• লেক কালীবাড়িতে বাসন্তী পূজা
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৪ এপ্রিল ২০২৪
  • নিতাই চন্দ্র বসু l সেবাইত
    বাসন্তী পূজা সপরিবারা সবাহনা দশভুজা দেবী দুর্গার বসন্তকালীন দুর্গোৎসব৷ চৈত্র মাসের শুক্লা সপ্তমী থেকে দশমী দেবী পূজিতা হন৷ চৈত্রমাস সূর্য্যের উত্তরায়ন কাল হওয়ায় এই সময়ে দেবী নিদ্রিতা থাকেন না, ফলে বোধনের প্রয়োজন হয় না৷
    মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত ?শ্রীশ্রীচণ্ডী? গ্রন্থ অনুযায়ী, চন্দ্রবংশে জাত রাজা সুরথ কালবশে তিনি শত্রুদের ষড়যন্ত্রে সিংহাসনচু্যত হয়ে রাজ্য থেকে বিতাড়িত হন৷ মনের দুঃখে এক গভীর বনে প্রবেশ করে চিন্তিত রাজা সুরথ সমাধি নামের এক বৈশ্যের সঙ্গে মিলিত হন৷ সেই বৈশ্যও নিজের ছেলে এবং আত্মীয়দের চক্রান্তে বাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন৷ দুজনে মেধস মুনির আশ্রমে আশ্রয় গ্রহণ করেন৷ আশ্রমে থেকেও মুকুটহীন রাজা সুরথ মনে মনে চিন্তা করতে লাগলেন, কীভাবে হারানো রাজ্য আবার ফিরে পাওয়া যায়৷ সমাধিও সব সময়েই ছেলে এবং পরিবারপরিজনদের কথা ভেবে কষ্ট পেতেন৷
    এরপর রাজা সুরথ এবং সমাধি উভয়েই শান্তি লাভের আশায় মেধস মুনির কাছে এসে বিনীতভাবে জিজ্ঞাসা করেন, ‘আমি ও সমাধি উভয়েই ধনলোভী নিষ্ঠুর স্বজনগণ ও ভৃত্যগণ কর্তৃক বিতাড়িত হয়েও আমাদের মন তাদের প্রতি স্নেহাসক্ত হচ্ছে কেন? এর কারণ কী? আমাদের শান্তিলাভের পথ কী?’
    তখন মেধস মুনি তাঁদের কাছে জগতে দেবী মহামায়ার অতুল প্রভাব সম্পর্কে উপদেশ দেন এবং দেবী আদ্যাশক্তি দুর্গার পূজা করে তাঁকে প্রসন্ন করার নির্দেশ দেন৷ মেধস মুনির উপদেশে রাজা সুরথ ও সমাধি বনে নদীতীরে শ্রীশ্রীমহামায়া দুর্গাদেবীর মৃন্ময়ী প্রতিমা গড়ে তিন বছর উপবাস থেকে পূজা সাঙ্গ করলে দেবী দুর্গা সন্ত্তষ্ট হয়ে তাঁদের বরপ্রদান করেন৷ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে, রাজা সুরথ ও বৈশ্য সমাধি নদী তীরবর্তী মেধসাশ্রমে বসন্তকালেই শ্রীশ্রী দুর্গাপূজা সমাপন করে দেবী প্রতিমা নদীগর্ভে বিসর্জন দিয়েছিলেন৷ যা পরে বাসন্তী পুজা নামে বিখ্যাত হয়৷
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)