অর্ণব আইচ: বেঙ্গালুরু ক্যাফে বিস্ফোরণ কাণ্ডে ধৃত দুই চক্রীর আনাগোনা ছিল চাঁদনি চকেও। সেখানে মোবাইলের সফটওয়্যার আপডেট করতে এসেছিল তাঁরা। তদন্তে এমনই বিস্ফোরক তথ্য পেলেন NIA আধিকারিকরা। ইতিমধ্যে তদন্তকারী ওই দোকানে হানা দেন। দোকানের কর্মীদের সঙ্গে কথাও বলেন তদন্তকারীরা।
সূত্রের খবর, দোকানের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় আধিকারিকরা দুই জঙ্গির ছবি দেখান। তাদের মধ্যে একজনকে চিনতে পারেন কর্মীরা। দোকান কর্মীরা জানান, জঙ্গির মোবাইল সামান্য অডিওর সমস্যা ছিল। সেটি সারাই করতে এসেছিল জঙ্গিরা। তেমনই আবার নিজেদের লুকোতে মোবাইলের সফটওয়্যার আপডেট করার চেষ্টাও করেছিল তারা। চাঁদনি চকের ওই দোকানটিতে মোবাইলটি একদিনের জন্য রেখেও গিয়েছিল জঙ্গিরা। পরদিন মোবাইল ফেরতও নিয়ে যায় তারা। তবে আর মোবাইলের দোকানে আসেনি দুজনের কেউই।
ওই দুই জঙ্গিরা নাম ভাঁড়িয়ে তিনটি ভুয়ো আধার কার্ডের কপি জমা দিয়ে কলকাতার অন্তত আটটি হোটেলে গা-ঢাকা দিয়েছিল। ১৮ দিন ধরে কলকাতার হোটেলে গা ঢাকা দিয়ে থাকার পর তারা কোলাঘাট হয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের দিকে পাড়ি দেয়। বেঙ্গালুরুর কাফেতে বিস্ফোরণের পর তারা চেন্নাইয়ে পালায়। সেখান থেকে কখনও বাস, কখনও ট্রেন, অর্থাৎ ‘কাটা রুটে’ গত ১০ মার্চ এসে পৌঁছয় হাওড়া স্টেশনে। একটি ট্যাক্সিচালককে হোটেলে নিয়ে যেতে বলে। তিনি লেনিন সরণির একটি হোটেলে নিয়ে আসেন। ধর্মতলা অঞ্চলেই একটি হোটেলে থাকে দুই রাত। ১২ মার্চ দুপুরে এস এন ব্যানার্জি রোডের একটি হোটেলে ওঠে। চেক আউট করে পরদিন। ১৪ মার্চ দুপুর বারোটা পর্যন্ত থেকে চেক আউট করে।
সেদিন থেকে ২১ মার্চ তারা শিলিগুড়ি-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় ছিল বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। ২২ মার্চ সন্ধ্যার পর রেজিস্টার খাতার পাতা ছিঁড়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। ২৫ মার্চ পর্যন্ত ওয়াটগঞ্জ ও একবালপুর এলাকার আরও দুটি হোটেলে রাত কাটায় তারা। ২৮ মার্চ পর্যন্ত থাকার জন্য দুদফায় তিন হাজার টাকা ভাড়া দেয়। তারা প্রথমে এগরা যায়। সেখানে আইএস-এর এক স্লিপার সেলের সদস্যর বাড়িতে থাকার পর পৌঁছয় কাঁথিতে। সেখান থেকে দিঘায়। আর তার পরই পুলিশের সহযোগিতায় এনআইএ-র জালে ধরা পড়ে দুজনে।