ভারতীয় নাগরিক সর্বজিৎ সিংয়ের হত্যাকারী আমির সরফরাজে খুন পাকিস্তানে। কোট লাখপত জেলে বন্দি সর্বজিৎ সিংকে ধারালো ধাতব পাত, লোহার রড ও ব্লেড দিয়ে আক্রমণের পর সর্বজিৎ খুন করা হয় ২০১৩ সালে। জানা যায়, পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা ISI-এর নির্দেশে এই হামলার পিছনে হাত ছিল লাহোরের ডন হিসেবে পরিচিত আমির সরফরাজ। লাহোরে রবিবার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের গুলিতে নিহত হয়েছে আমির।২০১৯ সালে ডিসেম্বর মাসে পাকিস্তানের এক আদালত সর্বজিৎ সিং হত্য়া মামলার দুই সন্দেহভাজন আমির সরফরাজ ওরফে তাম্বা ও মুদাসসরকে বেকসুর খালসের নির্দেশ দেয়। সব সাক্ষীর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার পর রায় ঘোষণা করে লাহোর দায়রা আদালত। আদালতের তরফে জানানো হয়, 'দুই আসামির বিরুদ্ধে আদালতে একজনও সাক্ষ্য দেননি। তাই প্রমাণের অভাবে তাদের বেকসুর খালাস দেওয়া হল।' উল্লেখ্য়, ২০১৩ সালে পাকিস্তানের লাহোরের কোট লাখপত জেলে মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত দুই পাকিস্তানি বন্দি আমির ও মুদাসসর হত্যা করে ৪৯ বছরের সর্বজিৎ সিংকে। পাকিস্তানের দণ্ডবিধির ৩২৪/ ৩৪ ধারা অনুযায়ী সর্বজিৎকে পরিকল্পনা করে গোষ্ঠীবদ্ধ হয়ে খুনের মামলাও রুজু করা হয়। সেই মামলাতেই মূল অভিযুক্ত ছিল আমির সরফরাজ এবং মুদাসির মুনির। এক সদস্যের তদন্ত কমিটিও গড়া হয়। তবে সেই কমিটির রিপোর্ট কখনও প্রকাশ করা হয়নি।
১৯৯১ সালে ভারতীয় নাগরিক সর্বজিৎ সিংহকে প্রাণদণ্ডের নির্দেশ দেয় পাক আদালত। পাক সরকারের অভিযোগ ছিল, ১৯৯০ সালে পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে ধারাবাহিক বোমা বিস্ফোরণে জড়িত ছিলেন তিনি। সন্ত্রাসবাদী তথা ভারত সরকারের গুপ্তচরের তকমা দিয়ে জেলবন্দি করা হয়েছিল সর্বজিৎকে। তবে ভারত সরকার সেই সময় সর্বজিতের মুক্তির জন্য লড়াই করেছিল। একাধিকবার সর্বজিতের প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন তাঁর আইনজীবীরা। যদিও ২০০৮-এ সর্বজিতের প্রাণদণ্ড পাক সরকার অনির্দিষ্ট কালের জন্য মুলতুবি রাখে। এরপর ২০১৩-তে লাহোরের কোট লাখপত জেলে সর্বজিতের উপর প্রাণঘাতী হামলা চালায় অন্য দুই বন্দী। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সর্বজিতের মৃত্যু হয়। ২০১৬ সালে সিনেমাও হয় সর্বজিৎ-কে নিয়ে। ছবিতে সর্বজিতের চরিত্রে অভিনয় করেন রণদীপ হুডা। দলবীর কৌর অর্থাৎ সর্বজিতের দিদির ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল ঐশ্বর্য রাই বচ্চনকে। ২০২২ সালে এক পথ দুর্ঘটনায় প্রয়াত হলেন সর্বজিৎ সিংয়ের স্ত্রী সুখপ্রীত কাউর। জীবনের অধিকাংশ সময়টাই স্বামীর অপেক্ষায় কাটিয়েছিলেন সর্বজিতের স্ত্রী সুখপ্রীত।