CSTC Bus : ব্যাগে বাড়তি ২২৫ টাকায় বিড়ম্বনা, ১৮ বছর পরে হাইকোর্টে বদনামমুক্ত বাস কন্ডাক্টর
এই সময় | ১৪ এপ্রিল ২০২৪
দিনের প্রথম যাত্রীকে বাসভাড়ার বিনিময়ে খুচরো ফেরাতে গিয়ে কন্ডাক্টরকে খেসারত দিতে হলো ১৮ বছর ধরে। ভোরের বাসে নিজের কাছে না থাকায় চালকের থেকে খুচরো করেছিলেন সিএসটিসি'র কন্ডাক্টর উত্তমকুমার ঠাকুর। যাত্রীকে তাঁর প্রাপ্য মিটিয়ে খুচরোর বাকি ২২৫ টাকা তিনি রেখে দেন তাঁর ব্যাগেই। বরাহনগর-কাশীপুর ডিপো থেকে বেশ কিছু দূর যাওয়ার পর সিএসটিসি'র অফিসাররা চেকিংয়ের জন্যে বাসে ওঠেন। তাঁরা কন্ডাক্টরের ব্যাগে অতিরিক্ত ২২৫ টাকা পান। সেখানেই সর্বনাশ।চালকের থেকে টাকা খুচরো করার কথা বিশ্বাস না করে উত্তমকে শো-কজ করে সিএসটিসি, বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়। ২০০৫ সালের ওই ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তে সেই বাস ড্রাইভারের থেকে কন্ডাক্টারের কাছে বাড়তি টাকা আসার কারণ না জেনেই একতরফা ভাবে উত্তমকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। তাঁর বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়, সমস্ত বৈধ ভাতাও বন্ধ হয়। সিএসটিসি'র চেয়ারপার্সনের কাছে এর বিরুদ্ধে আবেদন করেন উত্তম ঠাকুর। কিন্তু চেয়ারপার্সন বা তাঁর দপ্তর ওই কন্ডাক্টরের আবেদনের শুনানি না করে বিষয়টি দীর্ঘদিন ফেলে রাখেন বলে অভিযোগ। ২০০৬ সালে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন উত্তম। নির্দেশ পুনর্বিবেচনায় হাইকোর্টের নির্দেশের পরেও সিএসটিসি'র অফিসাররা আগের সিদ্ধান্তই বহাল রাখেন। ফের হাইকোর্টে মামলা করেন বাস-কন্ডাক্টর।
গত সপ্তাহে বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে শুনানিতে তাঁর আইনজীবী আশিসকুমার চৌধুরী বলেন, উত্তমবাবুকে উপযুক্ত নথিপত্র না দিয়েই এবং তাঁর ও চালকের বক্তব্য না শুনেই একতরফা ভাবে সিএসটিসি কর্তৃপক্ষ তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন। সার্ভিস রুলের ধারা না মেনেই তাঁর বেতন কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তাঁকে প্রাপ্যের থেকে ১৫ হাজার টাকা কম বেতন দেওয়া হচ্ছে। হাইকোর্ট পরিবহণ দপ্তরের থেকে বার বার তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ-অনুসন্ধান সংক্রান্ত ফাইল তলব করলেও তা দেওয়া হয়নি। পরিবহণ দপ্তরের আইনজীবী নয়নচাঁদ বিহানি আদালতে জানান, উত্তমবাবু কর্তৃপক্ষের কাছে জানিয়েছিলেন, বাড়তি টাকা ব্যাগে রাখায় ভুল হয়ে থাকতে পারে। যদিও মূল ফাইল কী ভাবে হারিয়ে গেল, সে বিষয়ে তিনিও আদালতে স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি।
হাইকোর্ট তার পরেই উত্তম ঠাকুরের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বেআইনি বলে খারিজ করে দিয়েছে। পাশাপাশি, ২০০৫ থেকে এত বছর ধরে বেতনের কেটে নেওয়া বকেয়া টাকা অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তিনি আর যে-সব সুযোগ-সুবিধা থেকে এতদিন বঞ্চিত হয়েছেন, তিন মাসের মধ্যে সে-সবও মেটাতে হবে সিএসটিসিকে।