• K Kavitha: ২৫ কোটি ঘুষ দিতে বাধ্য করেন কবিতা: কোর্টে CBI
    এই সময় | ১৪ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়, নয়াদিল্লি: আবগারি দুর্নীতি মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর গ্রেপ্তারিকে অবৈধ বলে দাবি করে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। ১৫ এপ্রিল, সোমবার সেই মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট। সূত্রের খবর, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে হবে শুনানি। এর মধ্যেই আবগারি মামলায় ধৃত বিআরএস নেত্রী কবিতাকে নিয়ে সিবিআইয়ের বিস্ফোরক অভিযোগ, এই নেত্রীই অরবিন্দ ফার্মার মালিক শরৎচন্দ্র রেড্ডিকে দিল্লিতে মদ ব্যবসার লাইসেন্স পাইয়ে দেওয়ার জন্য আপ সরকারকে অন্তত ২৫ কোটি টাকা ঘুষ দিতে বাধ্য করেছিলেন!আবগারি মামলায় নিজের গ্রেপ্তারিকে চ্যালেঞ্জ করে প্রথমে দিল্লি হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন কেজরিওয়াল৷ সেই আর্জি খারিজ করে দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছিল, ইডির গ্রেপ্তারি বৈধ। কোর্টের বক্তব্য ছিল, আবগারি দুর্নীতি মামলার প্রধান চক্রী হিসেবে কেজরিকে গ্রেপ্তার করার মতো যথেষ্ট তথ্যপ্রমাণ হাইকোর্টে পেশ করেছে ইডি। দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে শীর্ষ আদালতে পাল্টা মামলা করেছেন কেজরি৷ সোমবার তারই শুনানি।

    সোমবারের শুনানির আগেই শনিবার আপ নেতা সঞ্জয় সিং অভিযোগ তুলেছেন, দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি কেজরিওয়ালের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী ও পরিজনকে সামনাসামনি দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না৷ ছোট কুঠুরির মতো জালে ঘেরা জানলা দিয়ে স্ত্রী সুনীতাকে দেখতে পাচ্ছেন কেজরিওয়াল৷ কথা বলতে হচ্ছে মাথা নীচু করে, অনেক কষ্টে! আবগারি মামলাতেই সম্প্রতি জামিন পেয়েছেন সঞ্জয়। শনিবার তিনি অভিযোগ তোলেন, 'কেজরিওয়ালের মনোবল ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে৷ একজন অপরাধীও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সামনাসামনি সাক্ষাতের অনুমতি পায়৷ আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে৷' এদিকে, সোমবারই তিহাড়ে কেজরির সঙ্গে দেখা করতে পারেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবত মান৷ দিন দশেক আগে এই সাক্ষাতের অনুমতি চেয়েছিলেন মান৷ কিন্তু তাঁকে অনুমতি দেওয়া হয়নি৷ সোমবার মান-কেজরি সাক্ষাতের সময়ে দিল্লি ও পাঞ্জাব পুলিশের শীর্ষ আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন বলে সূত্রের খবর।

    প্রসঙ্গত, আবগারি দুর্নীতি মামলাতেই 'সাউথ লবি'র অংশ হিসেবে বিআরএস নেত্রী তথা কেসিআর কন্যা কে কবিতাকে আগেই গ্রেপ্তার করেছে ইডি। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার তিহাড় জেলেই কবিতাকে গ্রেপ্তার করেছে সিবিআই। শুক্রবার বিশেষ আদালতে দাঁড়িয়ে কবিতাকে হেফাজতে চাইতে গিয়ে সিবিআইয়ের দাবি, অরবিন্দ ফার্মার মালিক শরৎচন্দ্র রেড্ডিকে মদ ব্যবসার লাইসেন্স পাওয়ার জন্য মোটা টাকা দিতে জোর করেছিলেন কবিতা! কেজরিওয়ালের 'আম আদমি পার্টি' (আপ)-কে সেই ঘুষের টাকা না দিলে রেড্ডি তেলঙ্গানা ও দিল্লিতে ব্যবসা করতে পারবেন না বলে শাসিয়েছিলেন কবিতা! পরে বিআরএস নেত্রীকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সিবিআই কাস্টডিতে পাঠায় আদালত।

    আবগারি দুর্নীতি মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিল অরবিন্দ ফার্মার মালিক। পরে এই মামলায় রাজসাক্ষী হতে চান রেড্ডি। তাঁর বিরুদ্ধে এখনও চার্জশিট পেশ করেনি সিবিআই। শুক্রবার আদালতে দাঁড়িয়ে সিবিআইয়ের দাবি, কবিতার চাপ এবং আশ্বাসের জেরেই দিল্লির মদ ব্যবসায় মাথা গলিয়েছিলেন রেড্ডি। অভিযোগ, কবিতা তাঁকে আশ্বস্ত করেছিলেন, দিল্লির আপ সরকারের সঙ্গে তাঁর চেনাশোনা রয়েছে। ফলে নতুন আবগারি নীতি অনুযায়ী দিল্লিতে মদের ব্যবসা করতে তাঁকে সাহায্য করবেন কবিতা। বিনিময়ে মদের পাইকারি ব্যবসার জন্য ২৫ কোটি টাকা এবং পাঁচটি রিটেল জ়োনের প্রতিটির জন্য ৫ কোটি টাকা করে ঘুষ দিতে হবে আপ-কে! সেই টাকা কবিতার ঘনিষ্ঠ সহযোগী অরুণ আর পিল্লাই এবং অভিষেক বোনপল্লির হাতে দিতে বলা হয় বলে অভিযোগ। সিবিআইয়ের বক্তব্য, এই টাকা দিতে না চাওয়ায় তেলঙ্গানা ও দিল্লিতে রেড্ডির ব্যবসা করা মুশকিল হয়ে যাবে বলে হুমকি দিয়েছিলেন কবিতা।

    তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, রেড্ডির কোম্পানিই বিজেপিকে ৫৯.৫ কোটি টাকা নির্বাচনী বন্ডে অনুদান দিয়েছিল বলে অভিযোগ আপের। দিল্লির মন্ত্রী আতিশি অভিযোগ তুলেছিলেন, 'দিল্লির আবগারি নীতি তৈরির সময়ে শরৎরেড্ডি ৪.৫ কোটি টাকার বন্ড দিয়েছিলেন বিজেপিকে। তাঁর গ্রেপ্তারির পর আরও ৫৫ কোটির বন্ড দেন গেরুয়া শিবিরকে। এতেই স্পষ্ট আবগারি দুর্নীতির টাকা কোথায় গিয়েছে!'
  • Link to this news (এই সময়)