ভোটে নজর নারী সুরক্ষায়, মার্শাল আর্ট শেখাতে সাংসদ তহবিলের একাংশ ব্যয়ের ঘোষণা সিপিএমের
প্রতিদিন | ১৫ এপ্রিল ২০২৪
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও রমেন দাস: মহিলা মহলের ভোট টানতে এবার নারী সুরক্ষায় বাড়তি নজর সিপিএমের। তার জন্য বিশেষ কর্মসূচি নিল বঙ্গের লাল ব্রিগেড। রবিবার আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের দলীয় সদর দপ্তরে সেই কর্মসূচির কথা প্রকাশ করল মহিলা বাহিনী। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে (2024 Lok Sabha Election) সিপিএমের মহিলা প্রার্থী দীপ্সিতা ধর, সায়রা হালিম, সোনামণি মুর্মু টুডু, জাহানারা খান, শ্যামলী প্রধানরা ছিলেন সেই অনুষ্ঠানে। ছিলেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু, DYFI রাজ্য সভানেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ও। তাঁদের সমবেত সিদ্ধান্ত, নারীদের ক্ষমতায়ন ও সুরক্ষার বিষয়টিতে বাড়তি নজর দিয়ে সাংসদ তহবিলের একটা বড় অংশের অর্থ খরচ করা হবে। তাতে গার্হস্থ্য হিংসা ও বহির্জগতের অত্যাচারের মোকাবিলায় ক্যারাটে, মার্শাল আর্ট-সহ মহিলাদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন মীনাক্ষী, দীপ্সিতারা।
রবিবার নতুন করে ১৫ দফা কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেছে সিপিএমের মহিলা ব্রিগেড। তার মধ্যে রয়েছে নারী সুরক্ষায় ব্যয়বৃদ্ধির কথা। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের (Minakshi Mukherjee) ঘোষণা, ?আত্মরক্ষা, আত্মমর্যাদা বজায় রেখে বাঁচতে হবে, বাঁচাতে হবে। সেকারণেই আমাদের তরফে ১৫ দফা কর্মসূচি গ্রহণ করা হল। মহিলাদের আত্মমর্যাদা কেন্দ্র আমরা গড়ে তুলব। সাংসদরা সাংসদ তহবিলের জন্য বরাদ্দ টাকার এক তৃতীয়াংশ আমরা মহিলাদের আত্মরক্ষার জন্য ব্যবহার করব।? মীনাক্ষীর আরও বক্তব্য, ?দুটো কথা স্পষ্ট ? মাথা উঁচু রাখতে হবে, পায়ের তলার মাটি শক্ত রাখতে হবে। সেই স্বার্থে মেহনতি সাধারণ মানুষকে সামনে রেখে, তাঁদের নিয়ে লড়াই। গোটা বাংলায় এমন কোনও ব্লক খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে সন্দেশখালির মত ঘটনা ঘটে না। এ রাজ্যের ক্ষেত্রে রেকর্ডে আছে ৪০৬ জন মেয়ে খুন হয়েছে পণের জন্য। অ্যাসিড বিক্রি বন্ধ হচ্ছে না। ১১০০টি ধর্ষণের ঘটনা। জেলের ভিতরে ১৯৬ জন মহিলা গর্ভবতী হয়ে যায়। কোথায় সুরক্ষা? নারীর ক্ষমতায়নে আমাদের কমিউনিস্ট দের ভূমিকা ভোলার নয়।?
শ্রীরামপুরের সিপিএম (CPM) প্রার্থী দীপ্সিতা ধর, কলকাতা দক্ষিণের প্রার্থী সায়রা হালিমদের বক্তব্য, ?যখন আমাদের মহিলাদের মার্শাল আর্ট বা এধরনের কাজ শেখানোর কথা বলা হয় তখন মহিলাদের উপর অত্যাচারের দায় তাঁদের উপরই দেওয়া হয়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিচ্ছেন, কিন্তু এতে আর্থিক ক্ষমতায়ন হলেও সামাজিক ক্ষমতায়ন বা রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন হয় না। মানুষ যদি আমাদের সমর্থন করে সংসদে পৌঁছয়, তাহলে এই কাজগুলি আমরা করব। নির্ভয়া ফান্ডের মাধ্যমে মহিলাদের সুরক্ষার খসড়া আমরা দিচ্ছি। এই মহিলা আত্মমর্যাদা কেন্দ্র বিধানসভা ভিত্তিক করা হবে। মহিলাদের আইনি সহায়তা করার ব্যবস্থা থাকবে। গার্হস্থ্য হিংসার বিরুদ্ধে হেল্পলাইন নম্বর থাকলেও সেটা সঠিকভাবে মনিটর করা হয় না। সেক্ষেত্রে একটা হেল্পলাইন নম্বর থাকবে আমাদের মাধ্যমে।?
সিপিএমের মহিলা শাখা হিসেবে মহিলা সমিতি দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় এলাকায় সক্রিয়। এমনকী ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার পর বুথভিত্তিক কর্মসূচি পালন করে থাকে মহিলা সমিতি। এবার তাঁরাই গড়ে তুলবেন মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি। প্রত্যেক সাংসদ নিজেদের তহবিলের এক তৃতীয়াংশ এই খাতে ব্যয় করবেন। ভোটের মুখে সিপিএমের মহিলা বাহিনীর এহেন ঘোষণায় মহিলা সমর্থন বাড়বে কিনা, তা অবশ্য এখনই বলা যাচ্ছে না।