• West Bengal Election Result : জয়ী হওয়া ১৮ আসনে 'হিসাব বদল' একুশেই! কোন ফর্মুলায় ৩৫ আসন জয়ের 'টার্গেট মিট'-এর দৌড় বঙ্গ BJP-র?
    এই সময় | ১৩ এপ্রিল ২০২৪
  • ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে-বঙ্গ 'পার্টিগণিত'-এ গেরুয়া হিসাব দেখে অবাক হয়েছিলেন রাজনৈতিক মহলের বেশিরভাগই। ১৮টি লোকসভা আসনে পদ্ম ফুটেছিল বাংলায়। ফলাফলে দেখা গিয়েছিল, ১২১টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিল BJP। এরপর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিস্তর বদল এসেছে। বিধানসভায় BJP ২০০ পার করার হুংকার দিলেও 'খেলা ঘোরায়' তৃণমূল।

    কোন কোন আসনে ২০১৯ সালে জয়ী হয়েছিল BJP?

    পাহাড় এবং জঙ্গলমহল- ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে 'গেরুয়া ঝড়'-এর নেপথ্যে এই দুই জায়গা নিয়ে বিস্তর চর্চা হয়। উত্তরবঙ্গে আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, রায়গঞ্জ, বালুরঘাট, মালদা উত্তর, রানাঘাট অন্যদিকে বনগাঁ, হুগলি, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, আসানসোল, বর্ধমান দুর্গাপুর, ব্যারাকপুর-এই ১৮ আসনে গেরুয়া শিবির জয়লাভ করে।

    এবার বাংলায় BJP-র টার্গেট বাড়িয়ে ৩৫ করে দিয়েছেন অমিত শাহ। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফলকে সামনে রেখে বিচার করলে সমীকরণ বলছে অন্য কথা। ২০১৯ সালের মাত্র ২ বছরের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় একুশের নির্বাচনে বালুরঘাটকেন্দ্রে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার। তাঁর সংসদীয় এলাকায় সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে তিনটি গিয়েছিল BJP-র ঝুলিতে। কিন্তু, মেদিনীপুর নিয়ে ততটা স্বস্তি দিতে পারেননি দিলীপ ঘোষ।

    তাঁর নেতৃত্বে লড়ে ২০১৯ সালে বঙ্গে BJP বড় সাফল্য পায়। নিজের সংসদ এলাকায় সাতটির মধ্যে পাঁচটি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে ছিলেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু, মাত্র দুই বছরেই ঘোরে খেলা! ২০২১ সালে নিজের কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা আসনের মধ্যে মাত্র একটি খড়গপুর সদরে দিলীপ ঘোষের দল জয় পেয়েছিল।

    এদিকে উত্তরবঙ্গ ২০১৯ সালে ছিল BJP-র 'স্বর্ণ' এলাকা। মাত্র ১টি কেন্দ্র ছাড়া সমস্ত আসনেই জয়ী হয় গেরুয়া শিবির। ৫৯.১৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন রাজু বিস্তা। এবার রাজুর মুখোমুখি পদ্মের বিষ্ণুই। নির্দল হিসেবে দার্জিলিঙে প্রার্থী দিয়েছে স্বয়ংবিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। বিমল গুরুংয়ের সঙ্গ নিয়ে যাবতীয় অস্বস্তি কাঁটা সরাতে চায়ছে গেরুয়া শিবির।

    ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার কেন্দ্র থেকে ৪৭.৯৮ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃণমূল প্রার্থী পরেশ অধিকারীকে হারিয়েছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। এবার তাঁর সামনে রয়েছে জগদীশচন্দ্র বসুনিয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বঙ্গ BJP নেতার কথায়, ‘রাজ্যে যে সেফ সিটগুলি তালিকাভুক্ত করা হয়েছে এর মধ্যে অন্যতম এই আসন।’

    আশ্চর্যজনকভাবে, গত লোকসভা নির্বাচনে জঙ্গলমহলে ভালো ফলাফল করেছিল BJP। কিন্তু, আসন্ন নির্বাচনে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রের জন্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয় তৃণমূলের ঘোষণার অনেক পরে। অন্যদিকে, এই কেন্দ্রে থেকে এই বার সাঁওতালি সাহিত্যিক কালীপদ সরেনকে প্রার্থী করে কার্যত 'মাস্টারস্ট্রোক' দিয়েছে তৃণমূল, মত রাজনৈতিক মহলের। এদিকে পেশায় চিকিৎসক তরুণ রাজনীতিক প্রণত টুডুকে প্রার্থী করেছে BJP।

    Barrackpore Lok Sabha:পার্থ-অর্জুনের সঙ্গে টক্করে দেবদূত, স্ট্র্যাটেজি কী?

    লোকসভা নির্বাচনে অন্যতম হাইভোল্টেজ কেন্দ্র হুগলি। ২০১৯ সালে এই কেন্দ্র থেকে ৪৬.০৬ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন BJP প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। এবারেও ভোটময়দানে তিনিই। কিন্তু, তৃণমূল রত্না দে নাগকে আর প্রার্থী করেনি। বরং ভোট ময়দানে দেখা যাচ্ছে ‘দিদি নং ১’ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। স্বাভাবিকভাবেই এই কেন্দ্রেও যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে তা স্পষ্ট।

    বিধানসভা নির্বাচনে চোখ ধাঁধানো ফলাফলের পর অনেকটাই অক্সিজেন পেয়েছে সবুজ শিবির। স্বাভাবিকভাবেই নতুন উদ্দ্যমে লড়াইয়ের ময়দানে ঝাঁপিয়েছে তৃণমূল। এখন দেখার ৪ জুন কাদের মুখে চওড়া হাসি ফোটে!
  • Link to this news (এই সময়)