিরোধী শক্তির দোসর। মোদী যখন ভারতকে একটি শক্তিশালী জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে ব্যস্ত, তখন বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার নেতারা দেশকে দুর্বল করার চেষ্টা করছেন।’