• ‘দোস্তজি’র সফিকুল, পলাশদের এবার পড়াশোনার ভার নিল বেসরকারি স্কুল
    বর্তমান | ২৫ নভেম্বর ২০২২
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: একটা সিনেমা জীবন বদলে দিল। স্বপ্ন দেখতে শেখাল ভালো মানুষ হওয়ার। গ্রাম থেকে শহর ঘুরে কিশোর কিশোরীরা বুঝেছে, শিক্ষা ছাড়া কিছুই সম্ভব নয়। প্রথম ছবিতে অভিনয়ের সুবাদে আশিক শেখ, আরিফ শেখ ও হাসনাহেনা এখন বেশ পরিচিত। বাহবা কুড়োচ্ছে সকলের। কিন্তু ওদের বাস্তব জীবনের লড়াইয়ের সঙ্গী হতে পারে ক’জন? আর এখানেই ব্যতিক্রমী ভূমিকা নিল একটি বেসরকারি স্কুল। সম্পূর্ণ স্কলারশিপের সুযোগ দিয়ে তিন কিশোর-কিশোরীকে ভালো মানুষ তৈরি করার অঙ্গীকার করেছে তারা। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বারো ক্লাস পর্যন্ত পড়াবে রঘুনাথগঞ্জের তালাইয়ের এই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভালো স্কুলে পড়ার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা মুর্শিদাবাদের ডোমকলের প্রত্যন্ত ভগীরথপুর গ্রামের আশিকরা যেন হাতে চাঁদ পেল।  

    প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের ‘দোস্তজী’ দেশব্যাপী সিনেমা হলে রিলিজ করার পর কিশোর কিশোরীরা খ্যাতি ও সুনাম অর্জন করেছে। ছবিতে সীমান্ত ঘেঁষা একটি গ্রামের দুই বালক পলাশ (আশিক শেখ) আর সফিকুল (আরিফ শেখ) পাশাপাশি বাড়িতে থাকে। একটা বেড়ার ব্যবধান দুটি বাড়ি। এক স্কুলে পড়ে ওরা। হাসনাহেনা, আশিক ও আরিফকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার তালাইয়ের ওই স্কুলে হাজির ছিলেন তিনি। ঝা চকচকে স্কুল দেখে বেশ অবাকই আরিফ, আশিকরা। সেই সঙ্গে ভিড়মি খেয়েছেন ওদের পরিবারের লোকেরা। তাঁরা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি, এই স্কুলে কোনওদিন পা রাখতে পারবে তাঁদের ছেলেমেয়েরা। 

    আশিক ও আরিফ দু’জনেই ভগীরথপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া। নবম শ্রেণি থেকে নতুন স্কুলে পড়াশোনা শুরু করবে তাঁরা। হাসনাহেনা ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। সে ভর্তি হল সপ্তম শ্রেণিতে। আশিকের পছন্দের বিষয় অঙ্ক। আরিফ বাংলা পড়তে ভালোবাসে। হাসনাহেনার আবার বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার ইচ্ছে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি সুযোগ পেলে অভিনয়ও করতে চায় তিন শিশুশিল্পী। নতুন স্কুলে এসে বেশ খুশি তিনজনেই। 

    শিক্ষার গুরুত্ব কী, তা ভালোভাবেই জানেন তরুণ পরিচালক। আশিক, আরিফ, হাসনাহেনাদের জন্য আরও পরিকল্পনা রয়েছে বলেই জানান প্রসূন। তিনি বলেন, ‘আপাতত তাদের যথাযথ শিক্ষা পাওয়াটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাতেই উজ্জ্বল ভবিষ্যতের ভিত তৈরি হবে।’

    স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘প্রান্তিক এলাকার তিন শিশুর পাশে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য হল ওদেরকে দেখে গ্রামের শিশুরা যাতে ভালো পড়াশোনার জন্য ঝোঁক বাড়ায়। বারো ক্লাস পর্যন্ত সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আমাদের স্কুলে পড়বে ওরা। আমরাই ফুল স্কলারশিপের ব্যবস্থা করছি।’
  • Link to this news (বর্তমান)