বামেদের কাছে 'প্যারোডি রাজনীতি' নতুন নয়। প্রচারের কৌশল হিসেবে প্যারোডির ব্যবহার আগেও করেছেন লাল শিবিরের নেতারা। এবার লোকসভা নির্বাচনের মুখে 'জামাল কুদু'-র সুরে একযোগে BJP এবং তৃণমূলকে আক্রমণ করল বামেরা। একইসঙ্গে এই প্যারোডির মাধ্যমে 'রুটি রুজি'-র কথা তুলে ধরা হচ্ছে। এই 'প্যারোডি' তৈরি যাঁরা করছেন, তাঁদের কথায়, 'সাধারণ মানুষের হকের কথা বলার জন্যই তারা এই গানের সুরকে ব্যবহার করেছেন।' রবিবার রাতে এই গানটি অফিসিয়ালি প্রকাশিত করা হয়। সেখানে কোনও 'অভিযুক্ত' রাজনৈতিক দল বদল করলে তাঁর বিরুদ্ধে যাবতীয় তদন্ত স্থগিত হয়ে যায় বলে সুর চড়িয়েছে বামেরা।পাশাপাশি অবৈধ নির্মাণের ফলে মৃত্যু নিয়েও সুর চড়ানো হয়েছে। CPIM-এর গান লিখেছেন রাহুল পাল। তিনি বলেছেন, 'যে কোনও পরিস্থিতিতে গানের মাধ্যমে লড়াইয়ের কথা তুলে ধরি। এর অন্যতম অংশ হল প্যারোডি। মানুষের চেনা দাবি দাওয়াগুলো গানের সুরে তুলে ধরা হয়েছে। দেশ বা রাজ্যের শাসক দলের এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে কোনও ফর্মেই এর বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। আমরা গান বাঁধতে পারি। তাই গানের মাধ্যমেই আমাদের কথা বলব।'
এই প্যারোডিটি গেয়েছেন রিয়া দে। তাঁর কথায়, 'প্রতিবাদের অন্যতম হাতিয়ার গান। লাল ঝান্ডার লড়াইতেও গান ছিল। আগেও ছিল এখনও রয়েছে। এবারের নির্বাচনের যে যে বক্তব্য রয়েছে তা গানের মাধ্যমে তুলে ধরেছি।'
প্যারোডিতে গলা মিলিয়েছেন নীলাব্জ নিয়োগী। তিনি বলেন, 'শিল্পী হিসেবে গানের মধ্য দিয়ে হকের কথা বলেছি।' এই লোকসভা নির্বাচনে প্রযুক্তির উপর নির্ভরতা বাড়াচ্ছে বামেরা। লোকসভা নির্বাচনের আগে 'সমতা'-কে নামানো হয় নির্বাচনী ময়দানে। সিপিএম-এর সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সমতা নামক এ আই অ্যাংকর আত্মপ্রকাশ করায় রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছিল।
লোকসভা নির্বাচনে প্রতীক উর রহমান থেকে শুরু করে দীপ্সিতা ধর, সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক তরুণ মুখকে প্রার্থী করেছে বামেরা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় কার্যত ধুয়ে মুছে গিয়েছিল লাল শিবির। একটিও আসনে জয়ী হতে পারেনি তারা।
পঞ্চায়েতেও বামেদের ফলাফল আহামরি কিছু নয়। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ঘুরে দাঁড়াতে চায়ছে বামেরা। রাজনৈতিক মহলে তাঁদের এই জামাল কুদুর সুরে প্যারোডি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, এই প্যারোডির কোনও সুফল কি ভোট বাক্সে পড়বে?