• National Green Tribunal : সরকারি দপ্তর পরস্পরের দিকে আঙুল তুললে কাজ কোন পথে?
    এই সময় | ১৫ এপ্রিল ২০২৪
  • এই সময়: সমস্যা যে আছে, সেটা পরিষ্কার। কিন্তু সমাধান করবে কে? এ নিয়ে রাজ্য সরকারেরই এক দপ্তর আঙুল তুলছে অন্য এক দপ্তরের দিকে। কিন্তু এতে তো আখেরে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না। তা হলে কাজটা করবে কে? এ বার এ প্রশ্নই তুলল জাতীয় পরিবেশ আদালত (এনজিটি)।বাগজোলা এবং কেষ্টপুর খালের দূষণ সংক্রান্ত মামলার অন্তর্বর্তী নির্দেশে এই মন্তব্য করেছে আদালত। এই অবস্থায় রাজ্য পরিবেশ দপ্তরের প্রধান সচিবকে পুরো বিষয়টি দেখভাল করার নির্দেশ দিয়েছে এনজিটি। চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা দিয়ে তাঁকে জানাতে হবে, সমস্যার সমাধান করা যায় কী ভাবে। কারণ, এর আগে সেচ দপ্তরের হলফনামায় বলা হয়েছিল — খাল দূষণের জন্য দু’পাড়ের জবরদখলই দায়ী।

    এনজিটি-র পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চের বিচারপতি বি অমিত স্থালেকর এবং বিশেষজ্ঞ সদস্য অরুণকুমার বর্মার বেঞ্চের নির্দেশে বলা হয়েছে — সেচ এবং জলপথ পরবিহণ দপ্তরের হলফনামায় পরিষ্কার উল্লেখ করা হয়েছে যে, শুধুমাত্র কচুরিপানা সাফ করে লাভ হবে না। লোয়ার বাগজোলা খালের দূষণের অন্যতম কারণ দু’পাড়ের জবরদখল। আদালতের পর্যবেক্ষণ — দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে হলে কঠিন এবং তরল বর্জ্য যাতে খালে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এই হলফনামা থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার, রাজ্য সরকারের একটি দপ্তর স্বীকারই করে নিচ্ছে যে, ওই খাল এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনও পরিকাঠামো নেই।

    খালের পাড় জবরদখল মুক্ত করার জন্য পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তর, সেচ দপ্তর এবং সংশ্লিষ্ট পুরসভাগুলিকে পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। নির্দেশে বলা হয়েছে — সেচ দপ্তরকে খাল পরিষ্কার এবং জোয়ারের জল ঢুকিয়ে নাব্যতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এটা অনেক বড় কাজ। তাই এতে একাধিক দপ্তরের সহযোগিতা প্রয়োজন। আদালত মন্তব্য করেছে, ‘নির্দিষ্ট কাজ না করে রাজ্যের দপ্তরগুলি পরস্পরের দিকে আঙুল তুললে কাজের কাজ কিছু হবে না। সে জন্য পরিবেশ দপ্তর বিষয়টি দেখে, যা ব্যবস্থা নেওয়ার নিক।’

    বাগজোলা এবং কেষ্টপুর খালের দূষণ নিয়ে দু’পাড়ের দখলদারি প্রসঙ্গে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। ৩৮ কিলোমিটার বিস্তৃত বাগজোলা খাল কলকাতা পুর-এলাকা তো বটেই, বিধাননগর, দক্ষিণ ও উত্তর দমদম, পানিহাটি, কামারহাটি, বরাহনগর পুরসভা এবং হিডকো-র মতো এলাকার এলাকার নিকাশির অন্যতম আধার। একই সঙ্গে এলাকাগুলির বর্জ্যও বহন করে চলেছে সে।

    দূষণের অভিযোগ ওঠায় ২০১৭ সালে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করে এনজিটি। সুভাষ মামলার আদালত বান্ধব থাকায় তিনি এবং একটি কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ২০২২ সালের মে মাসে বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। তার রিপোর্ট মুখ্যসচিবকে জমাও দিতে বলে। সুভাষের অভিযোগ, এতে কাজের কাজ কিছু হয়নি। তাই, ফের এনজিটি-তে মামলা করেন তিনি। তার ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের কাছে থেকে হলফনামা তলব করেছিল আদালত।
  • Link to this news (এই সময়)