উত্তরবঙ্গের প্রায় সব কয়টি লোকসভা আসন ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে ছিনিয়ে নিয়েছিল বিজেপি। কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার থেকে রায়গঞ্জ, সব আসনেই জিতেছিলেন বিজেপি প্রার্থীরা। ‘কেন দেন বিজেপিকে ভোট? সরকার আপনাদের জন্য কী করেনি?’ জলপাইগুড়ির সভা থেকে আবেগপ্রবণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবারের নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থীদের দিকে মুখ তুলে চাক, নির্বাচনী সভায় আবেদন জানালেন তিনি।গত প্রায় ১৩ দিন ধরে উত্তরবঙ্গে প্রচার সারছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোচবিহার থেকে জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার জেলায় জেলায় একের পর এক জেলায় সভা করছেন তিনি। গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গের জন্য রাজ্য সরকারের করা একাধিক কাজের খতিয়ান তুলে ধরছেন তাঁর বক্তৃতায়। শনিবার জলপাইগুড়ির সভা থেকে মমতা বলেন, ‘কী অপরাধ করল তৃণমূল কংগ্রেস, যে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি, গোটা উত্তরবঙ্গে আপনারা বিজেপিকে ভোট দেন?’ পাশে গৌতম দেবকে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি কেন্দ্র নিয়ে মমতা বলেন, ‘যাঁকে আপনারা জেতালেন, আমি কুরুচিকর মন্তব্য করতে চাই না, কিন্তু মনে রাখবেন, তাঁকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এসে পঞ্চায়েত সমিতির কোনও একটা সদস্য আমিই করেছিলাম।’ উত্তরবঙ্গের সব আসন বিজেপি পেল, কী দোষ করেছিল তৃণমূল? কী দিয়েছে বিজেপি আজ পর্যন্ত, বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
Mamata Banerjee Purulia Rally : 'না বন্ধু তোমায় কিচ্ছু দিতে হবে না' কটাক্ষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
কন্যাশ্রী থেকে রূপশ্রী, খাদ্যসাথী, শস্যবিমা থেকে পড়ুয়াদের আর্থিক সাহায্য একাধিক প্রকল্প রাজ্য সরকার দিয়ে আসছে, সেই কথা তুলে ধরেন তিনি। মমতার প্রশ্ন, ‘কী করেছে বিজেপি আপনাদের জন্য? এক পয়সা দিয়ে আপনাদের সাহায্য করেছে?’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনগণের উদ্দেশে বলেন, ‘কাজ করব আমরা আর ওঁরা শুধু একটা ধর্মের নাম করে যাবে, তাতে আপনার পেট ভরবে তো?’
বক্তৃতার মাঝে বিধানসভা নির্বাচনের কথা তুলে ধরেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, বিধানসভায় তিনি গৌতম দেবকে টিকিট দিয়েছিলেন। ওঁর সভায় উপচে পড়া ভিড় হয়েছিল। কিন্তু ও জিতল না। মমতা বলেন, ‘এটা আমার দুঃখ। কেন বিজেপি জিতল? ওরা এখানে কী করেছে? যদি কিছু দিয়ে থাকে, আমার আপত্তি নেই। কিন্তু কাজ আমরা করেছি।’
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী নির্মল চন্দ্র রায়ের সমর্থনে এদিন সভা করেন তিনি। সভার শেষেও তিনি উল্লেখ করেন, ‘আর দয়া করে বিজেপিকে ভোটটা দেবেন না। আমরা এখান থেকে যত বেশি আসন পাব, তত দিল্লি থেকে বাংলার পাওনা ছিনিয়ে আনতে পারব।'