Mid Day Meal : নববর্ষে কাল চিকেন বঙ্গের মিড-ডে মিলে, রাজ্যের সিদ্ধান্ত কি মোদীকে জবাব?
এই সময় | ১৪ এপ্রিল ২০২৪
এই সময়: আগামী বুধবার, ১৭ এপ্রিল রামনবমী। তার আগে চৈত্র নবরাত্রি ও শ্রাবণ মাসে বিরোধী নেতাদের আমিষ খাওয়া নিয়ে সরব হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নবরাত্রির সময়ে ও শ্রাবণ মাসে মাছ-মাংস খাওয়া বা তার ভিডিয়ো ক্লিপ নেট-মাধ্যমে আপলোড করার বিষয়টিকে মুঘলদের মানসিকতা বলে রাহুল গান্ধী ও তেজস্বী যাদবকে শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিশানা করেছিলেন।আর সেই প্রধানমন্ত্রীরই নামাঙ্কিত পিএম পোষণ প্রকল্পের (মিড-ডে মিল) মাধ্যমে মোদীকে যেন এর জবাব দিতে উদ্যোগী হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ স্কুলশিক্ষা দপ্তর। আজ, রবিবার বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে কাল, সোমবার রাজ্য জুড়ে সব স্কুলে বিশেষ মেনু রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অধিকাংশ জেলাতেই মিড-ডে মিলের মেনুতে থাকবে ভাত ও চিকেন।
এতেই পাল্টা রাজনৈতিক জবাবের ইঙ্গিত রয়েছে বলে শিক্ষা মহলের অনেকে মনে করছেন। বাঙালির নববর্ষ উদযাপনে এমনিতে আমিষের ছড়াছড়ি। নানাবিধ মাছ, চিংড়ি, মুরগি, মাংসের আইটেমের ভরপুর আয়োজন গৃহস্থ বাড়ির পাশাপাশি বিভিন্ন রেস্তরাঁ, ইটারি এবং হোম-শেফদের আস্তানায়। সে জন্য স্কুলশিক্ষা দপ্তরের সিদ্ধান্তকে স্বাগতই জানাচ্ছেন অনেকেই।
তবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ নববর্ষে খুদে পড়ুয়াদের আমিষ মেনুর ক্ষেত্রে আর্থিক অসুবিধের দিকটিও তুলে ধরছেন। যদিও এই মর্মে নির্দেশ আবশ্যিক ভাবে পালন করে তার বিশদ রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে বিকাশ ভবনে। রাজ্যের তরফে চিকেন-ভাতের নির্দেশ পেয়ে বেশ কিছু জেলার বিদ্যালয় পরিদর্শকরা (ডিআই-মাধ্যমিক) সরাসরি সেই নির্দেশ হোয়াট্যাসঅ্যাপের মাধ্যমে পৌঁছে দিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের।
কিন্তু সে জন্য যে অতিরিক্ত অর্থ প্রয়োজন, সেটা আসবে কোথা থেকে? প্রশাসন সূত্রের খবর, সেই আর্থিক সহায়তার কোনও আশ্বাস এখনও পর্যন্ত দেননি রাজ্যের মিড-ডে মিলের প্রকল্প অধিকর্তা। তাই, কয়েকটি জেলায় যেমন বন্দোবস্ত করা সম্ভব, তেমনই সুখাদ্য সম্বলিত মেনু রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর-সহ একাধিক জেলায় অবশ্য কাল, সোমবার মিড-ডে মিলে থাকছে ভাত ও চিকেন কষা। আবার কলকাতায় পোলাও, ডিম কষা, মিষ্টি রাখা হয়েছে মেনুতে।
তবে মিড-ডে মিলের খাদ্য তালিকা নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রের বিবাদ এই প্রথম নয়। জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ কার্যকর করার লক্ষ্যে গঠিত, বিজেপি শাসিত একাধিক রাজ্যের বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ ছিল— ডিম, চিকেন এবং ফ্লেভার্ড মিল্ক খুদে পড়ুয়াদের শারীরিক স্থূলতা আনে, তাই প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলে সে সব বাদ রাখতে হবে।
এমনকী, ওই বিশেষজ্ঞ কমিটির বক্তব্য ছিল, ওই সব খাবার শিশুদের শরীরে হরমোনজনিত ভারসাম্যও নষ্ট করবে। কমিটির সুপারিশ ছিল, ভারতীয় শারীরিক কাঠামোয় নিয়মিত ডিম ও মাংস খেলে জীবনযাত্রায় ডায়াবিটিস, অল্প বয়সে ঋতুস্রাব, এবং বন্ধ্যত্বর মতো সমস্যা সৃষ্টি করে। যদিও পুষ্টিবিদদের অনেকেই সেই সুপারিশের সঙ্গে একমত ছিলেন না। তাঁদের মত ছিল— ও সব বক্তব্য একেবারেই অবৈজ্ঞানিক।
পশ্চিমবঙ্গে সব স্কুলের মিড-ডে মিলের মানের মূল্যায়নও চালু করেছে রাজ্য। সে জন্য সমস্ত স্তরের আধিকারিক, কর্মী এবং শিক্ষকদের প্রক্রিয়াটির সঙ্গে যুক্ত করতে বলা হয়েছে। তাতে খাবারের মান, সুবিধেভোগীর সংখ্যা, পরিচ্ছন্নতা, পরিমাণ— সব কিছু নিয়েই বিশ্লেষণ হবে।