ভোটের আগেই বঙ্গে বাজেয়াপ্ত ২১৯ কোটি, তথ্য নির্বাচন কমিশনের
এই সময় | ১৫ এপ্রিল ২০২৪
সুগত বন্দ্যোপাধ্যায়
এমসিসি অর্থাৎ আদর্শ আচরণবিধি চালু হওয়ার পর এখনও পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রায় ২১৯ কোটি টাকার বেআইনি সামগ্রী। এর মধ্যে শুধু দক্ষিণ কলকাতা থেকেই উদ্ধার হয়েছে ২৪ কোটির সামগ্রী। এটা শুধু রাজ্যের ক্ষেত্রে সর্বকালীন রেকর্ডই নয়, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে নজিরবিহীন।প্রশ্ন উঠেছে, নির্বাচন পর্বে বাংলা কি ভোট কেনাবেচার মুক্তাঞ্চল হয়ে উঠছে? নির্বাচন কমিশনের রিপোর্ট বলছে, পশ্চিমবঙ্গে ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে এজেন্সিগুলি অভিযান চালিয়ে ৮ কোটি ৯ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা উদ্ধার করেছিল। বাজেয়াপ্ত হয় ৪ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকার মদ আর সাড়ে চার কোটি টাকার মাদক। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে একলাফে তা বেড়ে ৬৫ কোটি ৫৯ লক্ষ কালো টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছিল।
দক্ষিণী রাজ্যগুলিকে টেক্কা দিয়ে ভোটপর্বে বেআইনি কালো টাকা উদ্ধারে চতুর্থ স্থানে ছিল বাংলা। এই তল্লাশি অভিযানে টাকা থেকে মদ, মাদক, সোনা-সহ উদ্ধার হওয়া বেআইনি সামগ্রীর মূল্য ছিল ১১১ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা। সারা দেশে অষ্টম। এবার প্রথম ২৭ দিনেই বঙ্গে অভিযান চালিয়ে আটক হয়েছে নগদ ১৩ কোটি টাকা। আয়কর, ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের আধিকারিকদের কথায়, আটকের পরিমাণ আরও বাড়ত।
কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে নিয়োগ থেকে রেশন দুর্নীতি, অনলাইন লটারি-সহ একধিক মামলায় ইডি, সিবিআই এবং আয়কর দপ্তরের ধারাবাহিক অভিযানে কালো টাকার কারবারিরা কিছুটা সতর্ক। এ বার ভোট ঘোষণার পর পরই আয়কর দপ্তর একটি মামলায় দক্ষিণ কলকাতার এক ছাতু ব্যবসায়ীর অফিস থেকে ৭৫ লক্ষ টাকা নগদ উদ্ধার করে।
এই টাকার উৎসের কথা সংস্থাটি জানাতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে। মেটিয়াবুরুজ-সহ শহরের বেশ কয়েকটি এলাকায় আইটি রেইড হয়েছে। ভোট কেনাবেচার খেলা বন্ধ রাখতে এবার নির্বাচন কমিশন নজরদারি আরও বাড়িয়েছে। চালু করেছে ‘ইলেকশন সিজ়ার ম্যানেজমেন্ট’ নামে অ্যাপ। এতে কেউ ব্যাঙ্ক থেকে ১ লক্ষ টাকার বেশি তুললেই কমিশন জেনে যাবে তাঁর বিস্তারিত তথ্য।
ভোটপর্বে বেআইনি টাকা,মদ, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে কমিশনকে সাহায্য করেছে দশটি কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারি সংস্থা। এরা হলো রাজ্য পুলিশ, আয়কর, রাজ্য আবগারি দপ্তর, সীমান্ত সুরক্ষা বল, আরপিএফ, ডিআরআই, শুল্ক দপ্তর, এনসিবি, বন দপ্তর, স্টেট জিএসটি।