২০২১ সালের হাইভোল্টেজ বিধানসভা ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় ফেরে তৃণমূল। দলের হ্যাটট্রিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্যারিশ্মার পাশাপাশি বিশেষ ভূমিকা নিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তৃণমূল ছেড়ে একের পর এক নেতার পদ্মে লাফ, মোদী-শাহর বাংলায় ডেইলি প্যাসেঞ্জারি ব্যর্থ হয়।২০২১ বাংলার বিধানসভা ভোটে অমিত শাহ দাবি করেছিলেন, ২০০ পেরিয়ে যাবে বিজেপির আসন। যদিও ফল বেরনোর পর দেখা যায় তা ৭৭। প্রথম থেকেই অবশ্য তৃণমূলের জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর। স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন, বিজেপির আসন সংখ্যা ১০০ পেরোলে উপদেষ্টার কাজ ছেড়ে দেবেন। তাঁর ভবিষ্যদ্বাণী মিলে গিয়েছিল অক্ষরে অক্ষরে।
একথা তর্কাতীত যে তৃণমূলের বড় জয়ে বিশেষ ভূমিকা ছিল প্রশান্ত কিশোরের তৎকালীন সংস্থা আইপ্যাকের। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে জয়ের পর আইপ্যাকের সঙ্গে চুক্তি ২০২৬ সাল পর্যন্ত বাড়িয়েছিল তৃণমূলের শীর্ষনেতৃত্ব। আইপ্যাকের কর্ণধার হিসেবে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে) বাংলায় তৃণমূলের জন্য কাজ করতে আসেন ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পরে। ওই ভোটে রাজ্যে বিজেপির উত্থান হয়। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভোট কৌশল তৈরি থেকে প্রার্থী বাছাই পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন পিকে। বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের বিপুল জয়ের পরেই পিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে আইপ্যাক ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন।
অনেকের মনেই প্রশ্ন আসে তৃণমূলের ভিত মজবুত করার পিছনে, পরামর্শ দানের পিছনে কত পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন প্রশান্ত কিশোর? সম্প্রতি 'আনফিল্ডার্ড বাই সমধীশ' ইউটিউব চ্য়ানেলে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত কিশোর এবিষয়ে মুখ খুলেছেন। তাঁর দাবি, 'কোনও লোভের বশে আমি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করিনি। কারও থেকে প্রফেশনাল ফি বাবদ একটা পয়সা নিইনি। সেই ভালো ব্যবহারের ফল আজ পাচ্ছি। তবে হ্যাঁ, প্রচারের খরচ দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলি। তবে এর অর্থ এই নয় আমি কোনও দোকান খুলে বসে রয়েছি, সেখানে যে কেউ আসবেন এবং প্রশান্ত কিশোরকে বলবেন ৫০ কোটি টাকা ফিজ দিয়ে আমায় কাজ করাবেন। ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্ক কখনই হয়নি কোনও নেতার সঙ্গে। আমার কাছে সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ। আমি মুখ্যমন্ত্রীর পাশে বসে রাজনীতির কথা বলতে চাই। অ্যাকাউন্টে টাকা চাই না।' উল্লেখ্য, বক্তব্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কারও নাম নেননি প্রশান্ত কিশোর।